শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১১:১১ অপরাহ্ন
তরফ নিউজ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে যাত্রীদের চাপ, যানবাহন চলাচলের গতি, সড়কের দৈর্ঘ্য, ডাস্ট ম্যানেজমেন্ট, স্যুয়ারেজ ব্যবস্থাপনা ও বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের কথা মাথায় রেখে পরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করার জন্য বৃহস্পতিবার স্থপতিদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন।
রাজধানীতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চারটি উন্নয়ন প্রকল্পের পরিকল্পনা প্রত্যক্ষ করার সময় শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘টেকসই উন্নয়নের জন্য আপনাদের জনগণের সম্ভাব্য চাপ, যানবাহনের গতি, প্রকল্প এলাকাগুলোর সড়কের দৈর্ঘ্য ও পরিবেশের কথা মাথায় রেখে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা উচিত।’
প্রধানমন্ত্রী যথাযথ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি, স্যুয়ারেজ ব্যবস্থাপনা, ভূগর্ভস্থ নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা, বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা ও এ লক্ষ্যে পানি সংরক্ষণের জলাধার খননে যথাযথ পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য স্থপতিদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী অ্যাপার্টমেন্টের বাসিন্দাদের জন্য টেকসই পরিবেশ নিশ্চিত করতে নতুন ভবনগুলোতে কিছুটা খোলা জায়গা, নেচারাল ভেন্টিলেশন, বারান্দা ও আধুনিক অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা রাখার জন্য তাদের প্রতি আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা নির্মাণাধীন বহুতল অ্যাপার্টমেন্ট ও ভবনগুলোতে যথাযথ বর্জ্য ও পানি ব্যবস্থাপনা নিশ্চত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
তিনি প্রস্তাবিত প্রকল্পগুলোর সব দিকের পরিবর্তে এক দিকে স্যুয়ারেজ লাইন নির্মাণের পরামর্শ দিয়েছেন।
তিনি ভবনগুলোর হোলসেল নির্মাণ বন্ধে আইন সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বিদ্যমান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষর্থীদের আসন সংখ্যা বৃদ্ধির পরিবর্তে আরো বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘সরকার প্রতিটি জেলায় একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ করছে।’
প্রধানমন্ত্রীর সামনে যে প্রকল্পগুলো উপস্থাপন করা হয়েছে সেগুলো হলোÑ সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য ঢাকার আজিমপুর সরকারি কলোনির মধ্যে বহুতল ফ্ল্যাট ভবন নির্মাণের সংশোধিত মাস্টার প্ল্যান এবং বাংলাদেশ সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সভার জন্য বড় পরিসর রেখে ২০তলা ভবন নির্মাণের একটি প্রকল্প।
অন্য দুটি প্রকল্প হচ্ছে- শেরেবাংলা নগরে বিশ্ববিখ্যাত প্রকৌশলী লুই আইকানের স্থাপত্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ৪৩ একর জমির উপর বহুতল ভবন নির্মাণ এবং রাজধানীর হাতিরঝিলে ২০তলা বহুমুখী ভবন নির্মাণ।
আজিমপুর বহুতল আবাসিক ফ্ল্যাট প্রকল্পের আওতায় ১ হাজার ৯২২ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৫টি ২০তলা ভবন নির্মাণ করা হবে।
গণপূর্ত বিভাগ ২০২১ সালের ডিসেম্বর নাগাদ ১৮০০, ১৫০০ এবং ১২৫০ বর্গফুট বিশিষ্ট ১ হাজার ১৪০ টি ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে।
এর পাশাপাশি এই প্রকল্পের আওতায় রাজধানীর শের-ই-বাংলা নগরে ৪৩ একর জায়গায় গণপূর্ত বিভাগ ১০তলা বিশিষ্ট ৫১ টি ভবনে ১০০০ এবং ১৮০০ বর্গফুটের ১ হাজার ৮৩৬ টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করবে। ৪ হাজার ৪৪৪ কোটি ৫১ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি ২০২১ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে।
শের-ই-বাংলা নগরে বহুতল ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্পে বিদেশি পরামর্শক হিসেবে স্থপতি লুই-আই কানের সহযোগি স্থপতি হেনরি উইলকোটের অন্তর্ভূক্তি অনুমোদন দিয়েছেন।
এছাড়া ৪২০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা ব্যয়ে সচিবালয়ে ২০তলা বিশিষ্ট ভবন নির্মিত হচ্ছে। ভবনে দু’টি বেসমেন্ট রয়েছে এবং সেখানে মন্ত্রিসভা বৈঠকের বিকল্প ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
এছাড়া হাতিরঝিলে ৫শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে কার পার্কিংসহ সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন একটি বহুমুখী ভবন নির্মাণের প্রকল্প প্রত্যক্ষণের পর প্রধাপনমন্ত্রী পদ্মা অথবা যমুনা নদীর পাড়ে ২০তলা বিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণের পরামর্শ দেন।
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী এস এম রেজাউল করিম, প্রধানমন্ত্রী মূখ্য সচিব নজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
স্থপতি বিভাগের সদ্য বিদায়ী স্থপতি কাজী গোলাম নাসির, রাজউকের প্রধান প্রকৌশলী এ এস এম রায়হানুল ফেরদৌস স্থপতি বিভাগের সহকারি স্থপতি সৈয়দা শাকিলা বিনতে আলম পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনার মাধ্যমে প্রকল্পের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।