মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩১ পূর্বাহ্ন
স্পোর্টস ডেস্ক : মুশফিকুর রহিমের অসাধারণ ব্যাটিংয়ে ১৮৫ চ্যালেঞ্জিং স্কোর তাড়া করতে নেমে ৪ উইকেটে জয় পেল চিটাগাং ভাইকিংস। দলের জয়ে ৪১ বলে ৭৫ রান করেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। এছাড়া ২৭ বলে ৪৬ রান করেন শেহজাদ।
জয়ের জন্য শেষ দিকে ৪৮ বলে চিটাগাং ভাইকিংসের প্রয়োজন ছিল ৯২ রান। জিততে হলে প্রতি ওভারে ১১.৫০ গড়ে রান করতে হবে। এমন কঠিন সমীরণের ম্যাচটি বাড়তি ঠাণ্ডা মাথায় বের করে নেন মুশফিক।
১৩তম ওভারে থিসেরা পেরেরাকে এক ছয় এবং ব্যাক টু ব্যাক তিনটি চার মেরে ২১ রান আদায় করে নেন মুশফিক। ঠিক পরের ওভারে বোলিংয়ে এসে মাত্র ৪ রানে নজিবউল্লাহ জাদরানের উইকেট তুলে নেন মেহেদী হাসান।
১১৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বসা চিটাগাং ১৫তম ওভারে আফিদ্রির কাছ থেকে ৩ রানের বেশি আদায় করতে পারেনি।
জয়ের জন্য শেষ ৩০ বলে প্রয়োজন ৬৪ রান। ১৬, ১৭ এবং ১৮তম ওভারে ১১, ১৫ ও ১৪ রান করে আদায় করে নেন মুশফিক-মোসাদ্দেক।
শেষ ১২ বলে চিটাগাং ভাইকিংসের প্রয়োজন ২৪ রান। ১৯তম ওভারে দুই নো-বলসহ ১৭ রান দিলে দুর্দান্ত খেলতে থাকা মুশফিকুর রহিমের উইকেট তুলে নেন সাইফউদ্দিন।
শেষ ৬ বলে চিটাগাংয়ের প্রয়োজন ৭ রান। এমন অবস্থায় ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বাউন্ডারিতে তামিম ইকবালের ক্যাচে পরিণত হন মুশফিকুর রহিম। সাজঘরে ফেরার আগে সাত চার ও চার ছক্কায় ৭৫ রান করেন মুশফিক।
শেষ ওভারে লিয়াম দাওসনের পক্ষে ম্যাচের পরাজয় এড়ানো সম্ভব হয়নি। প্রথম তিন বলে ২ রান দিয়ে কুমিল্লাকে খেলায় রাখেন দাওসন। শেষ তিন বলে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৫ রান। ওভারের চতুর্থ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন ফ্রাঙ্কলিঙ্ক।
এদিন টার্গেট তাড়া করতে নেমে নেমে উড়ন্ত সূচনা করে চিটাগাং ভাইকিংস। ক্যামেরন ডেলপটকে সঙ্গে নিয়ে উদ্বোধনী জুটিতে দুর্দান্ত খেলেন মোহাম্মদ শেহজাদ।
ইনিংসের প্রথম ৫ ওভারে ৫৮ রান তুলে নেন তারা। নিজের প্রথম ওভারে ১০ রান খরচ করা সাইফদ্দিন, দ্বিতীয় ওভারে মাত্র ৩ রানে ডেলপটের উইকেট তুলে নিয়ে চিটাগাংয়ের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন।
এরপর তিন নম্বর পজিশনে ব্যাটিংয়ে নামা ইয়াসির আলীকে এলবিডব্লিউ করেন থিসেরা পেরেরা। ইনিংসের শুরু থেকে একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকানো আফগান ওপেনার মোহাম্মদ শেহজাদকে ক্যাচ তুলতে বাধ্য করেন শহীদ আফ্রিদি। পাকিস্তানের এই অলরাউন্ডারের বলে ক্যাচ তুলে দেয়ার আগে ২৭ বলে ৪৬ রান করেন শেহজাদ।
থিসেরা ঝড়ে কুমিল্লার সংগ্রহ ১৮৪
রোববার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং করে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। এদিন ব্যাট করতে নেমে ২১ রানে তামিম ইকবাল ও এনামুল হক বিজয়ের উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় কুমিল্লা।
তৃতীয় উইকেটে ৫৪ রানের জুটি গড়ে দলকে খেলায় ফেরান ইমরুল কায়েস ও ইভিন লুইস। এরপর ১১ রানের ব্যবধানে ৪ উইকেট হারায় কুমিল্লা। ব্যক্তিগত ২৪ রানে খালিদ হাসানের অসাধারণ ডেলিভারিতে স্টাম্প ভেঙে যায় ইমরুল কায়েসের। ইমরুলের বিদায়ের পর দুই রানের ব্যবধানে মাংস পেশিতে চোট পেয়ে সাজঘরে ফেরেন দুর্দান্ত খেলতে থাকা ইভিন লুইস।
খালিদ হাসানের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফেরেন লিয়াম দাওসন। দলের কঠিন পরিস্থিতে হাল ধরতে পারেননি শহীদ আফ্রিদি। ৪ বলে ২ রান করে হিট আউট হয়ে ফেরেন পাকিস্তানের সাবেক এই অধিনায়ক।
৮৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়া কুমিল্লাকে খেলায় ফেরানোর পাশাপাশি চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ায় অগ্রণী ভূমিকা রাখেন থিসেরা পেরেরা।
চলতি বিপিএলে খেলতে নেমেই ব্যাটিং তাণ্ডব চালান থিসেরা পেরেরা। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের এই শ্রীলংকান অলরাউন্ডার ২৬ বলে করেন ৭৪ রান।
ইনিংসের শুরু থেকে একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকানো পেরেরা, ১৯তম ওভারে রবি ফ্রাঙ্কলিঙ্ককে (২, ৬, ৬, ৪, ৬, ৬) তিনটি ছক্কা এবং একটি চার হাঁকিয়ে ৩০ রান আদায় করে নেন পেরেরা।
শ্রীলংকার হয়ে নিউজিল্যান্ড সফরে থাকায় চলতি বিপিএলের শুরুর দিকে পাওয়া যায়নি পেরেরাকে। জাতীয় দলের মিশন শেষে বিপিএলে খেলতে ঢাকায় এসেই ব্যাটিংয়ে ঝড় তোলেন পেরেরা। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে সাইফউদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে নিয়ে মাত্র ৪০ বলে ৯৮ রানের জুটি গড়েন।
১৯ বলে ২৬ রান করেন সাইফউদ্দিন। মাত্র ২৬ বলে দৃষ্টি নন্দন আটটি ছয় এবং তিনটি চারের সাহায্যে ৭৪ রান করে অপরাজিত থাকেন পেরেরা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স: ২০ ওভারে ১৮৪/৫ (পেরেরা ৭৪*, লুইস ৩৮, সাইফউদ্দিন ২৬; খালিদ আহমেদ ৩/৩৪)।
চিটাগাং ভাইকিংস: ১৯.৪ ওভারে ১৮৬/৬ (মুশফিকুর রহিম ৭৫, শেহজাদ ৪৬)।
ফল: চিটাগাং ভাইকিংস ৪ উইকেটে জয়ী।