সোমবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৫২ পূর্বাহ্ন

রাজধানীর ৪৫ ভাগ মানুষ করোনায় আক্রান্ত

তরফ নিউজ ডেস্ক : রাজধানী ঢাকার প্রায় অর্ধেক মানুষ করোনায় আক্রান্ত বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে। অ্যান্টিবডি পরীক্ষায় দেখা গেছে, রাজধানীর ৪৫ শতাংশ মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের ২৪ শতাংশের বয়স ৬০ বছরের বেশি। করোনাভাইরাসের জিন বিশ্লেষণ করে গবেষকেরা অনুমান করছেন, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি দেশে প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছিল। গতকাল রাজধানীর হোটেল লেক শোরে দেশে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি ও জিন রূপান্তর নিয়ে গবেষণার এই তথ্য প্রকাশ করা হয়। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা  ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) ও বেসরকারি আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) যৌথভাবে এই গবেষণা করেছে। এই গবেষণায় আর্থিক সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের দাতা সংস্থা ইউএসএ আইডি এবং বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন।

গবেষণায় দেখা গেছে, ঢাকা শহরের বস্তির প্রায় তিন চতুর্থাংশ মানুষ ইতিমধ্যে সংক্রমিত হয়েছেন।

করোনার কোনো লক্ষণ ছিল না এমন ৪৫ শতাংশ নগরবাসী করোনায় আক্রান্ত হয়েছে বলে রক্ত পরীক্ষায় ধরা পড়েছে। গবেষণার জন্য ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১২৯টি ওয়ার্ডের মধ্য থেকে দৈবচয়ন ভিত্তিতে ২৫টি ওয়ার্ড বেছে নেয়া হয়। প্রতি ওয়ার্ড থেকে একটি মহল্লা বাছাই করা হয়। প্রতি মহল্লা থেকে ১২০টি খানা জরিপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ ছাড়া ৮টি বস্তিকে এ জরিপে যুক্ত করা হয়। দেশে করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতি এবং এর জিন রূপান্তর নিয়ে করা এই গবেষণার ফলাফলে আরো বলা হয়, ঢাকার বস্তিগুলোতে আক্রান্ত হয়েছেন ৭৪ শতাংশ মানুষ। আক্রান্তদের ২৪ শতাংশের বয়স ৬০ বছরের বেশি এবং ১৮ শতাংশের বয়স ১৫ থেকে ১৯ বছর।

ঢাকা শহরের সাধারণ খানার নমুনা সংগ্রহ করা হয় মধ্য এপ্রিল থেকে মধ্য জুলাই পর্যন্ত। আর বস্তির মানুষের নমুনা সংগ্রহ করা হয় মধ্য জুলাই থেকে আগস্টের শেষ পর্যন্ত। গবেষকেরা বলছেন, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ, চিকিৎসা ও টিকা দেয়ার ব্যাপারে এসব তথ্য কাজে লাগবে।  এপ্রিল থেকে জুলাই দেশের ৩১টি জেলায় ১২ হাজার ৬৯৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে বলে জানানো হয়। প্রতি জেলায় একটি বস্তি এবং শহরের মানুষ যাদের করোনার রোগ উপসর্গ ছিল এবং যাদের উপসর্গ ছিল না তাদের অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করা হয়। ঢাকা শহরের ২৫টি ওয়ার্ডে সেরো সার্ভিলেন্স চালানো হয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে ৮ই মার্চ প্রথম শনাক্ত হলেও বাংলাদেশে মূলতঃ ফেব্রুয়ারি মাসেই করোনা সংক্রমণ ঘটেছিল।

গবেষণার তথ্য এমন সময় প্রকাশ করা হলো যখন দেশে সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে আলোচনা চলছে। আসন্ন শীত মৌসুমে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকির কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অন্যদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি তাদের আছে।

অনুষ্ঠানে জুমের মাধ্যমে অংশগ্রহণ করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, আমরা দ্রুত পদক্ষেপ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি যার সুফল দেশের মানুষ পেয়েছে। তিনি আরো বলেন, অন্যান্য অনেক দেশের তুলনায় করোনা নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ভালো করেছে, ভালো আছে। তিনি জানান, এ পর্যন্ত ১ থেকে ১০৯টি ল্যাব হয়েছে, সেন্ট্রাল অক্সিজেন, হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলাসহ অন্যান্য সব কিছুর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে গবেষণা ফলাফল উপস্থাপন করেন আইইডিডিআর ও আইসিডিডিআরবি’র গবেষক ও বিজ্ঞানীরা। এতে সভাপতিত্ব করেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন)  অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com