বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৪ অপরাহ্ন
নিজস্ব সংবাদদাতা : পবিত্র ঈদুল আযহার ছুটিতে ঘুরে আসতে পারেন অপরুপ সৌন্দর্য্যরে টাঙ্গুয়া, বারেক টিলা ও শহীদ সিরাজী লেকে। দর্শনীয় এ তিনটি স্থান দেশের উত্তর-পূর্ব তাহিরপুর সীমান্ত এলাকায় অবস্থিত। অসংখ্য ছোট-বড় টিলা, নদী-নালা, খাল-বিল পরিবেষ্টিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে ভরপুর এক দর্শনীয় স্থান এটি। যান্ত্রিক কোলাহল থেকে মুক্ত নির্জন পরিবেশ আর ম্ক্তু বাতাশ পেতে বারেক টিলা, টাঙ্গুয়া হাওর আর সিরাজী লেকের বিকল্প নেই। এসব স্থানে রয়েছে সবুজের সমারোহ, দিগন্ত বিস্তৃত সাদা মেঘের খেলা, ছোট বড় পাথর ছড়ানো চারপাশ, চারদিকে পাখিদের কিচিরমিচির আওয়াজ। এই দৃশ্য দেখে মুগ্ধ না হয়ে উপায় নেই পর্যটকদের।
তাহিরপুর উপজেলার দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে ৩৬০ আওলিয়ার অন্যতম সফরসঙ্গী হযরত শাহ আরেফিন (র.) এর আস্তানা, অদ্বৈত মহাপ্রভুর আখড়াবাড়ী, আখড়া বাড়ীর সামনেই দাঁড়িয়ে আছে এশিয়া মহাদেশের সবছেয়ে বড় শিমুল বাগান, উঁচুনিচু বারেকটিলা, সীমান্ত নদী যাদুকাটা, বড়ছড়া-চারাগাঁও শুল্কষ্টেশন, টেকেরঘাট চুনাপাথর খনি প্রকল্প (বর্তমানে বন্ধ), খনি প্রকল্পের সঙ্গেই শহীদ বীর বিক্রম সিরাজী লেক, লালঘাট পাহাড়ী ঝর্না, বিশ^ ঐতিহ্য টাঙ্গুয়া হাওর উল্লেখযোগ্য।
সীমান্তঘেষা যাদুকাটা নদীর ছলছল স্বচ্ছ পানি দেখে মন ভরে যায় পর্যটকদের।বারেক টিলার উপর দাঁড়িয়ে যাদুকাটা নদীর অপরুপ সৌন্দর্য্য উপভোগ করা যায়। যাদুকাটা নদীর তীরে রয়েছে হযরত শাহজালাল (র.) এর সফরসঙ্গী ৩৬০ আউলিয়ার অন্যতম ওলী শাহ আরেফিন (র.) আস্তানা। শাহ আরেফিন (র.) আস্তানায় প্রতিদিনই দর্শানার্থীরা এসে ভিড় জমান। বারেক টিলার পাশ্চিমে রয়েছে বড়ছড়া-চারাগাঁও, বাগলী শুল্ক ষ্টেশন। শুল্ক ষ্টেশনের পরেই রয়েছে বীর বিক্রম শহীদ সিরাজী লেকের মধ্যে লাল, নীল পানির অপরুপ দৃশ্য। শহীদ সিরাজী লেক খুব গভীর। সাঁতার না জানলে লেকে পর্যটকরা না নামাই ভাল।
টেকেরঘাট খনি প্রকল্প দেখার পরেই লালঘাট উপজাতী পল্লিঘেষা পাহাড়ী ঝর্না দেখা যায়। শহীদ সিরাজী লেকের তীরে টেকেরঘাট ট্রলার ঘাট থেকে ইঞ্জিন চালিত নৌকার মধ্যে বসে পাটলাই নদী দিয়ে যাওয়ার পথে বিশ^ ঐতিহ্য টাঙ্গুয়ার হাওরের অপরুপ দৃশ্য উপভোগ করা যায়। নদীর দুই ধারে সারি সারি করছ গাছ আর মেঘালয় পাহাড়ের দৃশ্য পর্যটকদের আত্মহারা করে। টাঙ্গুয়ার হাওরে প্রবেশ করলেই চোখে পড়বে সুবিশাল সবুজের বেষ্টনী। সারি সারি হিজল, করচ গাছ, নলখাগড়া হাওরে বুকে যে মায়ের স্নেহ দিয়ে আগলে রেখেছে। টাঙ্গুয়ায় শীত মৌসুমে সুদূর সাইবেরিয়াসহ শীত প্রধান দেশ থেকে লেনজা হাঁস, পিং হাঁস, বালিহাঁস, সরালি, কাইম, গঙ্গা কবুতর, কালাকূড়া, পিয়ারিসহ নানা জাতের পাখির ঢল নামে। অতিথি পাখিদের কল-কাকলীতে মুখরিত হয়ে ওঠে টাঙ্গুয়া।
কিভাবে যাবেন : সিলেট থেকে কুমারগাঁও আর ঢাকা থেকে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে সরাসরি বাসে করে সুনামগঞ্জ আব্দুজ জহুর সেতুতে আসতে হবে। সেখান থেকে সিএনজি অটোরিকশা বা ভাড়া করা মোটর সাইকেলে যেতে হবে লাউড়ের গড় বিজিবি ক্যাম্পের সম্মুখে। লাউড়েরগড় বারেক টিলা থেকে আবারো ভাড়া করা মোটর সাইকেলে শিমুল বাগান, বড়ছড়া শুল্কষ্টেশন, শহীদ সিরাজী লেক দেখে চলে যেতে পারেন বালিয়াঘাট নতুন বাজার খেয়াঘাটে। বালিয়াঘাট নতুন বাজার থেকে নাস্তা সেরে অথবা খাওয়ার কিছু নিয়ে ইঞ্জিন চালিত নৌকা নিয়ে সারাদিনের জন্য ঘুরে আসুন বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী টাঙ্গুয়ার হাওর।