মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২৪ পূর্বাহ্ন
তরফ নিউজ ডেস্ক: ১৯৭১ সালের ৭ মার্চে ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে কালজয়ী ভাষণ দিয়েছিলেন সেখানেই স্বাধীনতার প্রকৃত ঘোষণা ছিল বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই ভাষণে বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতিকে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়ার সব নির্দেশনা দিয়েছিলেন বলেও জানান তার কন্যা।
রবিবার বিকালে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতার ৭ মার্চের ভাষণে ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম-’ দুইবার এই কথাটা বলেছেন এবং শেষেরবার সবথেকে জোর দিয়ে বলেছেন। অর্থাৎ এটা যে স্বাধীনতা সংগ্রাম বা যুদ্ধটা যে স্বাধীনতা যুদ্ধ হবে তা তিনি স্পষ্ট বলে গেছেন। কাজেই একভাবে বলতে গেলে ৭ মার্চের ভাষণই ছিল প্রকৃত স্বাধীনতার ঘোষণা।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৭ মার্চের ভাষণে বাঙালির অত্যাচার-নির্যাতন এবং বঞ্চনার ইতিহাস এবং সবথেকে বড় কথা এই ভাষণের মধ্যদিয়ে একটি যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়ার সঠিক দিক নির্দেশনা জাতির পিতা দিয়ে গেছেন। কারণ একটা গেরিলা যুদ্ধ হবে সেই যুদ্ধ করতে হলে কী কী করতে হবে-সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোলা থেকে শুরু করে যার যা কিছু রয়েছে তা নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে তিনি বলেছেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা জানতেন যে সময় স্বাধীনতার ঘোষণাটা অফিসিয়ালি তিনি দেবেন সে মুহূর্তে তিনি হয়তো বেঁচে নাও থাকতে পারেন। সেজন্য তার এই ঐতিহাসিক ভাষণের মধ্যেই তিনি স্বাধীনতার ঘোষণাটা দিয়ে গেলেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ ধরনের অসহযোগ আন্দোলন পৃথিবীতে আর কোথাও হয়েছে বলে তার জানা নেই। কেননা জাতির পিতা যা যা নির্দেশনা দিয়েছেন তা দেশের মানুষ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছে।’ তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা জনগণের ম্যানডেট পেয়ে জনগণের নেতায় পরিণত হন এবং তার কথাই এদেশের মানুষ মেনে নিয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা আমাদের বন্ধুপ্রতীম দেশ এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করলাম। আর জাতির পিতা তার ৭ মার্চের ভাষণেই একথা বলে গেছেন। অর্থাৎ সে ভাষণে তিনি একটি জাতির জন্য শুধু রণকৌশলই দিয়ে যাননি, নিজের জীবনটাকেও উৎসর্গ করে দিয়ে গেছেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বলতেন-যা কিছু হোক দেশ স্বাধীন হবে। শুধু একজন রাজনৈতিক নেতা হিসেবে নয় যুদ্ধের রণকৌশলে তার এই বক্তৃতা যে কত কার্যকর এবং তার প্রতিটি পদক্ষেপ যে কতটা বাস্তবমুখী সেটাই হচ্ছে সবথেকে বড় ব্যাপার।’
অনুষ্ঠান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক এবং শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন। সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদের সভাপতিত্বে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব বদরুল আরেফিন স্বাগত ভাষণ দেন।
জাতির পিতার জন্মশতবর্ষ উদযাপন বাস্তবায়ন জাতীয় কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী অনুষ্ঠানে মুল প্রবন্ধ পাঠ করেন।
মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ. সংসদ সদস্যবৃন্দ, পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন দূতাবাস এবং কূটনৈতিক মিশনের প্রতিনিধিসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।