রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২৮ পূর্বাহ্ন
তরফ নিউজ ডেস্ক : প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’র কয়েক ঘণ্টাব্যাপী তাণ্ডবে বিধ্বস্ত সাতক্ষীরার উপকূল। তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে সাতক্ষীরার উপকূলীয় শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলা। জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে জেলা থেকে উপজেলার সড়ক পথ। বিচ্ছিন্ন রয়েছে বিদ্যুৎ। বন্ধ আছে ইন্টারনেট পরিষেবা।
রোববার (১০ নভেম্বর) ভোররাত থেকে সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকায় শুরু হয় ঝড়ো হাওয়া। ঝড়ে উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কাঁচা ঘরবাড়ি মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। রাস্তাঘাটে গাছপালা উপড়ে পড়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। মাছের ঘের ভেসে গেছে। এখনো উপকূলে চলছে বুলবুলের তাণ্ডব। সাতক্ষীরা শহরের বিভিন্ন যায়গায় গাছ-পালা ভেঙে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে ভোর রাত থেকে। এই রিপোর্ট লেখার সময়ও ঝড়ের তাণ্ডব থামেনি। কালিগঞ্জ উপজেলায়ও বহু ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। শহরতলির অনেক এলাকার মানুষ আগে থেকেই জলাবদ্ধতার মধ্যে ছিলেন। টানা বৃষ্টিতে তাদের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত প্রাণহানির কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি।
উপকূলীয় শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালীনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ভবতোষ মন্ডল বলেন, ঝড়ে সব কিছু লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। রাস্তাঘাটে গাছপালা পড়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। মানুষের মাটির ঘরবাড়ি একটিও নেই। মানুষের মাছের ঘের ভেসে গেছে। প্রচণ্ড বৃষ্টির সঙ্গে ঝড়ো হাওয়া ভোররাত থেকে শুরু হয়ে এখনো চলছে। ঝড় শেষ হলে বিস্তারিত জানা যাবে।
তিনি আরো বলেন, ইউনিয়নে দুই হাজারেরও বেশি কাঁচা মাটির ঘরবাড়ি ছিল। একটিও নেই। ধারণা করছি, মাটির নিচে অনেকে চাপা পড়ে গেছে। মাটির নিচে চাপা পড়া মানুষদের খোঁজা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কারও মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।
শ্যামনগরের গাবুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিএম মাসুদুল আলম জানান, ঝড়ে তার ইউনিয়নের পাঁচ হাজার কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। সব মাছের ঘের ভেসে গেছে। বৃষ্টির পানিতে প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। গাছপালা ভেঙে রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। তবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম কামরুজ্জামান বলেন, ভোররাত থেকে শুরু হওয়া ঝড় ও বৃষ্টি এখনো চলছে। গাছপালা পড়ে রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। গাবুরা ও বুড়িগোয়ালীনি ইউনিয়নের কাচামাটির ঘরগুলো সব নষ্ট হয়ে গেছে। এই দুই ইউনিয়ন বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে দুই ইউনিয়নের সবকিছুই।
তিনি বলেন, ঝড় বৃষ্টি থামার পর বিস্তারিত জানা যাবে। এরপরই জরুরি মুহূর্তে যা যা পদক্ষেপ নেয়া যায় তা নেয়া হবে।