কক্সবাজারের টেকনাফে গ্রেপ্তার তিনজন রোহিঙ্গা পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন।
নিহতরা খুন, ডাকাতিসহ নানা অভিযোগ বেশ কয়েকটি মামলার আসামি বলে পুলিশ জানিয়েছে।
শনিবার ভোররাতে হ্নীলা ইউনিয়নের মুছনী রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন পাহাড়ি এলাকায় এই ‘বন্দুকযুদ্ধ’ হয় বলে টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ জানিয়েছেন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বন্দুকযুদ্ধে পুলিশের ৩ সদস্যও আহত হয়। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে অস্ত্র ও গুলি।”
নিহতরা হলেন হ্নীলা ইউনিয়নের মুছনী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বি-ব্লকের আমির হোসেনের ছেলে নুর আলম (২৩) এবং একই ক্যাম্পের এইচ-ব্লকের মোহাম্মদ ইউনুসের ছেলে মোহাম্মদ জুবায়ের (২০) ও ইমাম হোসেনের ছেলে হামিদ উল্লাহ (২০)।
পুলিশের দাবি, এই শরণার্থীরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পকেন্দ্রিক সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সদস্য।
আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন এসআই স্বপন, কনস্টেবল মোহাম্মদ মেহেদী ও মং মং।
ওসি প্রদীপ বলেন, শুক্রবার রাতে মুছনী ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকা থেকে নুর আলম, জুবায়ের ও হামিদকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
“জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের নিয়ে পুলিশের একটি দল ভোর রাতে মুছনী ক্যাম্প সংলগ্ন পাহাড়ি এলাকায় অস্ত্র উদ্ধারে অভিযানে যায়। সেখানে পৌঁছামাত্র তাদের সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। তখন পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এক পর্যায়ে নুর আলম, জুবায়ের ও হামিদ গুলিবিদ্ধ হয়। আহত হয় পুলিশের ৩ সদস্যও।”
গুলিবিদ্ধ ৩ রোহিঙ্গাকে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে তাদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা দেখে জানান, তিনজনই মারা গেছেন।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) শাহীন মো. আব্দুর রহমান চৌধুরী বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই পথে ৩ রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছে। তাদের শরীরে গুলির জখম রয়েছে।
ঘটনাস্থলে দেশে তৈরি চারটি বন্দুক ও সাতটি গুলি পাওয়া যায় বলে জানান ওসি।
তিনি বলেন, “নিহত ৩ রোহিঙ্গা টেকনাফের ক্যাম্পকেন্দ্রিক গড়ে উঠা সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সদস্য। তারা রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ আশপাশের এলাকায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, হত্যা, অপহরণ ও মাদক পাচারসহ নানা অপরাধ সংঘটন করত।”
তারা তিনজনই টেকনাফ থানার পাঁচটি মামলার আসামি বলে ওসি জানান। তিনি বলেন, এসব মামলায় তারা পলাতক ছিলেন।
মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গারা নিজ দেশে দমন-পীড়নের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারে বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে রয়েছে।