শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:১৭ পূর্বাহ্ন
রায়হান উদ্দিন সুমন, বানিয়াচং (হবিগঞ্জ) : হবিগঞ্জ-বানিয়াচং আঞ্চলিক মহাসড়ক বন্ধ করে নৌকা বাইছের আয়োজন করে পার্শ্ববর্তী উমেদনগর টমটম মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ।
শুক্রবার বিকাল ৩টায় এ নৌকা বাইছ অনুষ্ঠিত হয়। এর ফলে ওই রাস্তা দিয়ে সবধরণের যানবাহন চলাচল রাত ৮টা পর্যন্ত বন্ধ ছিল। কার্যত পুরো রাস্তার যোগাযোগ ব্যবস্থা ই বন্ধ হয়ে পড়ে।
নৌকা বাইছের কারণে আতুকুড়া বাজার থেকে উমেদনগরের দেওয়ান মাহবুব রাজার মাজার পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার রাস্তা তীব্র যানজটের সৃষ্ঠি হয়। কোনো দিকে যেতে না পেরে উভয় দিকে থেকে আসা যানবাহন গুলো ঠায় দাঁড়িয়ে থেকে যানবাহনে থাকা যাত্রীগণ গরমের কারণে অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালিপনার কারণে এমনটা হয়েছে বলে জানান ভুক্তভোগীরা। তারপর নৌকা বাইছে এক জনপ্রতিনিধির উপস্থিতিকে সাধারণ মানুষ ভালো ভাবে নেয়নি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কালারডোবায় নৌকা বাইছ শুরু হওয়ার আগ থেকেই রাস্তার উভয়পাশে সব ধরণের যানবাহন দাঁড় করিয়ে যে যার ইচ্ছেমতো সমস্যার সৃষ্ঠি করেছেন। এমতাবস্থায় ওই রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী যানবাহন ও যাত্রীরা পড়েন চরম বিপাকে। বিশেষ করে যানবাহনে থাকা রোগীরা আরো বেশি অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। প্রশাসনের কোনো অনুমতি না নিয়ে আঞ্চলিক মহাসড়ক বন্ধ করে এইভাবে জনদুর্ভোগ সৃষ্ঠি করার কোনো মানে ই হয়না বলে ক্ষোভ জানান যাত্রীরা।
তারা আরো জানান, যেহেতু শুক্রবার ছিল ওই দিন বিভিন্ন উপজেলা এমনকি গ্রাম থেকে রোগীরা উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলা সদরে যান। বিকেলে চিকিৎসা শেষে বাড়িতে ফেরার সময় তারা উক্ত জায়গায় নৌকা বাইছ হওয়ার ফলে ঘন্টার পর ঘন্টা গাড়ির মধ্যে বসে থেকে আরো অসুস্থ্য হয়ে পড়েছেন। বিশেষ করে এসময় যানজটের মধ্যে একটি অ্যাম্বুলেন্সও আটকে ছিল। ডেলিভারী রোগীসহ সাধারণ রোগীদের অবস্থা ছিল আলো শোচনীয়। নৌকা বাইছ আয়োজকদের প্রতি বিরুপ মন্তব্যসহ ক্ষোভ ঝেঁড়েছেন যানজটে আটকা পড়া যাত্রীরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে বেশ ঝঁড় উঠেছে।
ফেইসবুক ইউজার মুন্না দেব নামে এক লিখেছেন-অ্যাম্বুলেন্সে এক রোগীকে নিয়ে ফেরত যাইতে হইছে। আতিকুর নাসের নামে এক লিখেছেন-জবাবদিহিতার অভাব হলে যা হওয়ার তাই হয়েছে। স্বপ্নের রাজকুমার নামে একজন লেখেন-নৌকা বাইছ করবে নদীতে যা এখানে কেন। মনির মিয়া নামে আরেকজন ইউজার লেখেন-নৌকা বাইছ করবেন বেশ ভালো, কিন্তু সাধারণ মানুষকে অতিষ্ঠ্য করে নয়। উজ্জ্বল খান নামে আরেক জন লেখেন-জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসন চোখ থাকতে ও অন্ধ।
বিষয়টি নিয়ে কথা বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী অফিসার মামুন খন্দকারের সাথে। তিনি বলেন-প্রশাসনের কোনো অনুমতি ছিলনা। আমরা এই বিষয়ে কোনো কিছু জানিনা। মহাসড়ক বন্ধ করে যে যার মতো কাজ করবে তা হতে দেয়া হবেনা।
বানিয়াচং থানার ওসি রাশেদ মোবারক এক প্রকার রাগান্বিত হয়েই বলেন-এসব প্রশ্ন আপনাদের জনপ্রতিনিধিদের কাছে গিয়ে করেন। পরে উনি নিজেই যানজট মুক্ত করতে কাজে লেগে যান।