শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৪ পূর্বাহ্ন

আটকে গেল সাবিরার দণ্ড স্থগিতের আদেশ, আপিলের শুনানি রোববার

সাবিরা সুলতানা

দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী শনিবার হাই কোর্টের ওই আদেশ স্থগিত করে বিষয়টি শুনানির জন্যি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দিয়েছেন।

আদেশে তিনি বলেন, “যেহেতু এর আগে আমরা এ বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত দিয়েছি, এটা আমরা আগামীকাল পর্যন্ত স্থগিত করে ফুল কোর্টে পাঠিয়ে দিচ্ছি।”

রোববার সকালে প্রধান বিচারপতি নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হবে।

চেম্বার আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন, অ্যাটর্নি জেনালে মাহবুবে আলম, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মমতাজ উদ্দিন ফকির। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ও এবিএম বায়েজিদ।

আদেশের পরে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “আজকের আদেশের ফলে সাবিরা সুলতানার নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ আর থাকল না, যদি না আগামীকাল আপিল বিভাগ ভিন্নতর কোনো আদেশ দেন। আপিল বিভাগ আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত চেম্বার আদালতের আদেশ বহাল থাকবে।”

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “শুধু সাবিরা সুলতানাই নয়, এটা সংবিধানের বিধান। দুই বছরের বেশি দণ্ডিত কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।”

যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান সাবিরা সুলতানার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, আমিনুল ইসলাম, জয়নুল আবেদীন ও মাহববুউদ্দিন খোকন।

জ্ঞাত আয়-বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের মামলায় চলতি বছর ১২ জুলাই সাবিরা সুলতানাকে দুটি ধারায় তিন বছর করে মোট ৬ বছরের সাজা দেয় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত।

যশোর-২ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পাওয়া সাবিরা ওই সাজা ও দণ্ড স্থগিতের আবেদন করলে বিচারপতি মো. রইস উদ্দিনের একক বেঞ্চ বৃহস্পতিবার তা মঞ্জুর করে।

ফলে তার নির্বাচন করতে আর কোনো বাধা নেই বলে সে সময় তার আইনজীবী জানান।

অথচ দুদিন আগে হাই কোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ বলেছিল, দুই বছরের বেশি দণ্ড ও সাজা হলে আপিল করেও কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।

দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত বিএনপির পাঁচ নেতার দণ্ড ও সাজা স্থগিতের আবেদন খারিজ করে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাই কোর্ট বেঞ্চ গত মঙ্গলবার ওই পর্যবেক্ষণ দেয়।

ফলে আবেদনকারী পাঁচ বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমান, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ওয়াদুদ ভূঁইয়া, মো. মসিউর রহমান ও মো. আবদুল ওহাবের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পথ বন্ধ হয়ে গেছে বলে মত দিয়েছিলেন দুদকের আইনজীবী।

হাই কোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে গিয়েও সাড়া পাননি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ হোসেন। বিচারকি আদালতের দেওয়া দণ্ড ও সাজা (কনভিকশন অ্যান্ড সেন্টেন্স) স্থগিত চেয়ে তার আবেদনের শুনানি করে প্রধান বিচারপতি নেতৃত্বাধীন সাত বিচারকের আপিল বেঞ্চ বুধবার ‘নো অর্ডার’ দেয়।

এর ফলে হাই কোর্টের দেওয়া ওই আদেশই বহাল থাকছে এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ দুই বছরের বেশি সাজায় দণ্ডিত কারও আসন্ন নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ থাকছে না বলে জানিয়েছিলেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।

হাই কোর্টের দুই বেঞ্চ থেকে একই ধরনের মামলায় ভিন্ন আদেশ আসায় নতুন জটিলতা তৈরি হয়। নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে অন্য যারা মনোনয়নপত্র দিয়েছেন, তাদের ক্ষেত্রে কী ঘটবে- সেই প্রশ্ন ওঠে।

এরপর সাবিরার মামলায় হাই কোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে চেম্বার আদালতে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদক।

সূত্র : বিডিনিউজ২৪

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com