বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫, ১০:৩৯ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
একাদশে ভর্তি : প্রথম ধাপের ফলে কলেজবঞ্চিত ২৫ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী চুনারুঘাট সীমান্তে আটক ৩ বাংলাদেশি নাগরিককে ফেরত দিল বিএসএফ চুনারুঘাটে পৃথক অভিযানে ৫৬ কেজি গাঁজাসহ চারজন আটক ক্ষমতায় গেলে পাঁচ বছরে ২৫ কোটি গাছ লাগাবে বিএনপি: তারেক রহমান সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার: সেনাপ্রধানের সতর্কবার্তা আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ ছাত্রদল নেতা হামিমের বিরুদ্ধে চলতি সপ্তাহেই ভোটের কর্মপরিকল্পনার খসড়া চূড়ান্ত করবে ইসি জেলার শ্রেষ্ঠ অফিসার ইনচার্জ নির্বাচিত চুনারুঘাট থানার ওসি নুর আলম চুনারুঘাটে গৃহবধূ হত্যার অভিযোগ স্বামী পলাতক, দুই নারী আটক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে সরকারি রাস্তায় গেইট বসানোর অভিযোগ

হবিগঞ্জ-১ : মিলাদ-রেজা’য় জোর লড়াইয়ের আভাস

নিজস্ব প্রতিবেদক: একদিন পরই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। প্রার্থীদের সব ধরনের প্রচার, প্রচারণা ও সভা সমাবেশ করার সময়সীমা ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। নির্বাচনে হবিগঞ্জ-১ (বাহুবল-নবীগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগ থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে সাবেক প্রতিমন্ত্রী মরহুম দেওয়ান ফরিদ গাজীর ত্বনয় গাজী মোহাম্মদ শাহ নওয়াজ মিলাদ এবং ঐক্যফ্রন্ট থেকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে সাবেক অর্থমন্ত্রী মরহুম শাহ এমএস কিবরিয়ার ত্বনয় বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. রেজা কিবরিয়ার মধ্যে জোর লড়াইয়ের আভাস মিলেছে। তবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ মহাজোটের বাইরে জাপার সব প্রার্থীদের সড়ে গিয়ে মহাজোটকে বিজয়ী করার জন্য সকলকে একযোগে কাজ করার নির্দেশনা দেওয়ার পরপরই সুবিধাজনক অবস্থায় চলে আসেন নৌকার প্রার্থী গাজী মোহাম্মদ শাহ নওয়াজ মিলাদ। কারণ এরশাদের ঘোষণা অনুযায়ী লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী আতিকুর রহমান আতিকের ভোটের মাঠে থাকা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। সত্যি সত্যি যদি বাহুবল-নবীগঞ্জ ভোটের মাঠে শেষ মুহুর্তে এসে লাঙ্গল প্রতীক না থাকে তবে সেই লাঙ্গলের ভোট নৌকার বাক্সে যাবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

আওয়ামী লীগের দূর্গ খ্যাত এই আসনটিতে স্বাধীনতার পর একমাত্র ২০১১ সালের ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত উপনির্বাচন ছাড়া কোনো নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী না জিতলেও এবার  আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী গাজী মোহাম্মদ শাহ নওয়াজ মিলাদ এর সাথে ঐক্যফ্রন্ট থেকে মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী রেজা কিবরিয়ার জোর লড়াইয়ের আভাস মিলছে। ঐক্যফ্রন্টের এই প্রার্থীকে ভোটে জেতাতে বিভিন্ন কৌশলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে আছেন বিএনপি কর্মীরা। এর বাইরে রেজার পিতা প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা শাহ এএমএস কিবরিয়া অর্থমন্ত্রী থাকাকালে এলাকার উন্নয়নের কারণে ভোটারদের সহানুভূতিও যাচ্ছে বিপরীত শিবিরের এই প্রার্থীর পক্ষে।

