বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৪৮ অপরাহ্ন
তরফ নিউজ ডেস্ক : সাঙ্গু নদীর দোহাজারী ও বান্দরবান পয়েন্টে তীব্র বন্যা দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে তিস্তা, ঘাঘট, ধরলা, ব্রহ্মপুত্র, সুরমা, কুশিয়ারা, খোয়াই, হালদা ও মাতামুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এসব নদীর অববাহিকায় অতি ভারী বর্ষণের ফলে বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতির আশঙ্কা করছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ১৪২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার রেকর্ড করা হয়েছে। সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টা এই নদীর পানি ৪২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধির রেকর্ড করা হয়েছে।
সবচেয়ে বেশি পানি বৃদ্ধির রেকর্ড করা হয়েছে মনু নদীর মনু রেলওয়ে সেতু পয়েন্টে। এই পয়েন্টে ২৪ ঘণ্টায় ৯৭ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধির রেকর্ড করা হয়েছে। এরপরেই রয়েছে কুশিয়ারা নদী। কুশিয়ারায় ৮৬ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধির রেকর্ড করা হয়েছে। কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার ১২৮ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি ২৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৪৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বিপদসীমা নিয়েই রয়েছে বিতর্ক। নদীর যে পানি ধারণক্ষমতা নির্ধারণ করা হয়েছে সেটাকেই ত্রুটিপূর্ণ মনে করছেন ভুক্তভোগীরা। কারণ অনেক নদীতে পলি পড়ে নাব্যতা কমে গেছে। কাগজে কলমে বিপদসীমা ছোঁয়ার আগেই প্লাবিত হয়ে যাচ্ছে বিস্তীর্ণ এলাকা।
আগামী ২৪ ঘণ্টায় নেত্রকোণা, সুনামগঞ্জ, সিলেট, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, জামালপুর, গাইবান্ধা জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলেও জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র।
বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া শনিবার বলেন, ‘আগামী ৩/৪ দিন পানি ভালোই বাড়বে, উত্তরবঙ্গ থেকে বন্যাটা আস্তে আস্তে মধ্যাঞ্চলের দিকে আসবে। বন্যা যমুনা হয়ে পদ্মাতে আসবে। ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর পানি বাড়তে পারে বলে মনে করছি, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর পানি কোনো কোনো পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করতেও পারে।’
আগামী বুধ বা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্যা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতি হতে থাকবে জানিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, ‘এরপর থেকে পানি কমতে শুরু করতে পারে। এরপরই বন্যা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে যাবে।
রোববার-সোমবার অনেক নদীর পানি আরও বৃদ্ধি পেয়ে অতিবন্যা দেখা দিতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে। ১৩ জুলাই প্রকাশিত পূর্বাভাসে বলা হয়েছে বাংলাদেশের উত্তর, উত্তর-পুর্বাঞ্চল, দক্ষিণ-পুর্বাঞ্চল তৎসংলগ্ন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাঞ্চল, সিকিম, আসাম ও মেঘালয়ে আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় অতিভারি বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। যে কারণে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত সুরমা, কুশিয়ারা, কংস, সোমেশ্বরী, ফেনী, হালদা, মাতামুহুরী, ধরলা, সাঙ্গুর পানি আরও বৃদ্ধি পেয়ে অতিবন্যা দেখা দিতে পারে।