বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫, ১০:১৮ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
নবিগঞ্জে সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশনে ভয়াবহ আগুন, ১০ গাড়ি ভস্মীভূত একাদশে ভর্তি : প্রথম ধাপের ফলে কলেজবঞ্চিত ২৫ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী চুনারুঘাট সীমান্তে আটক ৩ বাংলাদেশি নাগরিককে ফেরত দিল বিএসএফ চুনারুঘাটে পৃথক অভিযানে ৫৬ কেজি গাঁজাসহ চারজন আটক ক্ষমতায় গেলে পাঁচ বছরে ২৫ কোটি গাছ লাগাবে বিএনপি: তারেক রহমান সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার: সেনাপ্রধানের সতর্কবার্তা আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ ছাত্রদল নেতা হামিমের বিরুদ্ধে চলতি সপ্তাহেই ভোটের কর্মপরিকল্পনার খসড়া চূড়ান্ত করবে ইসি জেলার শ্রেষ্ঠ অফিসার ইনচার্জ নির্বাচিত চুনারুঘাট থানার ওসি নুর আলম চুনারুঘাটে গৃহবধূ হত্যার অভিযোগ স্বামী পলাতক, দুই নারী আটক

নওগাঁয় গ্রাম্য সালিশে ৩ পরিবারকে সমাজচ্যুত

নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর রাণীনগরে সবজি গাছের নেটের বেড়া আগুন দিয়ে পোড়ানোকে কেন্দ্র করে তিনটি পরিবারকে গ্রাম্য বৈঠকের মাধ্যমে সমাজচ্যুত (একঘরে) করার অভিযোগ উঠেছে। ওই গ্রামের সমাজপতি বকুল হোসেনসহ কয়েকজন প্রভাবশালী মাতব্বরের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে। ওই তিনটি পরিবারের লোকজন বর্তমানে স্বাভাবিক ভাবে জীবন যাপন করতে পারছে না। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার বড়গাছা ইউনিয়নের নিশিন্দাকুড়ি গ্রামে।

জানা গেছে, চলতি মাসের ১৬ তারিখে (বুধবার) দুপুরে ভ্যান চালক আব্দুর রহিম তার বাড়ির সামনে সিম গাছের নেটের দেয়া বেড়ায় আগুন দেখতে পান। পরে রহিমের স্ত্রী আগুনের ধোওয়া দেখতে পেয়ে বাহিরে এসে দেখে প্রতিবেশী সফিয়তের ছেলে ও তার ভাতিজা দাঁড়িয়ে আছে। তখন তাদের সন্দেহ হলে তিনি তাদেরকে কে বা কারা নেটে আগুন দিয়েছে জিজ্ঞাসা করলে তারা জানি না বলে চলে যায়। পরে এ নিয়ে রহিম ও সফিয়ত পরিবারের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে ওই ঘটনায় সফিয়ত তার ছেলে ও ভাতিজাকে সন্দেহ করায় গ্রামের মাতব্বরদের কাছে বিচার দাবি করেন। তার প্ররিপ্রেক্ষিতে সমাজপতিরা ওই রাতেই অভিযুক্ত আব্দুর রহিমকে শালিস বৈঠকে ডাকে। কিন্তু রহিমের কোন লোকজন না থাকায় সমাজপতিদের কাছে রবিবার পর্যন্ত সময় চায় রহিম। রবিবার দিন বাবলু নামের এক মাতব্বর রহিমকে ৫হাজার টাকা নিয়ে বৈঠকে উপস্থিত হতে বলেন। কিন্তু রহিম টাকা না নিয়ে বৈঠকে উপস্থিত হয়ে তার লোকজন না আসতে পারায় তিনি আবারো সময় চান। টাকা না দেওয়া ও সময় চাওয়ার অপরাধে সমাজপতিরা রহিমের বড় দুই ভাই আব্দুল মজিদ ও আব্দুস সামাদকে ভাই আব্দুর রহিমের পক্ষে যাওয়ার কারণে তাদের দুজনকেও সমাজচ্যুত করার ঘোষনা দেন এবং গ্রামের সবাইকে এই ৩পরিবারের সঙ্গে কোন প্রকারের লেনদেন কিংবা যোগাযোগ না করার হুশিয়ারী দেন মাতব্বররা।

আব্দুর রহিম বলেন, গ্রামের কতিপয় মাতব্বররা বিনা অপরাধে বিনা কারণে অন্যায় ভাবে আমাকেসহ আমার বড় দুই ভাইকে সমাজচ্যুত করেছে। অথচ আমি আগুন লাগার সময় ছিলাম না। আমি ভ্যান চালিয়ে জীবন-যাপন করি। তবে প্রতিবেশী সফিয়তের সঙ্গে জমিজমা নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিলো। সেই কারণে হয়তো সফিয়ত গ্রামের প্রভাাবশালী মাতব্বরদের নিয়ে এই ষড়যন্ত্র করেছে। আমি যদি কোন অন্যায় করে থাকি তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে বিচার চাই আর যদি মাতব্বররা আমাদেরকে সমাজচ্যুত করে অপরাধ করে থাকে তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে তাদেরও বিচার চাই।

রহিমের বড় ভাই আব্দুস সামাদ বলেন, আমার ছোট ভাই আ: রহিম শালিস বৈঠকের সময় চাইলে সময় না দিয়ে মাতাব্বরা তড়িঘড়ি করে জুরি বোর্ড গঠন করে সমাজচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে মাতাব্বরা আমাকে ও আমার বড় ভাই আ: মজিদকে ডেকে বলে তোমরা যদি দশজনের পক্ষে না ভাইয়ের পক্ষে তখন আমরা বলি সমাজের পক্ষেও আছি আমার ভাইয়ের পক্ষেও আছি। আমরা আরো বলি আমার ভাই চুরি করেছে না কোন নোংরামী করেছে যে আপনারা তাকে সমাজ ত্যাগী করলেন। তখন তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদেরকেও সমাজচ্যুত ঘোষনা করে।

ওই গ্রামের প্রভাবশালী মাতব্বর বকুল হোসেন জানান, রহিম আমাদের কথা শোনে না সে সমাজকে মানে না। তাই তাকে ও তার দুই ভাইয়ের কাছ থেকে আমরাই দুরে সরে আছি। আমরা তাদের সমাজচ্যুত করিনি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মামুন বলেন এই বিষয়ে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com