শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৪:০৪ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
ইউএনও তাহমিলুর রহমানকে বাহুবল মডেল প্রেস ক্লাব-এর বিদায় সংবর্ধনা বাতিল হতে পারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শনিবারের ছুটি মাছ ধরতে গিয়ে জেলের পায়ুপথ দিয়ে পেটের ভিতর কুঁচিয়া, তারপর… বিদ্যুৎস্পৃষ্টে একই পরিবারের ৫ জনের মৃত্যু সিলেটে টেস্টে ৩৮২ রানে হারলো বাংলাদেশ পেটে অসহ্য যন্ত্রণা, অস্ত্রোপচার করতেই বেরিয়ে এলো ১২ ইঞ্চির জ্যান্ত ইল মাছ! বাহুবল সদর কেন্দ্র স্থানান্তরের প্রস্তাব; জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া বাহুবলে সর্বজনিন পেনশন স্কীম অবহিতকরণ সভায় অনুষ্ঠিত পেঁয়াজ রপ্তানিতে অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা ভারতের গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে চীন-রাশিয়ার ভেটো

হবিগঞ্জের ২১০ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনই পরিত্যক্ত, ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান

হবিগঞ্জ সংবাদদাতা : হবিগঞ্জের ৮টি উপজেলায় ২১০টি প্রাখমিক বিদ্যালয়ে জরাজীর্ন ভবনেই পাঠদান চলছে। ছাত্রছাত্রীরা ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে এসব ভবনে। আবার অনেক ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হলেও বিকল্প কোন ভবন না থাকায় কারনে বাধ্য হয়ে পরিত্যক্ত ও ঝুকিপূর্ণ ভবনেই ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা। এর ফলে যে কোন সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলায় ১ হাজার ৫২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।

জেলার ২১০টি স্কুলের ভবন ফাটল, ঝুকিপূর্ণ ও পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এরমধ্যে হবিগঞ্জ সদর উপজেলায় ১টি স্কুল, আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় ১১টি, বাহুবল উপজেলায় ২৪টি, নবীগঞ্জ উপজেলায় ২২টি, মাধবপুর উপজেলায় ৪০টি, লাখাই উপজেলায় ৯টি, চুনারুঘাট উপজেলায় ৪০টি এবং বানিয়াচং উপজেলায় ৬৩টি বিদ্যালয়ের ভবন ফাটল, ঝুকিপূর্ণ ও পরিত্যক্ত রয়েছে। এসব ভবনেই শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে হচ্ছে বিকল্প কোন ধরনের ভবন না থাকায়। অনেকটা বাধ্য হয়েই কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা দিচ্ছে।

সম্প্রতি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার এতবারপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরেজমিনে ঘুরে ভয়াবহ চিত্র দেখা গেছে। স্কুলের দুটি ভবন প্রায় ৫ বছর আগে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে কিন্তু বিকল্প কোন ধরনের ভবন না থাকায় বাধ্য হয়েই শিক্ষার্থীদের ক্লাস ও পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে ভবনে। ভবনের দেয়ালে একাধিক ফাটল, টিনসেটের উপরে ভেঙ্গে পড়েছে, আবার কোন কোন স্থানে সিলিং ভেঙ্গে ঝুলে রয়েছে। যে কোন সময় সিলিং কিংবা ভবন ভেঙ্গে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছে শিক্ষার্থীও শিক্ষক-অভিভাবকরা।

এই স্কুলের শিক্ষার্থী রুবেল মিয়া জানায়, বর্তমান সময়ে কালবৈশাখী কিংবা ঝড় তুফান আসলে আমরা বই নিয়ে দৌড়ে বাড়িতে চলে যাই। যে কারনে আমাদের লেখাপড়ায় বিঘ্ন ঘটছে। স্কুলের শিক্ষার্থী সাবিনা আক্তার জানায়, আমরা যখন দেখি ঝড় বৃষ্টি আসছে তখন আমাদের অনেক ভয় হয়, অনেক সময় দৌড়ে অফিস কক্ষে চলে আসি।

এই এলাকার অভিভাবক রহিমা আক্তার জানান, আমরা ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পাঠিয়ে সবময় ভয়ে থাকি কখন জানি কি হয়। তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের ভবনের একাধিক স্থানে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে যে কোন সময় ভেঙ্গে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

আরেক অভিভাবক শুক্লা রানী জানান, স্কুলের ভবন অনেক বছর যাবত পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে কিন্তু নতুন ভবন না থাকার কারনে ঝুকির মধ্যেই তাদের সন্তানদের লেখাপড়া করতে হচ্ছে।

এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আয়েশা খানম জানান, আমার স্কুলের ৩টি ভবন রয়েছে। স্কুলের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৩শ। এর মধ্যে দুটি ভবনই পরিত্যক্ত ও ঝুকিপূর্ণ। অত্যন্ত ঝুকি নিয়ে দুটি ভবনে শিক্ষার্থীদের ক্লাস করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, শুধু শিক্ষার্থী নয় শিক্ষকরাও ঝুকির মধ্যে রয়েছে। তাই ঝড় তুফান আসলে স্কুল শিক্ষার্থীদের একত্রিত করে একটি কক্ষে নিয়ে বসে থাকতে হয়। ঝড় তুফান শেষ হলে আবার পুণরায় ক্লাসে ফিরে যেতে হয়। তিনি বলেন ,আমরা অত্যন্ত ঝুকির মধ্যে রয়েছি।

এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুর রেজ্জাক জানান, পরিত্যক্ত ভবন, জরাজীর্ণ ভবন ও ফাটলকৃত ভবনগুলো নির্মান ও পূনঃনির্মানের জন্য মন্ত্রনালয়ে চিঠির মাধ্যমে লিখা হয়েছে। এছাড়া বৃষ্টি আসলে যাতে করে ক্লাসের কোন সমস্য না হয় সে জন্য স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারদের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। আশা করি মন্ত্রনালয় থেকে পর্যায়ক্রমে ভবনগুলো মেরামত করে দেয়া হবে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com