বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৬ অপরাহ্ন
তরফ নিউজ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিমান পরিবহণের ক্ষেত্রে নিরাপত্তার ওপর গুরুত্বারোপ করে ভিআইপি এবং ভিভিআইপিসহ সকল বিমানযাত্রীকে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা মেনে চলার কঠোর নির্দেশনা প্রদান করেছেন।
তিনি বলেন, ‘যদি কেউ এক্ষেত্রে বাধা দেন তাহলে ভবিষ্যতে তাঁর বিমান চড়াই বন্ধ হয়ে যাবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিরাপত্তার যে নিয়মাবলী রয়েছে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে, আমাদের সকল যাত্রীকে সেটা মেনে নিতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিভিআইপি লাউঞ্জে এর তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির ভাষনে একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এদিন বিমানবন্দরের যাত্রী পরিবহন এবং মালপত্র আনা নেওয়ার সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ২১ হাজার ৩শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে বহুল প্রতীক্ষিত হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ৩য় টার্মিনালের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন।
তিনি একই সঙ্গে বিমানের পঞ্চম ও ষষ্ঠ ড্রিমলাইনার ‘সোনার তরী’ এবং ‘অচিন পাখি’র উদ্বোধন করেন এবং বিশ্বের সকল স্থান থেকে বিমানের টিকেট ক্রয়ের সুবিধা সংবলিত একটি মোবাইল অ্যাপসও অনুষ্ঠানে উদ্বোধন করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখানে আমি স্পষ্ট বলতে চাই, এখানে আমাদের সংসদ সদস্য মন্ত্রি, বাহিনী প্রধানগণ বা অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও রয়েছেন-‘আপনারা যখন বিদেশে যান তখন যেভাবে নিরাপত্তাটা নিশ্চিত করা হয়, ঠিক সেই ভাবে আমাদের বিমানবন্দরে করতে হবে এবং সেটা সবাইকে মেনে নিতে হবে। সেখানে কেউ কোন বাধা দিতে পারবেন না।’
তিনি বলেন, ‘একটা কথা মনে রাখবেন- সারাদিন আমি দেশের কাজই করি। কোথায় টুকটাক কি হয় না হয় সে খবরটা নেওয়ার চেষ্টা করি। কাজেই কেউ সেখানে কোন রকম অনিয়ম বা ব্যত্যয় ঘটালে সাথে সাথেই আমার কাছে খবরটা চলে আসে।এটা সবাইকে মনে রাখতে হবে এবং সে অনুয়ায়ী নজরদারিটা বাড়াতে হবে।’
বেসামরিক বিমান পরিবহন এবং পর্যটন প্রতিমন্ত্রী এম মাহবুব আলী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
অনুষ্ঠানে বেসামরিক বিমান পরিবহন এবং পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান র আ ম উবায়দুল মোতকাদির চৌধুরী, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মহিবুল হক, বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো ও জাইকা’র বাংলাদেশ অফিসের চীফ রিপ্রেজেন্টেটিভ হিতোসি হিরোকা বক্তৃতা করেন। সিভি এভিয়েশনের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান স্বাগত ভাষণ দেন এবং বিমানের সিইও মুকাব্বির হোসেন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বিমানের নির্মানাধীন ৩য় টার্মিনাল এবং সিভিল এভিয়েশনের উন্নয়ন কর্মকান্ড নিয়ে একটি অডিও ভিজ্যুয়াল পরিবেশনা প্রদর্শিত হয়।
মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাগণ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, তিনবাহিনী প্রধান গণ, সরকারের উচ্চ পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত এবং বিদেশি কূটনিতিকবৃন্দ, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার সদস্যসহ আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী ভাষণে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতি এবং মাদকের বিরুদ্ধে তাঁর সরকারের জিরো টলারোন্স নীতির পুনরোল্লেখ করে বলেন, ‘আজকে আমরা সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছি। যেই দুর্নীতি করবে তাকে কিন্তু ছাড়া হবে না। সে যেই হোক না কেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দিন-রাত পরিশ্রম করবো দেশের উন্নয়নের জন্য, আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ মাথার ঘাম পায়ে ফেলে অর্থ উপার্জন করবে আর দেশের উন্নয়নের কাজ সঠিক ভাবে হবে না। সেখান থেকে কেউ অসাধু উপায়ে নিজের ভাগ্য গড়তে যাবে। সেটা কখনো সম্ভব হবে না। এটা আমরা কখনো বরদাশত করব না।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশকে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতি এবং মাদক মুক্ত করে গড়ে তুলতে চাই।’
তিনি সময়মত ৩য় টার্মিনালের কাজ শেষ করারও তাগিদ দেন।