শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫১ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :

করোনা সতর্কতা মানছেনা লাকসামের সাধারণ মানুষ

আরিফুর রহমান স্বপন, কুমিল্লা: প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রকোপ থেকে মানুষকে রক্ষায় সারা দেশের ন্যায় কুমিল্লার লাকসামেও বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণা ও সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া হলেও সাধারণ মানুষ তা মানছে না। ফলে করোনাভাইরাসের মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে এ এলাকার মানুষ। এ কারণে অনেকের মধ্যে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।

দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়াকে কেন্দ্র করে সকল মানুষকে জনসমাগম এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেয়া হলেও লাকসামে কোনো ভাবেই জনসমাগম থামানো যাচ্ছে না। প্রতিদিন হাট বাজারে ঘুরে বেড়াচ্ছে মানুষ। চায়ের দোকানগুলোতে অধিক সংখ্যক লোকজনকে আড্ডা দিতে দেখা যায়। এমনকি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও চিকিৎসকদের সুরক্ষায় ও নেই কোনো ব্যবস্থা। এ কারণে অনেক চিকিৎসক সর্দি, জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্টের রোগীদের চিকিৎসা না করে অন্য হাসপাতালে প্রেরণ করে দিচ্ছেন।

এদিকে করোনা ভাইরাস আশঙ্কাজনক হারে ছড়িয়ে পড়ায় ও করোনা প্রতিরোধে উপজেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ, পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিদের উদ্যোগে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ইতিমধ্যে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে মাইকিং, লিফলেট বিতরণ ও গুজব সম্পর্কে জনসাধারণকে বিরত থাকতে সতর্কতা, ঘর থেকে বাহির না হওয়া, সাবান, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, হ্যান্ডওয়াস দিয়ে হাত দোয়া, মুখোশ বিতরণ, স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পরামর্শ প্রদান, হোম কোয়ারেনটাইনে থাকা ব্যক্তিদের সার্বক্ষণিক ফলোআপসহ নানা সতর্কতা মূলক পদক্ষপ গ্রহণ করা হয়েছে। তারপরেও সাধারণ মানুষের মাঝে তেমন কোনো সচেতনা লক্ষ করা যাচ্ছে না।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আবদুল আলী বলেন, এখন পর্যন্ত লাকসামে করোনা ভাইরাসের কোনো রোগী শনাক্ত হয়নি। হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা বিদেশ ফেরত ব্যক্তিদের আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর রাখছি। তারপরেও কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে সে জন্য আমাদের হাসপাতালে তার জন্য শয্যাসহ সকল প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। মানুষ তো তেমন একটা সচেতন হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না। এখনো মানুষকে সচেতন করতে দিনরাত করতে কাজ করে যাচ্ছি।

লাকসাম পৌরসভার মেয়র অধ্যাপক আবুল খায়ের বলেন, করোনা সচেতনতার জন্য পৌরসভার সর্বত্র মাইকিং, সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে পৌর কমিটি ও ৯টি ওয়ার্ডে কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিদিন শহরের রাস্তা ঘাটে জীবাণৃুনাশক ঔষধ দিয়ে ভাইরাস মুক্তকরণে কাজ করছি। শহরের জনবহুল এলাকায় হাতদোয়ার বেসিন, সাবান, নিরিবিচ্ছন্ন পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। তারপরেও মানুষ কেন সচেতন হচ্ছে না সেটা আমার বোধগম্য নয়। তিনি আরো বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে পৌরসভায় একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। আবার প্রতিদিন মাঠে নেমে প্রশাসনের পাশাপাশি আমরাও জনসচেতনতায় কাজ করে যাচ্ছি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার একেএম সাইফুল আলম বলেন, করোনা প্রতিরোধে এ উপজেলায় মানুষকে সচেতন করতে মাইকিং লিফলেট বিতরণ, সার্বক্ষণিক মাঠে থেকে সচেতনতা সৃষ্ঠিসহ নানা সতর্কতামূলক পদক্ষপ নেয়া হচ্ছে। এরপরও মানুষ যদি সতর্কতা অবলম্বন না করে তবে তাদের বিরুদ্ধে আইননানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়াও যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমরা ২৪ঘন্টা প্রস্তুত রয়েছি।

উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও পৌরসভা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মহব্বত আলী বলেন, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম এমপির নির্দেশনায় আমরা কর্মহীন, হতদরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষের মাঝে বাড়ি বাড়ি গিয়ে জরুরী খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছি। উপজেলা প্রশাসন, ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে এই খাদ্যসামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করছি। জনসমাগম এড়াতে সবাইকে ঘরে থাকার নির্দেশ দিলেও অনেকেই ঘর থেকে বের হয়ে পড়ছে। এনিয়ে আমরা প্রতিদিন মনিটরিং করছি।

উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট রফিকুল ইসলাম হিরা বলেন, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম এমপির নির্দেশনায় দলীয় নেতাকর্মীরা অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের খাদ্য নিরাপত্তায় নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে জরুরী খাদ্যসামগ্রী। লাকসামে ২০ হাজার কর্মহীন মানুষের মাঝে এই খাদ্যসামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।

এছাড়াও স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম করোনা সতর্কতায় লাকসাম সরকারি হাসপাতালে নিজ অর্থায়নে ৪০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে দুইটি আইসিও স্থাপন করছেন। করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশাসনের পাশাপাশি আমরাও নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছি এবং সবাইকে সুস্থ ও নিরাপদে ঘরে রাখার চেষ্টা করছি।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com