শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৩ পূর্বাহ্ন
তরফ নিউজ ডেস্ক : বিশ্বের ২০ লাখের বেশি মুসলমান বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর নিজ নিজ আবাস এবং মসজিদুল হারাম থেকে ইহরাম বেঁধে মক্কা থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে মিনায় অবস্থান নিয়েছেন। সেখানে স্থাপিত তাঁবুতে অবস্থান নিয়ে ইবাদত মশগুলে রয়েছেন হাজীরা। এর মধ্য দিয়ে শুরু হলো পবিত্র হজ পালনের আনুষ্ঠানিকতা। হজের অংশ হিসেবে মিনা, আরাফাত ময়দান, মুজদালিফা ও মক্কায় পাঁচ দিন অবস্থান করবেন পবিত্র হজব্রত পালনে যাওয়া মুসল্লিরা। এর আগে সেলাইবিহীন দুই টুকরা সাদা কাপড় পরে হজের নিয়ত করে মিনার উদ্দেশে রওনা হন হজযাত্রীরা। মিনামুখী পুরো রাস্তায় ছিল হজযাত্রীদের স্রোত। বাসে, গাড়িতে এমনকি হেঁটেও মক্কা থেকে ৯ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেন অনেকে। যাত্রাপথে তাদের মুখে ছিল ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হাম্দা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুল্ক, লা শারিকা লাক’।
এদিকে মিনা এখন যেন তাঁবুর শহর। যেদিকে চোখ যায় শুধু সাদা রঙের তাঁবু আর তাঁবু। এসব তাঁবুতে প্রত্যেকের জন্য আলাদা জিনিসপত্র বরাদ্দ রয়েছে। নিজ নিজ তাঁবুতে পৌঁছে নামাজ আদায়সহ অন্যান্য ইবাদত বন্দেগিতে মগ্ন রয়েছেন মুসল্লিরা। মিনা নজিরবিহীন নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলেছে সৌদি নিরাপত্তারক্ষীরা।
হজ পালনকারীদের জন্য মিনায় অবস্থান করা সুন্নত। আজ শুক্রবার (৯ আগস্ট) সারাদিন মিনায় অবস্থান করে রাতে ও প্রত্যুষে আরাফাতের ময়দানের দিকে যাত্রা করবেন তারা। শনিবার (১০ আগস্ট) আরাফাতের ময়দানে অবস্থিত মসজিদে নামিরা থেকে হজের খুতবা দেওয়া হবে। হজের খুতবা শেষে জোহর ও আসরের নামাজ একত্রে পড়বেন হাজীরা। সেদিন সূর্যাস্তের পর আরাফাত থেকে মুজদালিফায় যাবেন। সেখানে গিয়ে তারা মাগরিব ও এশার নামাজ একত্রে আদায় করবেন। মুজদালিফায় খোলা আকাশের নিচে সারারাত অবস্থানের পর শয়তানের স্তম্ভে পাথর নিক্ষেপের জন্য প্রস্তুতি নেবেন হাজীরা। ওইদিন ফজরের নামাজ শেষে বড় জামারায় (প্রতীকী বড় শয়তান) পাথর নিক্ষেপ করতে মিনায় যাবেন তারা। পাথর নিক্ষেপ শেষে পশু কোরবানি দেবেন হাজীরা। মূলত ৯ জিলহজ আরাফাতের ময়দানে অবস্থানের দিনকেই হজের দিন বলা হয়।
ইসলামের বিধান মোতাবেক ১০ জিলহজ মিনায় প্রত্যাবর্তনের পর হাজীদের পর্যায়ক্রমে চারটি কাজ সম্পন্ন করতে হয়। শয়তানকে (জামারা) পাথর নিক্ষেপ, আল্লাহর উদ্দেশে পশু কোরবানি (অনেকেই মিনায় না পারলে মক্কায় ফিরে গিয়ে পশু কোরবানি দেন), মাথা ন্যাড়া করা এবং তাওয়াফে জিয়ারত। এরপর ১১ ও ১২ জিলহজ অবস্থান করে প্রতিদিন তিনটি শয়তানকে প্রতীকী পাথর নিক্ষেপ করবেন হাজীরা। সবশেষে কাবা শরিফকে বিদায়ী তাওয়াফের মধ্য দিয়ে শেষ হবে হজের আনুষ্ঠানিকতা।