রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০৩:৩৯ অপরাহ্ন

বানিয়াচংয়ে সীমানা নির্ধারণ নিয়ে সংঘর্ষ, আহত অর্ধশত

সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশের এ্যাকশন

রায়হান উদ্দিন সুমন, বানিয়াচং (হবিগঞ্জ) : বানিয়াচং নতুনবাজারে দোকান ঘরের সীমানা নির্ধারণ নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে অন্ততঃ অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছেন। আহতদের বানিয়াচং স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে চারটার দিকে ৩নং ইউনিয়নের অন্তর্গত মাইজের মহল্লার কোয়ারপাড় মসজিদের সামনে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষের খবর পেয়ে বানিয়াচং থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুল কাইয়ুমের নেতৃত্বে একদল পুলিশ দুই রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।

জানা যায়, বানিয়াচং দোয়াখানির হাজি ইসলাম উদ্দিনের মালিকানাধীন গ্যানিংগঞ্জ বাজারের কলেজ রোডে অবস্থিত দোকানের পিছনে কিছু জায়গা রয়েছে। সেই জায়গার পাশে কিছু পতিত জায়গা একই মহল্লার কাজল, ধন মিয়া, তজু, নাসির, মোশাহিদ, যাত্রাপাশার মাহির,দ ক্ষিণ পাড়ের মনজিল, আকিবুর ও পাঁড়াগাওয়ের শাহজাহান মিয়া গংরা জায়গাটির প্রকৃত  মালিকের কাছ থেকে কিনে নেয়। হাজী ইসলাম উদ্দিনের মালিকাধীন জায়গায় বিল্ডিং করার জন্য কাজ শুরু করে তার পুত্র রাশেদ মিয়া। পরে অপর পক্ষ তাকে বিল্ডিংয়ের কাজে বাঁধা প্রদান করে। ফলে কাজ বন্ধ রাখে রাশেদ মিয়া।

টেটাবিদ্ধ আহত এক যুবক

এই নিয়ে কয়েকবার শালিস বসলেও কোনো সমাধান আসেনি। বৃহস্পতিবার গ্যানিংগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব রেজাউল মোহিত খানের নেতৃত্বে এলাকার কিছু মুরুব্বিদের নিয়ে সীমানা নির্ধারণের জন্য উভয়পক্ষকে নিয়ে শালিসে বসেন। একপর্যায়ে শালিসানরা সীমানা নির্ধারণ করে খুঁটি দেয়ার জন্য একপক্ষকে রায় প্রদান করেন। রায়টি মেনে নেয় উভয়পক্ষ।

শালিসানরা বিদায় হওয়ার পর রাশেদ ও কাজল মিয়ার মধ্যে বাকবিতন্ডার সৃষ্টি হয়। পরে রাশেদের পক্ষ নিয়ে তার চাচা তাছু মিয়া ও কাজলের পক্ষ নিয়ে হাতাহাতিতে লিপ্ত হয়ে যান ধন মিয়া। একপর্যায়ে ধন মিয়া বাঁশ নিয়ে তাছু মিয়াকে আঘাত করে। ঘটনাটি বাজারের লোকজন এসে তাৎক্ষনিক মিটমাট করে দেন।

এ ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে উভয়পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। প্রায় ঘন্টাখানেক এই সংঘর্ষ স্থায়ী হয়। সংঘর্ষে উভপক্ষের অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছে।

এদের মধ্যে গুরুতর আহত টেটাবিদ্ধ অবস্থায় আলফু মিয়াকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্য আহতরা গ্রেফতার এড়াতে হাসপাতালে না গিয়ে বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন।

সংঘর্ষের খবর পেয়ে বানিয়াচং থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুল কাইয়ুমের নেতৃত্বে একদল পুলিশ গিয়ে দুই রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। ঘটনার পরে আশেপাশের বাড়িঘরে তল্লাশি চালায় পুলিশ। উদ্ধার করা হয় সংঘর্ষে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র। আটক করা হয় উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজনকে তবে তাৎক্ষণিক তাদের পরিচয় জানা যায়নি। তবে উক্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন, যাদেরকে আটক করা হয়েছে তার সংঘর্ষের সাথে জড়িত ছিলনা।

এ বিষয়ে ওসি (তদন্ত) আব্দুল কাইয়ুমের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয়নি।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com