মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:০৭ পূর্বাহ্ন
বাহুবল (হবিগঞ্জ) সংবাদদাতা : বাহুবলের ভিটে বাড়ি বিহীন অসহায় এক ব্যক্তি শাহ আব্দুর রব। উপজেলার দৌলতপুর (প্রকাশিত বাহুবল) গ্রামে তার বসবাস। পেশায় তিনি একজন দর্জি হলেও স্থানীয় লোকজন তাকে লোকাল এমপি নামেই চিনে। বাহুবল খোলা বাজারে পুরাতন কাপড়সহ বস্তা সেলাইয়ের মাধ্যমে উপার্জিত অল্প অর্থ দিয়েই যার কষ্টে দিনাতিপাত কাটছে। সকাল থেকে রাত অবধি সেলাই কাজ করলেও দুই-একশতর বেশি টাকা উপার্জন হয়ে উঠে না তার। আর এতো অল্প উপার্জন দ্বারা নিয়মিত তিন বেলা খাবারও জুটছে না। এর মাঝে আবার সেলাই মেশিনটি নষ্ট হলে তো মেরামত করাও কঠিন হয়ে উঠে। গত কিছু দিন পূর্বে তার শেষ সম্বল সেলাই মেশিনটির পাদানী ভেঙে যাওয়ায় পায়ের বদলে হাত দিয়ে ঘুরিয়েই সেলাই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন আব্দুর রব। এতে তার পরিশ্রমটা দ্বিগুন হয়ে পড়লে দর্জির কাজ চালিয়ে যাওয়াটা অনিশ্চিত হয়ে পরে। এদিকে নিজের আত্মসম্মানের দিকে চেয়ে কারও কাছে সাহায্যও চাইতে পারছিলেন না লোকাল এমপি খ্যাত শাহ আব্দুর রব।
এক সময় তার অসহায়ত্বের খবর ঐ গ্রামের শাহীন, যুবরাজ, নুরুল, রাসেল ও রাহাতসহ কিছু সংখ্যক উদ্যমি যুবকদের কাছে পৌছলে তারা নিজ উদ্যোগে চাঁদা তুলে একটি সেলাই মেশিনের স্ট্রেন ক্রয় করেন। পরে উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাকিল চৌধুরীকে সঙ্গে নিয়ে অসহায় টেইলর আব্দুর রবের হাতে স্টেনটি তুলে দেয়। পরে শাকিল চৌধুরী তার ফেসবুক আইডিতে আব্দুর রবের অসহায়ত্ব তুলে ধরে একটি পোস্ট দিলে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জসীম উদ্দিনের নজরে আসে।
খবর পেয়ে সোমবার (০৩ ডিসেম্বর) বিকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জসীম উদ্দিন পুওর কেয়ার কুইক রেসপন্স টিমকে সঙ্গে নিয়ে ছুটে যান অসহায় টেইলর আব্দুল রব লোকাল এমপির বাড়িতে। এসময় তাৎক্ষণিক উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে পুওর কেয়ার কুইক রেসপন্স টিম অসহায় আব্দুর রবের হাতে একটি সেলাই মেশিন তুলে দেয়। তাছাড়া খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই ভিটে বাড়িহীন ঐ ব্যক্তিকে সরকারি জায়গায় ঘর তৈরী করে দেয়ারও আশ্বাস দেন ইউএনও জসীম উদ্দিন।
দৌলতপুর গ্রামের বাসিন্দা মোজাম্মিল মিয়া জানান, বঙ্গবন্দু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ইরাক থেকে আসা কিছু সংখ্যক লোককে বি-বাড়িয়ার উলুমরিচাকান্দি নামক গ্রামে বাড়ি তৈরী করে বসবাসের সুযোগ করে দেন। পরবর্তীতে নদী ভাঙনে ঐ গ্রামটি বিলীন হয়ে গেলে গ্রামে বসবাসরত লোকজন হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থানে এসে বসবাস করতে শুরু করেন। এদের মধ্যে ইরাকি বংশোদ্ভূত শাহ আব্দুর রব বাহুবল (দৌলতপুর) গ্রামে এসে বসবাস শুরু করেন। তিনি দীর্ঘ ৩০ বছরেরও বেশি দিন যাবৎ ঐ গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে অস্থায়ী ঘর তৈরী করে বসবাস করে আসছেন।