শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১০:১৫ পূর্বাহ্ন
রায়হান উদ্দিন সুমন,বানিয়াচং (হবিগঞ্জ) : বানিয়াচং উপজেলার সুনারু গ্রামে দারিদ্রতা কম-বেশি থাকলেও শিক্ষার প্রতি অনুরক্ত প্রায় সবাই। পেটে খাবার থাকুক বা না থাকুক, সন্তানকে নিয়মিত স্কুলে পাঠায় তারা। গ্রামে কোন উচ্চ বিদ্যালয় না থাকায় শিক্ষার্থীরা সাধারণত রত্না উচ্চ বিদ্যালয়েই ভর্তি হয়। গ্রাম পেরিয়ে হবিগঞ্জ-বানিয়াচংয়ের আঞ্চলিক মহাসড়ক ধরে হেঁটে যেতে হয় তাদেরকে। প্রায় ৩০ মিনিটের পথ। প্রায়ই জনশূন্য থাকে এ সড়কটি।
জানা যায়, প্রতিদিনের মতো গত বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় সুনারু গ্রাম থেকে ৬ষ্ঠ শ্রেণির ৩ ছাত্রী রতœা উচ্চ বিদ্যালয়ে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে চুঙ্গিরভাঙ্গা ব্রীজের কাছে পৌঁছা মাত্রই সুনসান সড়কে হবিগঞ্জ থেকে বানিয়াচংগামী একটি ফাঁকা সিএনজিচালিত অটোরিক্সা তাদের পথরোধ করে দাঁড়ায়। এসময় অটোরিক্সা চালক ছাত্রীদের একজনকে টেনে-ছিঁচড়ে গাড়িতে তুলে নেয়ার চেষ্টা করে। ঘটনাটি অন্য ছাত্রীরা দেখে চিৎকার শুরু করলেও আশপাশে শোনার কেউ ছিল না। একপর্যায়ে বানিয়াচং থেকে হবিগঞ্জগামী যাত্রীবাহী একটি সিএনজিচালিত অটোরিক্সা পৌঁছায় ওই স্থানে। তাদের চিৎকার শুনে অটোরিক্সাটি দাঁড়ানো মাত্রই প্রথম অটোরিক্সা চালক দ্রুত গাড়ি চালিয়ে বানিয়াচংয়ের দিকে পালিয়ে যায়।
পরে যাত্রীরা ভীত শিক্ষার্থীদের সান্তনা দিলে তারা ফিরে আসে বাড়িতে। অভিভাবকরা ছাত্রীদের বিদ্যালয়ে নিয়ে যান তাদেরকে। কিন্তু এ ঘটনায় সুনারু গ্রামের ছাত্রীদের মাঝে আতংক বিরাজ করছে। স্কুলে যেতে ভয় পাচ্ছে ওই বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা। ওই ছাত্রীরা জানায়, অটোরিক্সা চালককে তারা কেউ চিনে না, তার গাড়ির নাম্বারটিও তাদের কারো মনে নেই। তবে তারা ওই চালককে আবার দেখলে চিনতে পারবে বলে জানায়। ওই চালকের মুখে একটি জন্মচিহ্ন রয়েছে, যা তাদের মনে রয়েছে। এ ঘটনায় এলাকাবাসী তথা ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
বিষয়টি এলাকার জনপ্রতিনিধিসহ মুরুব্বিদেরকে জানানো হয়েছে। এলাকাবাসী এ ঘটনার সুষ্টু তদন্ত করে দোষী চালককে বের করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন।
তারা আরো জানান, হবিগঞ্জের জেলা পুলিশ ইতিমধ্যে নানা কর্মকান্ডের মাধ্যমে জনবান্ধব পুলিশ হিসেবে পরিচিতি রয়েছে পুরো জেলা জুড়ে। তারা ইচ্ছে করলে স্থানীয় প্রশাসনকে সাথে নিয়ে কাজ করলে অপরাধীদের খোঁজে বের করা কোনো ব্যাপারই না। তাই এলাকাবাসী আশা করছেন-পুলিশ প্রশাসন এসব অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে ছাত্র-ছাত্রীদের ভয়কে দুর করে নির্ভয়ে বিদ্যালয়ে যেতে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।