বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৩৯ পূর্বাহ্ন

অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় ধুকে ধুকে মৃত্যুর দিকে এগুচ্ছে অগ্নিদগ্ধ শিশু ঝরনা

নিজস্ব প্রতিনিধি : বাহুবলে অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় ধুকে ধুকে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে অগ্নিদগ্ধ শিশু ঝরণা আক্তার। ঈদের ছুটিতে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর পূনরায় হাসপাতালে ভর্তি হতে না পেরে শিশুটিকে বাড়িতেই কাতরাতে হচ্ছে। গত ১৬ ফেব্র“য়ারি শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে চুলায় আগুন পোহাতে গিয়ে উপজেলার সদর ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের দিনমজুর তাজুল ইসলামের কন্যা ঝরণা আক্তার (৮) অগ্নিদগ্ধ হয়। ওইদিনই তাকে ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণইউনিটে ভর্তি করা হয়।

সরজমিন অগ্নিদগ্ধ শিশুটির বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, একটি কুঁড়েঘরে শিশুটি শয্যাশায়ী অবস্থায় আছে। পাশে গিয়ে দেখা গেল, গলার নিচ থেকে নাভি পর্যন্ত পুরো পেট ও বুকে দগ্ধ দগ্ধে ঘাঁ। তা থেকে এখন পোঁজ-পানি ঝরছে। শারীরিক যন্ত্রণায় কিছুক্ষণ পরপরই শিশুটি কান্না-কাটি করছে। শিশুটির কষ্ট দেখে তার মা স্বপ্না আক্তার কাঁদতে কাঁদতে চোখের জল শুকিয়ে ফেলেছেন। তিনি বলেন, “চোখের সামনে মেয়েটা বিনা চিকিৎসায় কাতরাচ্ছে। দেখে সহ্য করতে পারছি না।”

অগ্নিদগ্ধ শিশু ঝরনা আক্তার স্থানীয় রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেণির ছাত্রী। ৫ ভাই-বোনের মাঝে সে ৩য়। তারা সকলেই স্কুল-মাদরাসার ছাত্র। তাদের পিতা দিনমজুর হিসেবে যা আয়-রোজগার করতেন- তা দিয়েই তাদের সংসার কোন মতে চলে যেত। ২ শতক জমির উপর তাদের একটি ছোট বসতঘর ছিল। শিশু ঝরণা আক্তার অগ্নিদগ্ধ হওয়ার পর চিকিৎসা খরচ চালাতে গিয়ে ওই ঘরটি জমিসহ ইতোমধ্যে বিক্রি করে দিয়েছেন। বসতঘর বিক্রির পর থেকে তাজুল ইসলাম তার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আছেন ভাইয়ের বাড়িতে।

কথা হয় দগ্ধ শিশু ঝরনা আক্তার-এর পিতা তাজুল ইসলামের সাথে। তিনি বলেন, “১৬ ফেব্র“য়ারি আমার মেয়েকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করি। সেখানে চিকিৎসা চলাকালে ঈদকে সামনে রেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমার মেয়েকে গত ৬ মে ছাড়পত্র দিয়ে ঈদের পর পূনরায় ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বিদায় করে দেয়। তিনি আরো বলেন, তখন ডাক্তাররা বলেছিল পূনরায় ভর্তির পর প্লাস্টিক সার্জারি সম্পন্ন করা হবে। হতভাগা পিতা তাজুল ইসলাম বলেন, প্লাস্টিক সার্জারির জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। টাকার ব্যবস্থা করতে না পারায় মেয়েটিকে পূনরায় হাসপাতালে ভর্তি করতে পারছি না, ঠিক মতো ঔষধপত্রও কিনে দিতে পারছি না। তিনি বলেন, দিনমজুর হিসেবে কাজ করে যা রোজগার হয়, তা দিয়ে পরিবার-পরিজনের মুখে আহার তোলে দেওয়াই কষ্টকর। এর উপর অগ্নিদগ্ধ মেয়েটির চিকিৎসা কী করে চালাই? কথাগুলো বলতে বলতেই তিনি অশ্র“সিক্ত হয়ে পড়েন। কিছুক্ষণ পর চোখ মুছতে মুছতে তিনি বলেন, “শুনেছি, বহু অসুস্থ-অসহায় লোকজনের দুর্দশার কথা মিডিয়ায় প্রচার হওয়ার পর দেশ-বিদেশের লোকজন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। আমার মেয়েটার জন্য আপনারা এমন কিছু করতে পারেন না?”

অগ্নিদগ্ধ শিশু ঝরনা আক্তারের পিতা-মাতার ধারণা, ঝরনা আক্তার-এর দুরবস্থায় কথা প্রচার হলে হৃদয়বান লোকজন সাহায্যের হাত বাড়াবেন, তাতে তার উন্নত চিকিৎসার দোয়ার খোলবে। তাকে সাহায্যের জন্য তার পিতা তাজুল ইসলাম-এর মোবাইল ও বিকাশ নম্বর ০১৭৭২ ৭৭২১০৫ (পার্সোনাল)-এ যোগাযোগ করা যেতে পারে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com