রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৪৪ অপরাহ্ন
তরফ নিউজ ডেস্ক : টাঙ্গাইলের প্রভাবশালী সিদ্দিকী পরিবারের চার ভাই আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটযুদ্ধে অংশ নেয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন। একই আসনে তিন ভাই ভোটযুদ্ধে নামায় ভোটারদের মধ্যে চলছে নানা হিসাব-নিকাশ। সিদ্দিকী পরিবারের বড় ছেলে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত নেতা সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। একই আসন থেকে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন তার অপর দুই ছোট ভাই কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি ও ঐক্যফ্রন্ট নেতা বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী ও আজাদ সিদ্দিকী।
টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসন থেকে নির্বাচন করতে চান মুরাদ সিদ্দিকী। এছাড়া টাঙ্গাইল-৮ আসন (বাসাইল-সখীপুর) থেকেও নির্বাচন করতে চান বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। সিদ্দিকী পরিবারের চার ভাইয়ের নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়টি টাঙ্গাইলে ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। একইসঙ্গে লতিফ সিদ্দিকী, কাদের সিদ্দিকী ও আজাদ সিদ্দিকী একই আসনে প্রার্থী হওয়ার বিষয় নিয়ে নানারকম গুঞ্জনের সৃষ্টি হচ্ছে। লতিফ সিদ্দিকী কালিহাতী থেকে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য এবং ১৯৭৩, ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনি একই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালে বিজয়ী হওয়ার পর মন্ত্রীত্ব পান তিনি। সর্বশেষ ২০১৪ সালের নির্বাচনেও তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ওই বছরই ২৯ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে তাবলিগ জামাত ও প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের কারণে মন্ত্রীসভা ও দলীয় পদ থেকে অপসারিত হন। সংসদ সদস্যের পদ থেকে পদত্যাগ করেন লতিফ সিদ্দিকী। এ আসনে ২০১৭ সালের ৩১ জানুয়ারি উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হাছান ইমাম খান সোহেল হাজারী এমপি নির্বাচিত হন। ওই উপ-নির্বাচনে কাদের সিদ্দিকী নির্বাচন করার জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিলেও ঋণ খেলাপি থাকার কারণে তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়।
মুক্তিযুদ্ধের কাদেরিয়া বাহিনীর প্রধান ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা। তিনি টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) এবং টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসন থেকে ঐক্যফ্রন্টের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। কাদের সিদ্দিকী ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে টাঙ্গাইল-৮ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৯৯ সালে আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী প্রয়াত শওকত মোমেন শাহজাহানের নিকট পরাজিত হন। ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে এই আসন থেকেই তিনি নিজ দলের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে মুরাদ সিদ্দিকী ২০০১ সালে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ থেকে এবং ২০০৮ ও ২০১৪ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে পরাজিত হন। তিনি আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণের উদ্দেশে কয়েক বছর যাবত নিয়মিত সভা-সমাবেশ করছেন। তিনি দীর্ঘদিন যাবত আওয়ামী লীগে যোগ দেয়ার চেষ্টা করেও সফল হতে পারেননি। এবারও তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন বলে জানিয়েছেন। তবে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবেও তিনি মনোনয়ন পেতে পারেন বলে আলোচনা রয়েছে। কাদের সিদ্দিকীর ছোট ভাই আজাদ সিদ্দিকী টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হওয়ার প্রত্যাশায় মনোনয়নপত্র কিনেছেন। তিনি এক সময় ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সরকারি সাদত কলেজের সাবেক ভিপি আজাদ সিদ্দিকী পরবর্তীতে কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগে যোগ দেন। এখন তিনি রাজনীতিতে খুব একটা সক্রিয় নন।