রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৪১ অপরাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সুদানে সামরিক কাউন্সিলের প্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ বুরহান বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে প্রথম দফা আলোচনা করেছেন। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতার ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল তার কাছে ‘জনতার দাবি’ তুলে ধরেন শনিবার। তারা অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য একটি বেসামরিক প্রশাসন গড়ে তোলার দাবি জানিয়েছেন। এ খবর দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত টাইম ম্যাগাজিন।
প্রায় চার মাস ধরে বিক্ষোভ চালিয়ে জনতা প্রথমে ক্ষমতাচ্যুত করে ৩০ বছরের শাসক ওমর আল বশিরকে। এরপরে ক্ষমতায় আসেন সামরিক কাউন্সিলের প্রধান আওয়াদ ইবনে আউফ। একদিন পরেই তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট বশিরের ঘনিষ্ঠজন এমন অভিযোগে বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। তার স্থানে আসেন জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ বুরহান।
এই সরকার সামরিক শাসনের কথা বার বার প্রত্যাখ্যান করেছে।
তবু বিক্ষব্ধ জনতা আশ্বস্ত হতে পারছে না। কারণ, দেশটির সেনাবাহিনী ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশিরের প্রতি খুব বেশি অনুগত। তাই তারা বিক্ষোভ অব্যাহত রাখে। এ অবস্থায় আলোচনার জন্য তাদেরকে আমন্ত্রণ জানান বুরহান। তার কাছে ‘জনগণের দাবি’ তুলে ধরার জন্য আন্দোলনকারীরা ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল গঠন করে। সুদানে আরব সোশ্যালিস্ট বাথ পার্টির সাধারণ সম্পাদক আলী আল সানহোরি রাজধানী খার্তুমে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সময় দেশ শাসনের জন্য তারা একটি বেসামরিক সার্বভৌম কাউন্সিল, একটি মন্ত্রপরিষদ ও একটি জাতীয় আইন প্রণয়ন এসোসিয়েশন গড়ে তোলার দাবি করছেন। বিক্ষোভকারীরা বলছেন, বেসামরিক উপায়ে ক্ষমতা হস্তান্তরের একটি কাউন্সিল গঠন না হওয়া পর্যন্ত রাস্তায় থাকবেন তারা। কারণ, তাদের ভয় সেনাবাহিনী অনির্দিষ্টভাবে ক্ষমতায় থাকবে অথবা তাদের অনুগত কারো হাতে ক্ষমতা দিয়ে যাবে।
সেনাবাহিনীর গড়ে তোলা অন্তবর্তী কাউন্সিলের প্রধান হিসেবে শুক্রবার শপথ নিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ বুরহান। তাকে কিছুটা উদার হিসেবে দেখা হয়। তিনি ক্ষমতায় এসে সুদানের সব শ্রেণির মানুষকে আলোচনায় আসার আমন্ত্রণ জানান। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত ভাষণে তিনি বলেন, নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত আগামী দু’ বছর দেশ শাসন করবে মিলিটারি কাউন্সিল। তিনি গত বৃহস্পতিবার থেকে আরোপ করা কারফিউ তাৎক্ষণিক প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। যাদেরকে গত ডিসেম্বরে বিক্ষোভ চরম আকার ধারণ করার পর গ্রেপ্তার ও বিচার করা হয়েছিল তাদের সবাইকে অবিলম্বে মুক্তির নির্দেশ দেন।
ফেব্রুয়ারি থেকে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিলেন ওমর আল বশির। তিনি অননুমোদিত জনসমাবেশ নিষিদ্ধ করেছিলেন। অসন্তোষ দমনের জন্য তিনি পুলিশকে দিয়েছিলেন প্রচুর ক্ষমতা। ফলে শত শত মানুষের বিচার হয়েছে জরুরি আদালতে।
এখন ক্ষমতায় আসা বুরহান এর আগে সেনাবাহিনীর জেনারেল ইন্সপেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি দেশ শাসনে জনগণের ইচ্ছাকে মূল্যায়ন করার উদ্যোগ নিয়েছেন। রাজপথে বিক্ষোভকারীদের কথা শোনার জন্য তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছেন। তবে শনিবারই তার দেশে একজন সেনা সদস্য সহ কমপক্ষে ১৬ জন নিহত হয়েছে। সুদান ডক্টরস কমিটি বলেছে, বৃহস্পতিবার গুলি করে হত্যা করা হয়েছে ১৩ জনকে। শুক্রবার হত্যা করা হয়েছে একজন সেনা সদস্য সহ তিন জনকে।