শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:০৯ অপরাহ্ন
তরফনিউজ ক্রীড়া ডেস্ক : চট্টগ্রাম টেস্টে বোলারদের নৈপুণ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তিন দিনেই হারিয়েছে বাংলাদেশ। ৬৪ রানের জয়ে দুই ম্যাচ সিরিজে এগিয়ে গেছে সাকিব আল হাসানের দল। এর ফলে টাইগরারা দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে এগিয়ে গেল ১-০ তে। দ্বিতীয় ইনিংসে জয়ের জন্য ২০৪ রান প্রয়োজন ছিল ক্যারিবীয়দের। কিন্তু স্পিনারদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১৩৯ রানেই গুটিয়ে যায় সফরকারীরা। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৩ রান করেন। বাংলাদেশের হয়ে ৩৩ রানে ৬ উইকেট শিকার করেন তাইজুল। এছাড়া সাকিব ও মিরাজ পেয়েছেন ২টি করে উইকেট।
দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওপেনার কাইরন পাওয়লেকে আউট করে টেস্টে নিজের ২০০ উইকেট প্রাপ্তির মাইলফলক স্পর্শ করেন দেশসেরা অলরাউন্ডার। এরপর শাই হোপকে ৩ রানে আউট করেন তিনি। ব্রেথওয়েটকে ফেরান তাইজুল। মাত্র ৮ রান করেছেন তিনি। অন্যদিকে চেস রানের খাতাও খুলতে পারেননি। তাকেও নিজের শিকারে পরিণত করেন তাইজুল।
বলতে গেলে নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট পড়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ১১ রানেই ৪ উইকেট পড়ার পর ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে সফরকারীরা। পঞ্চম উইকেটে একটা ছোট জুটি গড়ে উঠলেও তা বেশি দূর যেতে পারেনি। ৪৪ রানে আগ্রাসী হয়ে ওঠা হেটমায়ারকে ফিরিয়ে দেন মিরাজ। এরপর দলীয় ৫১ রানে বিদায় নেন ডাউরিচ। তাইজুলের বলে এলবিডব্লিউ এর শিকার হন তিনি।
দলীয় ৬৯ রানে বিশুকে ফেরান তাইজুল। খানিক পর আবারও তার আঘাত। ৭৫ রানের মাথায় কেমার রোচকে এলবির ফাঁদে ফেলেন তিনি। এরপর টেইল এন্ডারদের কাছ থেকে অপ্রত্যাশিত এক প্রতিরোদ গড়ে ওঠে। ৬৩ রানের জুটি গড়ে তোলেন ওয়ারিক্যান ও অ্যামব্রিস। এই দুজনের পার্টনারশিপ এক পর্যায়ে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছিল। অবশেষে দলীয় ১৩৮ রানের মাথায় ৪১ রান করা ওয়ারিক্যানকে তুলে নেন মিরাজ। এরপর অ্যামব্রিসকে ফিরিয়ে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেন তাইজুল।
এর আগে খুব বড় হয়নি বাংলাদেশের লিড। মরণফাঁদ হয়ে ওঠা পিচে উইকেট পড়েছে নিয়মিত বিরতিতে। সেই অর্থে কোনো বড় জুটি দেখা যায়নি পুরো ইনিংসে। আগের দিনের ৫ উইকেটে ৫৫ রান নিয়ে খেলতে নামা বাংলাদেশ তৃতীয় দিনে অলআউট হয়েছে ১২৫ রানে। এর ফলে জয়ের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ২০৪ রান।
তৃতীয় দিনে উইকেট না হারিয়ে স্কোর বাড়ানোই ছিল বাংলাদেশের লক্ষ্য। কিন্তু দিনের শুরুতেই অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিমকে হারিয়ে হোঁচট খায় টাইগাররা। শ্যানন গ্যাব্রিয়েলের সুইং ডেলিভারিতে পরাস্ত হয়ে ১৯ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি। আগের দিনের ৫ উইকেটে ৫৫ রান নিয়ে খেলতে নামা বাংলাদেশ নিজেদের ৬ষ্ঠ উইকেট হারায় ৬৯ রানে।
মুশফিকের বিদায়ে ক্রিজে আসেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। মিরাজের সাথে বড় জুটি গড়াই ছিল লক্ষ্য। দেখে শুনে ভালোই খেলছিলেন দুজন। দলীয় ১০৬ রানের মিরাজ আউট হন দেবেন্দ্র বিশুর বলে। ১৮ রান করেন তিনি। এরপর নাইম হাসানের সাথে আরেকটি ছোট জুটি গড়েন মাহমুদুল্লাহ। ১২২ রানে বিশুর আরেকটি শিকারে পরিণত হন ৫ রান করা নাইম।
এরপর বাকি তিন উইকেট পড়তে সময় লাগেনি মোটেও। বিশুর ঘূর্ণিতে মাহমুদুল্লাহ আউট হন ৩১ রান করে। মোস্তাফিজ ও তাইজুলও পারেননি কিছু রান যোগ করতে। ফলে ১২৫ রানেই থেমে যায় টাইগারদের দ্বিতীয ইনিংস। জবাবে রানে অল আউট হয় ক্যারিবীয়রা। ফলে চট্টগ্রামে স্মরণীয় এক জয়ই পেল সাকিব আল হাসানের দল।