শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৪ অপরাহ্ন
তরফ নিউজ ডেস্ক : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪-তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধীতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগষ্ট) সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধু সাধী সৌধ কমপ্লেক্সে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সকাল ১০ টা ৬ মিনিটে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধের বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পন করে গভীর শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ সময় সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার প্রদান করেন। বেজে ওঠে বিউগলের করুন সুর। এ সময় অশ্রæ সিক্ত নয়নে কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন প্রধানমন্ত্রী। পরে প্রধানমন্ত্রী ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন। রাষ্ট্রীয় কর্মসূচী শেষে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জাতির পিতার সমাধিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পন করে শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ সময় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, জাতীয় সংসদের স্পিকার ড.শিরীন শারমিন চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, তথ্য মন্ত্রী হাছান মাহমুদ এমপি, স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেক, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক এমপি, কৃষি মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আমীর হোসেন আমু, মতিয়া চৌধুরী, তোফায়েল আহমেদ, মুহাম্মদ ফারুক খান, সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি, সাবেক মন্ত্রী শাহজাহান খান, সাবেক চীফ হুইপ আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ এমপি, শেখ হেলাল উদ্দীন এমপিসহ মন্ত্রী পরিষদের সদস্য ও সংসদ সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও চীফ হুইপ নূরে আলম চৌধুরী লিটন পৃথকভাবে বঙ্গবন্ধুর সমাধীতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
পরে ১০টা ২০ মিনিটে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধী সৌধ কমপ্লেক্স মসজিদ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত দোয়া মিলাদ মাহফিলে অংশগ্রহন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্য, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা, সামরিক-বেসামরিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এরআগে সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলা কমপ্লেক্স মাঠে নির্মিত হেলপ্যাডে অবতরণ করেন। পরে সকল কর্মসূচী শেষে বেলা ১১টা ২০ মিনিটে হেলিকাপ্টার যোগে ঢাকা উদ্দ্যেশে টুঙ্গিপাড়া ত্যাগ করেন।
বঙ্গবন্ধুর সমাধীতে বিভিন্ন সংগঠনের শ্রদ্ধা ও মানুষের ঢল :
রাষ্ট্রীয় কর্মসূচী শেষে ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চলে যাবার পর বঙ্গবন্ধুর সমাধী সৌধ সাধারন মানুষের জন্য খুলে দেয়া হয়। এরপর মহা মানবকে শ্রদ্ধা জানাতে ও স্মরণ করতে ঢল নামে বিভিন্ন শ্রেনী পেশা ও বিভিন্ন বয়সের মানুষের। গোপালগঞ্জ জেলা ও উপজেলা আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ গোপালগঞ্জের আশপাশের জেলা খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরা, নড়াইল, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, ফরিদপুর, বাগেরহাট, পিরোজপুর, বরিশাল, রাজবাড়ী, মংলা, চট্রগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকার হাজার হাজার বঙ্গবন্ধু প্রেমি ও আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ জাতির জনকের সমাধীতে মিলিত হন এবং শ্রদ্ধা জানান। এতে ফুলে ফুলে ভরে ওঠে বঙ্গবন্ধুর সমাধী স্থল। জাতির পিতাকে এক নজর দেখতে বড়দের সাথে আসে শিশুরাও। এসময় বিভিন্ন বয়সের সাধারন মানুষ প্রিয় নেতাকে স্মরণ করেন।
শোকের আবহ সৃষ্টি :
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪-তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন উপলক্ষে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোপালগঞ্জের সীমানা মুকসুদপুর থেকে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চর গোবরা এবং ঘোনাপাড়া থেকে টুঙ্গিপাড়া বঙ্গবন্ধু সমাধীস্থল পর্যন্ত অন্ততঃ পাঁচ শতাধিক কালো-কাপড়ে মোড়া তোরণ নির্মাণ করা হয়। ৭৫-এর ১৫ আগষ্ট নিহত বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে এসব তোরণ নির্মাণ করে জেলা-উপজেলা আওয়ামী লীগ, জেলা যুব লীগ, বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তি পর্যায়ে।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা :
প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে টুঙ্গিপাড়াসহ গোপালগঞ্জে তিনস্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করে পুলিশ প্রশাসন। পুলিশ, ডিবি পুলিশ, র্যাবের পাশাপাশি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা মাঠে কাজ করেন। প্রতিবারের ন্যায় এবারও প্রধানমন্ত্রী সফর নির্বিঘ্নে করতে যাবতীয় সব ধরণের প্রস্তুতি নেয় জেলা পুলিশ।