বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৫০ অপরাহ্ন

বাহুবলে কোম্পানির জন্য জায়গা দখল নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১০

দিদার এলাহী সাজু, নিজস্ব প্রতিবেদক: হবিগঞ্জের বাহুবলে মধ্যস্বত্তভোগী সিন্ডিকেট ও এলাকাবাসির মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারী শিশুসহ ১০ জন আহত হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স ও হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সোমবার (১৪ জুন) সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৩ টা পর্যন্ত থেমে থেমে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করলেও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চরম উত্তেজনা বিরাজ করছিল। স্থানীয়দের আশঙ্কা এ নিয়ে যে কোন সময় আবারো রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে।

জানা যায়, বাহুবল উপজেলার বিহারীপুর গ্রামের আব্দুল মান্নানের স্ত্রী চন্ডী আক্তার ওরফে সুফিয়া খাতুনের ১০ শতক ভূমি জবর দখলের পায়তারা করছিল স্থানীয় একটি মধ্যস্বত্ত¡ভোগী সিন্ডিকেট। তারা দরিদ্র সুফিয়ার একমাত্র সম্বল ওই ভূমিটিকে ‘ইউরোনীট স্পীন কম্পোজিট লিঃ’ নামে একটি কোম্পানির কাছে তুলে দিতে চায়। কিন্তু এতে রাজি হচ্ছিলেন না সুফিয়া। এনিয়ে সুফিয়া খাতুনের সাথে ওই মধ্যস্বত্ত¡ভূগী সিন্ডিকেটের বিরোধ চলছিল। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার সকালে দলবল নিয়ে ওই ভূমিতে কোম্পানির বাউন্ডারী ওয়াল (নিরাপত্তা প্রাচীর) নির্মাণের চেষ্টা করে সিন্ডিকেটের লোকজন। এতে সুফিয়া খাতুনসহ এলাকাবাসি বাধা দিলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। থেমে থেমে কয়েক ঘন্টা ব্যাপী এ সংঘর্ষে সুফিয়া খাতুন (৫৫), তার পুত্র রাকিব (১২) ও হৃদয় (১০)সহ অন্তত ১০ জন আহত হয়। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স ও হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এদিকে, সংঘর্ষের খবর পেয়ে বাহুবল-নবীগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আবুল খায়ের, বাহুবল মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, ওসি (তদন্ত) আলমগীর কবির ঘটনাস্থলে পৌছেন। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে নির্মাণ কাজ বন্ধ করা হলে পরিস্থিতি সাময়িক ভাবে শান্ত হয়। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এলাকায় টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছিল।

এ বিষয়ে ইউরোনীট স্পীন কম্পোজিট লিঃ এর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিচয়ধারী মোঃ আলমগীর নামে এক যুবক বলেন, ‘বিহারীপুর গ্রামের আবুশ হাশিমের কাছ থেকে কোম্পানির নামে জায়গাটি ক্রয় করা হয়। কিন্তু পরে আবুল হাশিমের ভাতিজি চন্ডী আক্তার ওরফে সুফিয়া খাতুন অগ্রআইনে সংশ্লিষ্ট আদালতে মামলা দায়ের করলে তার পক্ষে রায় হয়। পরবর্তীতে কোম্পানির পক্ষে উচ্চ আদালতে আপিল করে নির্মাণ কাজ চালানো হয়। এতে বাধা দিচ্ছে সুফিয়া আক্তারের লোকজন’।

আহত চন্ডী আক্তার ওরফে সুফিয়া খাতুন বলেন, ‘ভূমিটি আমার একমাত্র সম্বল। আদালতের রায়ে ভূমিটির বৈধ মালিক এখন আমি। কিন্তু কোম্পানির পক্ষ নিয়ে মধ্যস্বত্ত¡ভোগী সিন্ডিকেটের কিছু লোকজন আমার ভূমিটি জোরপূর্বক দখল করে কোম্পানির হাতে তুলে দিতে চায়। বিষয়টি আমি লিখিত ভাবে থানা পুলিশকে অবগত করেছি। তার পরও তারা আমার ভূমিতে বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণের চেষ্টা করে। এতে আমি বাধা দিলে তারা আমাকে ও আমার পুত্রদেরকে পিটিয়ে আহত করে। আমি প্রশাসনের কাছে ন্যায় বিচার চাই’।

বাহুবল মডেল থানার (ওসি) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, ‘সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছে নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করি। পরে উভয় পক্ষের সাথে কথা বলে এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে’।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com