সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪২ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :

বন্ধুর জানাজার পেছনে বসে ডুকরে ডুকরে কাঁদলেন সুধীর বাবু

তরফ নিউজ ডেস্ক: প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে একসঙ্গে চলতে চলতে ৫০ বছর কাটালেন দুই বন্ধু। কিন্তু হঠাৎ করে চলে গেলেন এক বন্ধু। ছোটবেলার বন্ধুকে হারিয়ে একা হয়ে যান সুধীর বাবু। বন্ধু আমীর হোসেন সওদাগরের (৬০) জানাজার নামাজের সময় সবার পেছনে গাছের গুঁড়িতে বসে ডুকরে ডুকরে কাঁদছেন সুধীর বাবু (৭০)। হিন্দু ধর্মের হয়েও জানাজার নামাজে বন্ধুর বিদায় লগ্নেও সঙ্গে ছিলেন তিনি। তার উপস্থিতি ও কান্না দেখে আগত মুসল্লিদের মনে দাগ কাটে। অনেকের আবেগে কেঁদে ফেলেন। সবাই বলতে থাকে সুধীর বাবুর কান্নায় প্রকাশ পেয়েছে বন্ধুর প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসা।

এমন একটি ছবি বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। পোস্টে লেখা হয়, সত্যিকারের বন্ধুত্ব আসলেই এমন হয়। যে বন্ধুত্ব জাত দেখে না, ধর্ম দেখে না, ধনী-গরিবের ভেদাভেদ চেনে না।

জানা গেছে, দুই বন্ধু কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গুণবতী ইউনিয়নের চাপাচো গ্রামের বাসিন্দা। ছোটবেলা থেকে এক সঙ্গে আড্ডা আর খেলাধুলা করে বড় হয়েছে। এক সময় গুণবতী বাজারে ব্যবসা শুরু করেন দুইজন। মুদির দোকান ছিল আমীর হোসেনের। তার পাশেই পান বিক্রি করতেন সুধীর বাবু। সুযোগ পেলেই বন্ধুর দোকানে এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আড্ডা দিতেন। অবসর সময় কাটত বেশ।

কিন্তু মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আমীর হোসেন। বুধবার তার লাশ গ্রামের বাড়িতে আনলে বন্ধুকে একনজর দেখার জন্য ছুটে যান সুধীর বাবু। আকস্মিক মৃত্যু তিনি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেনি। বন্ধুকে কবর দেওয়া পর্যন্ত পাশেই ছিলেন তিনি। বুধবার বেলা ১১টায় তার জানাজা হয়। তারপর পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

গুণবতী বাজারের এক ব্যবসায়ী জানান, আমির ও সুধীর বাবু দুজনেই খুব ভাল মানুষ। তারা ভাল বন্ধুও ছিলেন। বন্ধুর জন্য বন্ধু এভাবে কান্না করতে কখনও দেখিনি। এমন ঘটনা আমাদের এলাকার সবাইকে অবাক করেছে। সত্যিকারের বন্ধুত্বের বন্ধন কত শক্তিশালী হতে পারে তার দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন সুধীর বাবু।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com