সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪০ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার ১ নম্বর ধর্মঘর ইউনিয়নের বৈষ্ঠবপুর গ্রামে এক যুবককে বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেপ্তার করে থানায় নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে এক এসআই ও তার সঙ্গীদের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে আজ রোববার (১৪ মার্চ) দুপুর ১২টায় হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী ও তার পরিবার।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী জসিম উদ্দিন বলেন, ‘একই বাড়ির প্রতিবেশী আলী হোসেন ওরফে খোকনের সঙ্গে বাড়ির সীমানা নিয়ে তাদের বিরোধ চলছিল, যা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গ্রাম্য মাতব্বররা সঠিক সীমানা নির্ধারণ করে মীমাংসা করে দেন। কিন্ত গত ৬ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টায় মাধবপুর থানার অন্তর্গত কাশিমনগর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই দেবাশীষ তালুকদার তার ফোর্স আমাদের বাড়িতে আসেন এবং আমার বাবা আব্দুল হক বাড়িতে আছেন কি না জানতে চান। বাবা বাড়ি না থাকায় আমি নিজেই ঘর থেকে বের হই। ঘর থেকে বের হওয়ামাত্র এসআই দেবাশীষ তালুকদার আমাকে হ্যান্ডকাফ লাগানোর কথা বলেন তার ফোর্সকে। তখন আমি আমার অপরাধ কী জানতে চাইলে তিনি আমাকে অশ্লীল ভাষায় গালি দিয়ে বলেন, ‘আমার নির্দেশ অমান্য করে বাড়ি নির্মাণ করছস, এখন বুঝবি আমি কি জিনিস।’ বলে আমাকে জোর-জবরদস্তি করে গ্রেপ্তার করতে উদ্যত হন। তখন আমার ভাই মোক্তার হোসেন (৩০) এগিয়ে এলে তাকে লাঠি দিয়ে আঘাত করেন এসআই দেবাশীষ তালুকদার। একপর্যায়ে পরিবারের নারীরা এগিয়ে এলে তাদেরকেও ওই এসআই গালিগালাজ করে টানা-হেঁচড়া করে বিভিন্নভাবে নির্যাতিত করেন।’
জসিম আরও অভিযোগ করেন, আইনের লোক হয়ে এসআই দেবাশীষ তালুকদার তার ফুপু মারুফা বেগমের (৩৫) গায়ে হাত তোলেন। তার ভাবী জেসমিন আক্তার (২৫) এগিয়ে এলে তাকে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দেন। এমনকি পুলিশের নির্যাতনের হাত থেকে তার বৃদ্ধা মা সুফিয়া আক্তারও বাদ যাননি। এ সবকিছুর ভিডিও ফুটেজ রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জসিম আরও জানান, সেদিন এসআই দেবাশীষ তালুকদারসহ পুলিশ সদস্যরা এ বিষয়ে কেউ মুখ খুললে বাড়ির লোকজনকে বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে দেবেন বলে হুমকি প্রদান করে তাকে মাধবপুর থানায় নিয়ে গিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় শারীরিক নির্যাতন করেন। কোনো ওয়ারেন্ট বা অভিযোগ ছাড়া তাকে গ্রেপ্তার করায় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শামছুল ইসলাম কামাল ও ওয়ার্ডের সদস্যকে জানালে তারা থানায় যান। তখন এসআই দেবাশীষ তাদেরকে গালিগালাজ করেন। নির্যাতনের ফলে জসিমের অবস্থা খারাপ হলে ওইদিন রাত সাড়ে ১২টায় তাকে মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরেরদিন হাসপাতাল থেকে নিয়ে বেলা ২টার দিকে তাকে আদালতে চালান করে পুলিশ। পরে তিনি জামিনে কারাগার থেকে বের হন এবং হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। এসআই দেবাশীষের সঙ্গে সেদিন এএসআই গোলাম মস্তোফা ও এএসআই রানা আহমেদসহ একদল পুলিশ ছিল।
জসিম জানান, পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে এখনও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তিনি। তিনি এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।