রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫৬ পূর্বাহ্ন
তরফ নিউজ ডেস্ক : আজ (১০ নভেম্বর) হিজরী ১২ রবিউল আউয়াল। বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর জন্ম ও ওফাত দিবস। ৫৭০ খ্রীষ্টাব্দের এ দিনে মক্কার কুরাইশ বংশে বাবা আব্দুল্লাহ ও মা আমেনার ঘরে তিনি জন্ম নেন। ইসলামের দ্বীন প্রচার শেষে ৬৩২ খ্রীষ্টাব্দে ১১ হিজরির একই দিনে ৬৩ বছর বয়সে তিনি ইন্তেকাল করেন।
এজন্য দিনটি বিশ্বের মুসলমানদের কাছে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। সর্বশেষ ও সর্বশেষ্ঠ নবীর জন্ম ও মৃত্যু একইদিনে হলেও মুসলিমরা দিনটিকে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) বা জন্মউৎসবের দিন হিসেবে পালন করে থাকে। ঈদ, মিলাদ আর নবী এই তিনটি শব্দ যোগে ঈদে মিলাদুন্নবী দিবসটির নামকরণ হয়েছে। ঈদ অর্থ-আনন্দোৎসব, মিলাদ অর্থ-জন্মদিন আর নবী অর্থ ঐশী বার্তাবাহক। ঈদে মিলাদুন্নবীর অর্থ নবীর জন্মদিনের আনন্দোৎসব।
মাত্র ৪০ বছর বয়সে নবুওয়াতি লাভের পর দীর্ঘ ২৩ বছর হজরত মুহাম্মদ (সা.) কঠোর পরিশ্রম ও শত বাধা বিপত্তি মোকাবিলা করে ইসলামের সুমহান আদর্শ প্রচার করে গেছেন। তার প্রতিটি কাজ, কথা আমাদের জন্য আদর্শ। তার দেখানো পথেই পৃথিবীতে আসতে পারে শান্তি ও মানবতার মুক্তি। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, আমি আপনাকে সমগ্র বিশ্বের জন্য রহমত হিসেবে প্রেরণ করেছি। (সূরা আল-আম্বিয়া : ১০৭)।
ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে রোববার (১০ নভেম্বর) সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়াও দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এক বাণীতে বলেন, ধর্মীয় ও পার্থিব জীবনে মহানবী (সা.)–এর শিক্ষা সমগ্র মানবজাতির জন্য অনুসরণীয়। দুনিয়ায় তাঁর আগমন ঘটেছিল ‘সিরাজাম মুনিরা’ তথা আলোকোজ্জ্বল প্রদীপরূপে। ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে দেশবাসীসহ মুসলিম উম্মাহর সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছাও মোবারকবাদ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে বলেছেন, দ্বন্দ্ব-সংঘাতময় বিশ্বে প্রিয় নবী (সা.)-এর অনুপম শিক্ষার অনুসরণের মাধ্যমেই বিশ্বের শান্তি, ন্যায় এবং কল্যাণ নিশ্চিত হতে পারে। মহানবী (সা.)–এর সুমহান আদর্শ অনুসরণের মধ্যেই প্রতিটি জনগোষ্ঠীর অফুরন্ত কল্যাণ, সফতা ও শান্তি নিহিত রয়েছে।
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপনে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে মাসব্যাপী ইসলামী বই মেলার পাশাপাশি পক্ষকালব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারের পাশাপাশি বেসরকারি টেলিভিশন ও রেডিও দিবসটির যথাযোগ্য গুরুত্ব তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করবে। পত্রিকাগুলোতে বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশ করা হবে। দেশের মসজিদ-মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে আলোচনা সভা,মিলাদ মাহফিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
কর্মসূচি :
ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে যথাযথ মর্যাদায় পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) পালনের জন্য সরকার, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে মহানবী (সা.) এর ওপর আলোচনা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল। দিনটি উপলক্ষে সরকারি ভবনসমূহ ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা আলোকসজ্জিত করা হবে। জাতীয় পতাকা ও ‘কালিমা তাইয়েবা’ লিখিত ব্যানার রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ ট্রাফিক আইল্যান্ড ও লাইটপোস্টে প্রদর্শিত হবে। দর্শনার্থীদের জন্য এই প্রদর্শনী খোলা থাকবে বলে ফাউন্ডেশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে। এছাড়া দেশের সব হাসপাতাল, কারাগার, সরকারি শিশু সদন, বৃদ্ধনিবাস ও মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে আজ উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে।