শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৭:৪৮ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
জনগণ যাকে ভালবাসবে, দায়িত্ব দিতে চাইবে, তাকেই দেবে- জেলা প্রশাসক বাহুবলে বিয়ের আনন্দ-ফুর্তি চলাকালে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে যুবতীর মুত্যু বাহুবল উপজেলা নির্বাচন : ২০ প্রার্থীর মাঝে নির্বাচনী প্রতীক বরাদ্দ বাহুবল উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত বাহুবলে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২ বাহুবল হাসপাতালের নতুন ব্যবস্থাপনা কমিটি প্রথম সভা বাহুবলে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের বাছাইয়ে দুই প্রার্থীর মনোনয়নপত্র অবৈধ বাহুবল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ২০ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল শিশুদের বিবাদের জেরে আজমিরীগঞ্জে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৩৫ দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর

সরকার এবং রাষ্ট্রকে এক করে ফেলছে আ. লীগ: ফখরুল

তরফ নিউজ ডেস্ক: সরকার এবং রাষ্ট্রকে আওয়ামী লীগ এক করে ফেলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

দেশের প্রতিটি মানুষ আজ মুক্তি চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিটি মানুষকে আজ প্রতি মুহূর্তে বেঁচে থাকার সংগ্রাম করতে হচ্ছে। আমি বলেছিলাম, এই সরকার একুশের চেতনাকে ভূ-লুণ্ঠিত করেছে এবং মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্যকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এটা তথ্যমন্ত্রী সাহেবের খুব লেগেছে। তিনি বলেছেন, এটা নাকি আমরাই করেছি, তারা করেননি। জনগণ বিচার করবে এটা কারা করেছে, কারা করেনি।

ফখরুল আরও বলেন, এখানে কথা বলার সুযোগ নেই, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট তারা করেছে। সংবিধানে যেসব কথা তারা নতুন করে ঢুকিয়েছে—যে কোনো ব্যক্তি আকারে-ইঙ্গিতে যদি সরকারের সমালোচনা করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা এই সরকার পেয়েছে। অর্থাৎ তারা সরকার এবং রাষ্ট্রকে এক করে ফেলছে। যে কোনো গণতান্ত্রিক দেশে নাগরিকদের যে অধিকার সেখান থেকে তারা জনগণকে বঞ্চিত করছে।

ফসলের মাঠে কৃষকের আত্মহত্যার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবিতে আজ মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী কৃষক দালের প্রতিবাদ সভায় তিনি এ কথা বলেন।

ফখরুল বলেন, বর্তমানে এই ভোটারবিহীন সরকারের যে দুঃশাসন এবং ফ্যাসিবাদের যে আগ্রাসন তার বিরুদ্ধে শফীউদ্দিনের আত্মহনন প্রতীকী আত্মহনন। গতকাল প্রধানমন্ত্রী একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবসে বক্তৃতার করেছেন। সেই বক্তৃতায় তিনি বলেছেন, যা কিছু অর্জন, যা কিছু হয়েছে বাংলাদেশে এবং যত উন্নতি হয়েছে সব তার সরকারের আমলে হয়েছে। তাদের নেতৃত্বেই হয়েছে। তার প্রায় সব বক্তৃতার মধ্যে যেটা থাকে, সব কিছুর স্বপ্ন দেখেছিলেন তার পিতা। এমনকি ভাষা আন্দোলনও তারই স্বপ্নের কারণে।

তিনি বলেন, আমরা যারা বয়স্ক মানুষ। যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রামে আগে থেকে জড়িত, যারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ দেখেছি, জড়িত ছিলাম, পরবর্তীকালে আমরা যারা শেখ মুজিবুর সাহেবের শাসন আমল দেখেছি এবং এখন তার কন্যার শাসন আমল দেখছি, আমাদের সামনে এসব কথা বলা অর্থহীন। আমরা দেখেছি, আওয়ামী লীগ ১৯৭২ সালে ক্ষমতায় আসার পরে তাদের দুঃশাসনের কারণে এক ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ সংগঠিত হয়েছিল। যেখানে লাখো মানুষ না খেতে পেয়ে মারা গিয়েছিল। সেদিন পত্রিকায় ছবি বেরিয়ে ছিল বাসন্তী নামে এক নারী রংপুরে যিনি লজ্জা নিবারণের জন্য একটা শাড়ি পাননি। তিনি মাছ ধরা জাল দিয়ে লজ্জা নিবারণ করেছেন। যখন তারা দাবি করেন এই দেশের সব উন্নয়নের মূলে তারা, আমি তাদের শুধু একটা কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, অতীত দেখুন। আর বর্তমানে যে ঘটনাগুলো ঘটছে, তার দিকে তাকিয়ে দেখুন।

