শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৪৬ অপরাহ্ন
তরফ নিউজ ডেস্ক : ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে যথাযথ সংস্কার ছাড়া আগাম নির্বাচন হলে তাতে জয়ী হয়ে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে। তবে তারা আগের সরকারের চেয়ে কতটুকু ভালো শাসন দিতে পারবে তা নিয়ে সংশয় আছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিনের কাজের পর্যবেক্ষণ ও বর্তমান করণীয় নিয়ে ব্রাসেলসভিত্তিক অলাভজনক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের (আইসিজি) পর্যবেক্ষণে এমনটাই উঠে এসেছে।
বৃহস্পতিবার ‘বাংলাদেশে নতুন যুগ? সংস্কারের প্রথম ১০০ দিন’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ভবিষ্যতে টেকসই ও ভালো শাসন পরিচালনার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত একটি বাস্তবসম্মত সময়সীমার মধ্যে সংস্কারকৃত নির্বাচনব্যবস্থার অধীনে নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠানের চেষ্টা করা এবং এটি ১৮ মাসের বেশি বাড়ানো উচিত নয়।
প্রবল গণরোষের মুখে গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশ থেকে শেখ হাসিনা চলে যাওয়ায় রাজনৈতিক সংস্কৃতি নবায়নের সুযোগ তৈরি হয়েছে, যা দেশকে তিক্ত বিভাজন ও সহিংসতার বাইরে রাখতে পারে বলে মনে করে ক্রাইসিস গ্রুপ।
অন্তর্বর্তী সরকারকে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রেখে রাজনৈতিক ঐকমত্য গড়ে তোলার তাগিদ দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারের প্রতি বাংলাদেশের জনগণের যাতে দৃঢ় সমর্থন থাকে তা নিশ্চিত করতে দৃশ্যমান সুফল দিতে হবে। তা না হলে বিকল্প কিছু ঘটলে তা কারও জন্য ভালো হবে না।
ক্রাইসিস গ্রুপ মনে করে, শেখ হাসিনার শাসনের পনেরো বছর পর বাংলাদেশে শাসন ব্যবস্থার উন্নতির জন্য এবং আরেকটি স্বৈরাচারী শাসনের উত্থান ঠেকানোর এমন একটি সুযোগ এসেছে যা একটি প্রজন্মে একবারই আসে। এ ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকার ব্যর্থ হলে বাংলাদেশ আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারে অথবা সামরিক শাসনের দিকে যেতে পারে।
অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত উচ্চাকাঙ্ক্ষী সংস্কারের জন্য জনসমর্থন ধরে রাখতে দ্রুত ফলাফল দৃশ্যমান করা। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য গড়ে তোলা।
ক্রাইসিস গ্রুপের প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর পুনর্গঠনও হবে অনেক বড় অর্জন। প্রধান রাজনৈতিক পক্ষগুলোর সমর্থন ধরে রাখা ইতোমধ্যেই চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠছে। কেউ কেউ আগাম নির্বাচনের সুবিধার জন্য অবস্থান নিয়েছে।
এই অবস্থায় ক্রাইসিস গ্রুপের পর্যবেক্ষণ, আগামী নির্বাচনে সম্ভবত ক্ষমতা কিছুটা কাটছাঁট করে ক্ষমতায় আসতে যাচ্ছে বিএনপি। তবে যথাযথ সংস্কার ছাড়া ক্ষমতায় গেলে দলটি আগের চেয়ে ভালো কিছু করে দেখাতে পারবে কি না তা নিয়ে অনেকেরই সংশয় রয়েছে।
সংস্থাটির আশঙ্কা, বাংলাদেশে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার উল্লেখযোগ্যভাবে অবনতি হলে সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করতে পারে, এতে সামরিক শাসনামলের সূচনা হতে পারে।