তবে রেজার প্রতিপক্ষ নৌকার প্রার্থী গাজী মোহাম্মদ শাহ নওয়াজ মিলাদও ভোটের মাঠে রয়েছেন শক্ত অবস্থানে। তার বাবা প্রয়াত দেওয়ান ফরিদ গাজী প্রতিমন্ত্রীসহ ১৯৯৬ সাল থেকে টানা তিনবার এই আসনে নৌকা প্রতীকে এমপি হয়েছিলেন। এলাকায় কিবরিয়া পরিবারের মতো গাজী পরিবারেরও রয়েছে বেশ জনপ্রিয়তা। দলীয় নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে শাহ নেওয়াজ গাজীর পক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন। এছাড়া আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডও ভোটে প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন অনেকে।

বিএনপির শাসনামলে হবিগঞ্জে বোমা হামলায় নিহত হয়েছিলেন রেজা কিবরিয়ার বাবা আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় নেতা শাহ এএমএস কিবরিয়া। বিচারাধীন কিবরিয়া হত্যা মামলার অধিকাংশ আসামি বিএনপির সিলেট অঞ্চলের নেতা। তাই রেজা কিবরিয়ার নৌকার বিরোধী শিবিরে যোগ দিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণে বিস্মিত হয়েছিলেন স্থানীয়দের অনেকেই। নির্বাচনে মনোনয়ন দাখিলের কয়েকদিন কামাল হোসেন নেতৃত্বাধীন গণফোরামে দিয়ে তুমুল আলোচনায় এসেছিলেন রেজা কিবরিয়া। পরে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হন তিনি, তার প্রতীক হয় বিএনপির ধানের শীষ।

প্রথম দিকে অভিমানে রেজা কিবরিয়ার পক্ষে মনোনয়ন বঞ্চিত শেখ সুজাত মিয়া কাজ না করলেও প্রচারণার শেষ দিকে এসে তাকে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছেন এই বিএনপি নেতা। নবীগঞ্জ ও বাহুবল উপজেলার বিএনপি নেতাকর্মীরা রেজা কিবরিয়ার ভোটের প্রচারণায় দিনরাত কাজ করেছেন।

ভোটের প্রচারণার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত নৌকা লাঙ্গল ধানের শীষ একসঙ্গে মাঠ চষা শুরু করে। প্রচারের                   প্রথম পর্যায়ে নৌকার প্রার্থী কিছুটা চাপে থাকলেও ধানের শীষের প্রার্থী মাঠে জনপ্রিয়তায় ভাল অবস্থান নেন। কিন্তু শেষ পর্যায়ে এসে নৌকা প্রার্থীর পক্ষে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত এমপি কেয়া চৌধুরী ও ডা. মুশফিক হোসেন চৌধুরী মাঠে নামার পরপরই পাল্টে যায় সকল হিসাব-নিকাশ। এছাড়া বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এরশাদের সেই ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে লাঙ্গলের ভোট নৌকার বাক্সে আসার পথ খুলে যায়। এতে নৌকার সমর্থনকারীরা ব্যাপক চাঙ্গা হয়ে উঠেন। আর এমন দৃষ্ঠিতে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন বাহুবল-নবীগঞ্জের ভোটের মাঠে নৌকা-ধানের শীষের জোড় লড়াই হবে।

এ ছাড়াও ইসলামী আন্দোলনের মনোননীত প্রার্থী হাতপাখা নিয়ে মাওলানা আবু হানিফ মো. আহমদ হোসেন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের মনোনীত প্রার্থী গামছা প্রতীক নিয়ে অ্যাডভোকেট নুরুল হক, বাসদ মনোনীত প্রার্থী মই প্রতীক নিয়ে চৌধুরী ফয়সল শোয়েব, ইসলামী ফ্রন্টের মনোনিত প্রার্থী মোমবাতি প্রতীক নিয়ে হাফেজ জুবায়ের আহমদ প্রতিদ্বন্ধিতায় রয়েছেন।

আগামী ৩০ ডিসেম্বর ভোট গ্রহন। মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লক্ষ ৬৫ হাজার ১৮ জন। ভোট কেন্দ্র ১৭৬ টি এবং ৭৪১ টি ভোট কক্ষে ভোট গ্রহন করা হবে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com