বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৬ অপরাহ্ন
ক্রীড়া ডেস্ক : বিসিবির উপর অসন্তোষের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়রা যেকোনো সময় ধর্মঘটে যাওয়ার মতো কঠোর সিদ্ধান্তে চলে যেতে পারেন। এমতাবস্থায়, টাইগারদের ভারত সফরের বিষয়টি সম্পূর্ণ অনিশ্চয়তার মুখে পড়তে পারে।
সোমবার (২১ অক্টোবর) যেকোনো সময় জাতীয় দলের শীর্ষ কয়েকজন ক্রিকেটার এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরবেন বলে জানিয়েছে ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকইনফো।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, বিসিবিতে জমায়েত হবেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার থেকে শুরু করে এনসিএলে খেলা এবং আগামী বিপিএলে খেলবেন- এমন ক্রিকেটাররা সংবাদ সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন।
মিরপুর স্টেডিয়ামে এসে ক্রিকেটাররা বিসিবির কাছে নিজেদের দাবির কথা জানাবে। এরপর তারা গণমাধ্যমের মুখোমুখি হবে মিডিয়ার। সেখানেই নিজেদের আন্দোলনের কারণগুলো তুলে ধরবেন।
জানা গেছে, সাকিব-তামিম-মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ থেকে শুরু করে জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা যোগ দিচ্ছেন এই প্রতিবাদে। মাশরাফী বিন মোর্ত্তজাও যোগ দিতে পারেন।
গত মাসে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড বিপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক মডেলটি থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নেয়। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন আগেই জানিয়েছিলেন, বিপিএলে এবার খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক আগের চেয়ে কমতে পারে। যার ফলে মাঝারি মানের পেশাদার খেলোয়াড়দের উপার্জন সর্বকালের নিচে চলে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।
চলমান জাতীয় ক্রিকেট লীগেও এবার পারিশ্রমিক বাড়ানো হয়নি। ফলে খেলোয়াড়দের দুর্দশা আরও বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ঢাকা প্রিমিয়ার লীগে খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে, যা আগে খেলোয়াড়দের এক ক্লাব থেকে আরেক ক্লাবে যাওয়ার ক্ষেত্রে উন্মুক্ত বাজার হিসেবে বিবেচিত হতো।
সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে দেশের ক্রিকেটাররা বেশ উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। বাংলাদেশ দলের টেস্ট ও টি-টুয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসান সম্প্রতি এক ইন্টারভিউতে বলেছেন, ক্রিকেটারদের দমন করা হচ্ছে। তাদের সঙ্গে আরও ভালো আচরণ করা উচিৎ।
সাকিবের এমন কথা বেশিরভাগ মহলে বিশেষ করে ক্রিকেটারদের মধ্যে প্রশংসিত হয়েছিল। যদিও তার এমন মন্তব্যে বিসিবি এখনো সমালোচনা করে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি।
এদিকে, সোমবার একটি জাতীয় দৈনিকে সাকিব আল হাসানের একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছে। সাকিব সেই সাক্ষাৎকারে বলেছেন, আমরা শুধুমাত্র চলতি সিরিজকে কেন্দ্র করেই তার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করি। তবে এটি যদি বিশ্বকাপের মতো আসর হয়, তাহলেই আমরা সম্ভবত ছয় থেকে আট মাস আগে পরিকল্পনা করি। তাছাড়া, আমরা কেবল মাত্র চলমান সিরিজের দিকেই দৃষ্টিপাত করি। এটাই আমাদের ক্রিকেট সংস্কৃতি।
সাকিব বলেন, মানুষ আশা করে যে আমরা সব ম্যাচেই জিতবো। আমরা একটি গাছ রোপণের পরের দিনই সেখান থেকে ফল আশা করি। এটাই দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে শক্ত বাধা। ক্রিকেটের অভিভাবকদের (বিসিবি কর্তাদের) এখানে বড় ভূমিকা নিতে হবে।
তিনি বলেন, আপনি কীভাবে খেলোয়াড়দের সমর্থন করবেন সে সম্পর্কে আপনাকে দৃঢ় থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে একটি দীর্ঘমেয়াদী নীতি নির্ধারক প্রয়োজন। এরপরে অনেক ভালো জিনিস ঘটবে। অনেক কিছু পরিবর্তন করা দরকার এবং এটি একটি কৌশলগত বিষয়।
সাকিব আরও বলেন, ক্রিকেটারদের প্রয়োজনীয়তার কিছু বিষয় রয়েছে। পরিকল্পনার সময় কেউ এই বিষয়গুলো বিবেচনায় আনলে ভালো হবে। উদাহরণস্বরূপ, ইংল্যান্ডে (ইসিবি ক্রিকেট কমিটির সভাপতি অ্যান্ড্রু স্ট্রাউস) রয়েছেন, যিনি সবকিছু পরিকল্পনা করছেন। গত চার বছরের পরিকল্পনা সবই তার। আমাদের এমন একজনের দরকার যিনি কেবল ক্রিকেট নিয়েই পরিকল্পনা করতে পারেন, এমন একজন দরকার যার দূরদৃষ্টি রয়েছে।