সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২৫ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক, হবিগঞ্জ : অসুস্থ ভাগিনাকে চিকিৎসা করাতে গিয়ে চিকিৎসাতো পেলেনই না, উল্টো মামলার আসামি হতে যাচ্ছেন এক সাংবাদিক।
সামান্য কথাকাটির জেরে থানা পুলিশ করে সাংবাদিককে হয়রানি ও হেনস্থার চেষ্টা করছেন রাশমিনা আক্তার নামের এক নারী ডাক্তার। ঘটনা ঘটার একদিন পর তিনি ওই সাংবাদিকের নামে থামে থানায় অভিযোগও দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ঠ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাও বলছেন ২০ ডিসেম্বর রাত ১২টার পর মামলা রুজু করে ব্যবস্থা নিবেন। এ নিয়ে চুনারুঘাটে সাংবাদিকসহ সুশীল সমাজের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
প্রশ্ন উঠেছে চিকিৎসক এর দায়িত্বহীন কাজ নিয়ে। শুধু চিকিৎসকই নয় থানা পুলিশের ভূমিকাও এখানে প্রশ্নবিদ্ধ। কারণ বিশদ আকারে বিষয়টি তদন্ত না করেই মামলা রুজু করা হচ্ছে।
জানা যায়, প্রায় চার লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবার ভরসাস্থল হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এখানে সকল অনিয়মই নিয়মে পরিণত। এটা পুরাতন সমস্যা। সমস্যা নামের অজুহাত দেখিয়ে চলছে সরকারি এই হাসপাতাল। এতে চরম দুর্ভোগের শিকার সাধারণ জনগণ।
এখানে প্রতিদিন বেলা গড়িয়ে দুপুর হতে চললেও দেখা মেলে না চিকিৎসকের। একই অবস্থা জরুরি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদেরও।
স্বাস্থ্য বিভাগের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে কর্মরত চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্টদের খামখেয়ালিপনায় ব্যাহত হচ্ছে উপজেলাবাসী স্বাস্থ্যসেবা। কর্মকর্তা-কর্মচারী সংকট বিদ্যমান থাকাবস্থায় সংশ্লিষ্টদের অনিয়ম গিলে খাচ্ছে পুরো উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে।
জানা গেছে, চুনানারুঘাটে রোগীর চিকিৎসায় অবহেলার প্রতিবাদ করায় সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলার করেছেন এক নারী চিকিৎসক।
সুত্র জানায় গত (১৭ডিসেম্বর) মঙ্গলবার সন্ধ্যা অনুমান ৭টায় চুনারুঘাট সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ওয়াহেদ আলী তার ভাগিনা আশরাফুল ইসলাম তানিম (২২) কে চুনারুঘাট হাসপাতালের জরুরী বিভাগে অজ্ঞান অবস্থায় চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান।
এসময় দায়িত্বরত ডাক্তার ছিলেন রাশমিনা আক্তার পলি। কিন্তু তিনি হাসপাতালে ছিলেন না। একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগী দেখায় ব্যস্ত ছিলেন। তখন রোগীর অাত্নীয় স্বজনরা ডাক্তার রাশমিনাকে বারবার ফোন দিলে প্রায় এক ঘন্টা পর উত্তেজিত হয়ে জরুরী বিভাগে প্রবেশ করেন তিনি।
রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন দেখতে পেয়ে কান্নাকাটি শুরু করেন স্বজনরা। ফোন দেয়াতে ডাক্তার রাশমিনা জরুরী বিভাগে এসে রোগীর চিকিৎসা না করে রোগীর আত্নীয় স্বজনদের সাথে অসৌজন্য আচরণ করেন। তখন রোগীর মামা চুনারুঘাট সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মোঃ ওয়াহেদ আলী ডাক্তার রাশমিনাকে রোগী দেখার জন্য অনুরোধ করেন।
কিন্তু তিনি রোগী না দেখে ফোন কেন দিলেন রোগীর স্বজনদের সাথে কথাকাটকাটি শুরু করেন এবং রোগী দেখতে পারবেন না বলে জানান।
খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক উপজেলা সাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোজাম্মেল হোসেন জরুরী বিভাগে এসে পরিবেশ শান্ত করে রোগীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
পরে ডাঃ মোজাম্মেল হোসেন সাংবাদিক ওয়াহেদ আলী ও ডাঃ রাশমিনাকে ডেকে নিয়ে তার অফিস কক্ষে নিয়ে গিয়ে বিষয়টি মিমাংসা করে দেন। তার একদিন পর ডাক্তার রাশমিনা রহস্যজনক কারনে অদৃশ্য শক্তির ইন্ধনে চুনারুঘাট থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
উল্লেখ্য যে চুনারুঘাট হাসপাতালটি সিসি ক্যমেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।
এবিষয়ে সাংবাদিক ওয়াহেদ আলী বলেন, আমি যদি ডাক্তার রাশমিনাকে লাঞ্চিত করে থাকি তাহলে ঘটনার সময়ের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখলেই আসল ঘটনা বেড়িয়ে আসবে।
জানা যায়, ডাক্তার রাশমিনার স্বামীর বাড়ি চুনারুঘাট উপজেলায় হওয়াতে তিনি এখানে যোগদানের পর থেকেই প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। তিনি হাসপাতালের চেম্বারে রোগী না দেখে পৌর শহরের বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগী দেখছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এবিষয়ে ওসি নাজমুল হক বলেন, অভিযোগ পেয়েছি, নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।