শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০২:১০ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
ইউএনও তাহমিলুর রহমানকে বাহুবল মডেল প্রেস ক্লাব-এর বিদায় সংবর্ধনা বাতিল হতে পারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শনিবারের ছুটি মাছ ধরতে গিয়ে জেলের পায়ুপথ দিয়ে পেটের ভিতর কুঁচিয়া, তারপর… বিদ্যুৎস্পৃষ্টে একই পরিবারের ৫ জনের মৃত্যু সিলেটে টেস্টে ৩৮২ রানে হারলো বাংলাদেশ পেটে অসহ্য যন্ত্রণা, অস্ত্রোপচার করতেই বেরিয়ে এলো ১২ ইঞ্চির জ্যান্ত ইল মাছ! বাহুবল সদর কেন্দ্র স্থানান্তরের প্রস্তাব; জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া বাহুবলে সর্বজনিন পেনশন স্কীম অবহিতকরণ সভায় অনুষ্ঠিত পেঁয়াজ রপ্তানিতে অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা ভারতের গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে চীন-রাশিয়ার ভেটো

স্বাধীনতার ৪৮ বছর পরও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাননি ছাবু মিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক : মহান স্বাধীনতার ৪৮ বছর পরও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাননি মোঃ ছাবু মিয়া। দেশ স্বাধীনের পর দেশে ফিরেই নতুন নিপীড়নের শিকার হন এই মুক্তিযোদ্ধা। হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়ে লাল সবুজের পতাকা অর্জন করে দেশে ফিরে স্বাধীনভাবে স্বাধীনতার স্বাধ নিতে পারেননি তিনি। বিভিন্ন অভিযোগে তাকে নিক্ষেপ করা হয় অন্ধকার প্রকোষ্ট কারাগারে।

১৯৯২ সনে জেলা থেকে মুক্তি লাভ করে জীবিকার তাগিদে ছাবু মিয়া চলে যান মধ্যপ্রাচ্যের কুয়েতে। ১৯৯৭ সালে প্রবাস জীবন কাটিয়ে ছুটিতে এসে দাম্পত্য জীবন গড়েন বাহুবল উপজেলার মিরপুর ইউনিয়নের পশ্চিম জয়পুর গ্রামের হতভাগা এই মুক্তিযোদ্ধা। কিছুদিন দেশে অবস্থান করার পর পুনরায় পাড়ি দেন কুয়েতে। সেখান থেকে ২০০৪ সালে প্রবাস জীবন কাটিয়ে দেশে ফিরে আসেন তিনি। এরই ভিতর মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ, মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী কারাভোগ ও প্রবাস জীবন কাটিয়ে ভাগ্য বিড়ম্বনায় পড়েছেন ছাবু মিয়া।

সত্তোর্ধ্ব ছাবু মিয়া আক্ষেপের সাথে এ প্রতিবেদককে জানান, ১৯৭১ এর অগ্নিঝড়া দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণের মধ্য দিয়ে তিনি মুক্তিযুদ্ধের প্রতি উৎসাহিত হন। তখন তিনি অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। তিন ভাই ও এক বোনের মাঝে তিনি দ্বিতীয়। তার পিতার নাম মৃত জৈন উল্লা। মাতার নাম আমেনা খাতুন। তৎকালীন সময় দেশ যখন টালমাটাল ঠিক তখন তিনি পরিবারের মতামতকে উপেক্ষা করে ঝাপিয়ে পড়েন মহান মুক্তিযুদ্ধে। একটি আনসার ক্যাম্পে প্রাথমিকভাবে সামরিক ট্রেনিং গ্রহণের পর ৩নং সেক্টরের অধীনে ছুটে যান রনাঙ্গণে। মুক্তিযুদ্ধের কমান্ডেন্ট মানিক চৌধুরীর নেতৃত্বে হবিগঞ্জ ট্রেজারীতে হামলা চালিয়ে অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে সহযোদ্ধাদের সাথে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন এই মুক্তিযোদ্ধা।

তিনি জানান, হবিগঞ্জ থেকে সিলেট অভিমুখে যাত্রাপথে ঐতিহাসিক শেরপুর-সাদিপুর এলাকায় হানাদার বাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে লিপ্ত হন। তুমুল যুদ্ধ শেষে ছাবু মিয়াসহ তার কয়েক সহযোদ্ধা আশ্রয় নেন মৌলভীবাজারের আকবরপুর গ্রামে। এর পর থেকে ৩ ও ৪নং সেক্টরের অধীনে যুদ্ধকালীন সময়ে আরও কয়েকটি খন্ডযুদ্ধের মুখোমুখি হন। তৎকালীন সময়ে শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির বর্ণনা করতে গিয়ে ছাবু মিয়া হাফ ছেড়ে বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি এলাকায় চলে আসেন। কিন্তু স্বাধীন দেশে স্বাধীনভাবে তিনি বসবাস করতে পারেননি। বিভিন্ন অভিযোগে তিনি কারারুদ্ধ হন। দীর্ঘদিন কারাবাসের পর চলে যান মধ্যপ্রাচ্যে। প্রায় ১৫ বছর আগে তিনি দেশে ফিরেন। কিন্তু প্রবাসে থেকে অর্জিত টাকা ও পৈত্রিক সম্পত্তির কোন হিসাব দিতে পারেননি তার অপর দুই ভাই আকিল মিয়া ও পাকু মিয়া। এ নিয়ে দেন-দরবার শুরু হয় ভাইদের সাথে। পৈত্রিক সম্পত্তি দূরে থাক তার অর্জিত টাকারও কোন হিসাব দিতে পারেননি তার ভাইয়েরা। এক পর্যায়ে গ্রামের মুরুব্বিয়ানসহ সালিশান ব্যক্তিবর্গ পর্যন্ত গড়ায় তাদের এই বিষয়টি।

সামাজিক দুর্বৃত্তায়নের কুফলের কারণে আজও কোন সহায় সম্পত্তির মালিক হতে পারেননি ছাবু মিয়া। স্ত্রী ছিতারা খাতুন ও দুই ছেলে মেয়েকে নিয়ে অন্যের বাড়িতে বসবাস করছেন তিনি। শুধু তাই নয়, পড়ন্ত বয়সে ছাবু মিয়া স্ত্রী সন্তানের আহার যোগাতে পাহারাদারের দায়িত্ব পালন করছেন মিরপুর এলাকার একটি ইটভাটায়। তিনি মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেয়ে সরকারী সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করেও এর কোন সুরাহা পাচ্ছেন না। এতে হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়ছেন ছাবু মিয়া।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com