রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪১ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :

শাবিতে শিক্ষার্থী ভর্তিতে ‘ডোপ টেস্ট’

নিজস্ব প্রতিবেদক : শিক্ষার্থী মাদকাসক্ত কি না, তা পরীক্ষা করেই এবার প্রথম বর্ষে ভর্তি করাচ্ছে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে নবীন শিক্ষার্থীদের ‘ডোপ টেস্ট’ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়কে মাদকমুক্ত রাখতেই তাদের এই উদ্যোগ। মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের অভিযানের মধ্যে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই উদ্যোগ নিল।

উপাচার্য ফরিদ বলেন, “আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে মাদকমুক্ত রাখতে চাই। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলেও এখন মাদকের বিষাক্ত কবলে তরুণরা আসক্ত। আমরা ডোপ টেস্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা মাদকাসক্ত কি না, তা নির্ণয় করতে চাই।” তবে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী মাদকাসক্ত বলে পরীক্ষায় ধরা পড়লেও তাকে ভর্তি করা হচ্ছে বলে জানান উপাচার্য।

তিনি বলেন, “আমরা তাকে ভর্তি করে নজরদারিতে রাখব। তার পরিবারকে অবহিত করব। বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচে তার রিহ্যাবের, সংশোধনের ব্যবস্থা করব।”

১২ নভেম্বর থেকে বিজ্ঞান শাখার ‘বি-১’ ইউনিটের ভর্তির মাধ্যমে এবারের ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়। ১৭ নভেম্বর সোমবার মানবিক শাখার ‘এ’ ইউনিটের ভর্তির মাধ্যমে ভর্তি কার্যক্রম শেষ হওয়ার কথা। তবে আসন খালি থাকা সাপেক্ষে পরবর্তী মেধাক্রম অনুসারে শিক্ষার্থীদের সাক্ষাতকারের জন্য ডাকা হবে।

ভর্তি গ্রহণের সময়ই শিক্ষার্থীদের ‘ডোপ টেস্ট’ করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের মুত্র সংগ্রহ করে চারটি পরীক্ষা করে মাদকাসক্ত কি না, তা নির্ণয় করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমেস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের শিক্ষকরা।

এ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শেখ মির্জা নুরুন্নবী বলেন, “ইয়াবার জন্য এএমপি, মারিজুয়ানার জন্য টিএইচসি, পাথেড্রিনের জন্য ওপিআই এবং স্লিপিং পিলের জন্য বিজেডও টেস্ট করা হচ্ছে।”

‘ডোপ টেস্ট’ বাবদ ৩০০ টাকা ও স্বাস্থ্যবীমা বাবদ আরও ২০০ টাকা ফি ধরে গত বছরের তুলনায় এ বছর ভর্তি ফি বাড়ানো হয়েছে ৫০০ টাকা। ফলে ভর্তি ফি ৭ হাজার ৫০০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৮ হাজার টাকা।

ভর্তি ফি বাড়িয়ে শিক্ষার্থীদের ডোপ টেস্ট ও স্বাস্থ্যবীমার আওতায় নিয়ে যাওয়ায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট ও জাতীয় ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। তারা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপিও দিয়েছেন।

ছাত্রফ্রন্টের বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি নাযিরুল আযম বলেন, “ডোপ টেস্ট ও স্বাস্থ্যবীমার নামে ফি বাড়িয়ে শিক্ষা ব্যবস্থাকে বাণিজ্যকরণের দিকেই নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ডোপ টেস্ট করলে বিশ্ববিদ্যালয় নিজের টাকায় করুক। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া অযৌক্তিক।”

বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে যারা মাদকে আসক্ত হয়, তাদের বিষয়ে প্রশাসনের পদক্ষেপহীনতার কথাও বলেন তিনি।

জাতীয় ছাত্রদলের বিশ্ববিদ্যালয় সহ-সভাপতি অমৃত রায় বলেন, “শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা না করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ফি বাড়িয়ে দিয়ে প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের সাথে বাণিজ্যচুক্তি করেছে। ছাত্র সংসদ না থাকায় শিক্ষার্থীদের পক্ষে কেউ কথা বলতে পারে না।”

এসব অভিযোগের বিষয়ে উপাচার্য ফরিদ বলেন, “আমরা নবীন শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে শুরু করলাম। ধীরে ধীরে আমরা সকল শিক্ষার্থীদের ডোপ টেস্টের আওতায় নিয়ে আসব। শনাক্ত হওয়া শিক্ষার্থীদের নজরদারিতে রাখব। তাদের চিকিৎসার, সংশোধনের ব্যবস্থা করব।”

এজন্য বর্তমান শিক্ষার্থীদেরও নতুন করে ফি দিতে হবে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমরা ভর্তির সময় একবারই ফি নিচ্ছি। পরবর্তীতে সকল খরচ বহন করবে বিশ্ববিদ্যালয়। আর কোনো ফি নেওয়া হবে না।”

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com