উনারা বলেন, তাদের সরকারের এত চমৎকার শাসন এবং পরিকল্পনার কারণে কৃষি উৎপাদনে শীর্ষে পৌঁছে গেছে। পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৬৭ লাখ টন খাদ্য আমদানি করতে হয়েছে। ৫৪ লাখ টন গম, ১৪ লাখ টন চাল। তাহলে প্রচার করছেন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে গেছেন সেটা মিথ্যা। এই খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন যদি কেউ করে থাকেন, সেটা হলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। ২০০৮ সালে নির্বাচনের আগে অনেক মুখরোচক কথা, জনগণকে আকৃষ্ট করার কথা বলেছিল। তারা বলেছিল, ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়াবে, বিনা পয়সায় সার দেবে, ঘরে ঘরে চাকরি দেবে। মানুষ ভেবেছিল, হয়তো তাই হবে। কিছু মানুষ নৌকায় ভোট দিয়েছিলেন। কিছু দিন পরেই তারা টের পেলেন, একেবারে প্রতারণা—বলেন ফখরুল।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার বলেছে করোনাকালে কৃষকদের জন্য প্রণোদনা দিয়েছে। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। প্রান্তিক মানুষের জন্য আড়াই হাজার টাকা করে অনুদান ঘোষণা করেছিল। তার ৯০ শতাংশ আওয়ামী লীগের দালালদের কাছে চলে গেছে। এই সরকার কৃষিযন্ত্র দিতে শুরু করেছিল, তারও ৯০ শতাংশ আওয়ামী লীগের ঘরে চলে গেছে। সাধারণ মানুষ, সাধারণ কৃষক কোনো রকম সুবিধা পায়নি। ব্যবসায়ী, পোশাক কারখানার মালিক পরিষ্কার করে বলছেন তারা কোনো প্রণোদনা পাইনি।

বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অস্থিত্ব বিপদগ্রস্ত হয়ে গেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, কিছু দিন আগে র‌্যাব এবং ৭ জন কর্মকর্তার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এসেছে। পুরো জাতি লজ্জা পেয়েছে। এই সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘন করে শত শত রাজনৈতিক নেতা-কর্মীকে গুম করে দিয়েছে, হত্যা করেছে। যে কারণে আন্তর্জাতিক সব মানবাধিকার সংস্থাগুলো অভিযোগ করেছে এটা আর গণতান্ত্রিক দেশ নেই। পুরোপুরিভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী দেশ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

শফীউদ্দিন চলে গেছে। আরও অনেকে চলে যাচ্ছে প্রতিদিন আমরা খবর পাই না। আমরা নিজেরা উপলব্ধি করছি, এই সরকার যদি বেশি দিন থাকে তাহলে আমাদের অস্তিত্ব শুধু নয়, রাষ্ট্রের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে যাবে। তারা অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে আমাদের সংবিধানকে কেটে-ছেঁটে ছিন্নভিন্ন করেছে। আমাদের আমলাতন্ত্র ধ্বংস করেছে। বিচার বিভাগকে দলীয়করণ করেছে। নির্বাচন ব্যবস্থাকে তছনছ করে দিয়েছে। এখন তারা নির্বাচন কমিশন গঠন করার জন্য সার্চ কমিটি করেছে, আইন করেছে জনগণকে বোকা বানানোর জন্য। সার্চ কমিটিতে যারা আছে তারা সব তাদের লোক। আজ তারা রাষ্ট্রপতির কাছে নাম পাঠাবে দেখা যাবে হুদার মতো লোক, বলেন তিনি।

সদ্য বিদায়ী নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদার বিচার দাবি করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া, নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য তার বিচার হতে হবে। তাকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com