সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২৩ অপরাহ্ন
তরফ নিউজ ডেস্ক: মহামারী করোনাভাইরাস নতুন রূপ নিয়ে আসায় ইউরোপ ও লাতিন আমেরিকার বেশ কয়েকটি দেশে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এসব দেশের মধ্যে ইতালি লকডাউন দিতে বাধ্য হয়েছে। স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করেছে জার্মানি। হাসপাতালে জটিল রোগীদের আইসিইউ দিতে না পেরে সমালোচনায় পড়েছে ফরাসী সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ।
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে করোনার নতুন স্ট্রেইনটি ঠেকানো না গেলে সেটি বৈশ্বিক এ মহামারীকে আরও ভয়াবহ রূপে নিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। ফুটবলের দেশটির প্রতিবেশি কয়েকটি দেশেও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ভ্যাকসিন প্রয়োগের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র আর ভারতে রোগীর সংখ্যা বাড়ায় দেশ দুটির সরকারও নতুন নির্দেশনা জারি করেছে। ভারতের মহারাষ্ট্রের নাগপুরে লকডাউন জারি করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশ ফিলিপাইনে গত ছয় মাসের তুলনায় চলতি মাসে কোভিড রোগী বেড়ে চলায় স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।
সংক্রামক ব্যাধিটি বিস্তারের এক বছরের বেশি সময়ে এসে ফের আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ায় যথাযথ স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মানার জন্য আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
ফ্রান্স সরকার জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ায় হাসপাতালে আইসিইউ সঙ্কুলান হচ্ছে না। দেশটির বেশিরভাগ হাসপাতালেই এমন দশা। তিনমাসের মধ্যে সর্বোচ্চ রোগী আসছে হাসপাতালগুলোতে। ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) সঙ্কুলনা না হওয়ায় প্যারিস এলাকা থেকে থাকা ১০০ রোগীকে সরানো হবে।
ফ্রান্সের স্বাস্থ্যমন্ত্রী অলিভিয়ের ডেরন বলেন, মাত্র এক রাতের ব্যবধানে আইসিইউ প্রয়োজন এমন এক হাজার রোগী বেড়েছে। এক রাতের মধ্যে বাড়তি ব্যবস্থা সম্ভব নয় বলে হতাশা প্রকাশ করেন তিনি। যদিও ফ্রান্স সরকার ১ কোটি ২০ লাখ মানুষের শহর প্যারিসে নতুন করে লকডাউনে দেয়া লাগবে না বলা প্রত্যাশা করছে।
জার্মানিতে বয়স্কদের পাশাপাশি স্কুল শিক্ষার্থীদের মধ্যেও করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। দেখা দিয়েছে থার্ড ওয়েভের শঙ্কা। অন্যদিকে আবারো লকডাউনের পরিকল্পনা নিয়েছে ইতালি সরকার। আজ থেকে দেশটির বেশিরভাগ বিপনী বিতান, রেস্টুরেন্ট এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত এই কড়াকড়ি থাকবে।
ইতালির স্বাস্থ্যমন্ত্রী রবার্তো স্পেরানজা বলেন, ইস্টার সানডের ছুটির সময় সম্পূর্ন শাটডাউন থাকবে। সবচেয়ে বেশি কড়াকড়ি থাকবে রোম এবং মিলানে। প্রতিটি প্রদেশে নতুন করে অস্থায়ী হাসপাতাল তৈরি করা হবে। ইতালির ভেতর-বাইরে ভ্রমণেও নিষেধাজ্ঞা থাকবে। কারণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার আগে সতর্ক হওয়ার কোনো বিকল্প নেই।
করোনাভাইরাসের হটস্পটে পরিণত হয়েছে লাতিন দেশ ব্রাজিল। দেশটিতে দৈনিক গড় মৃত্যুর হার দুই হাজার ছাড়িয়েছে। পরিস্থিতি নাজুক হওয়ায় মেক্সিকোসহ লাতিন আমেরিকার কয়েকটি দেশ জরুরি সহায়তা চেয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ফিলিপাইনে ব্রাজিলের উচ্চ সংক্রমক প্রজাতির করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, ফিলিপাইনে করোনার সংক্রমণের সংখ্যা ছয় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ রয়েছে। কিছুদিন আগে সংক্রমণ কমার পর ভারতে আবার করোনা সংক্রমণ বেড়েছে। বেশি খারাপ অবস্থা মহারাষ্ট্রে। নতুন লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে নাগপুরে।