মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩৯ অপরাহ্ন
তরফ নিউজ ডেস্ক : ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) নির্বাচনে মেয়র পদে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান মেয়র আতিকুল ইসলাম। আর ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনে এ পদে দলটির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন সংসদ সদস্য শেখ ফজলে নূর তাপস। ডিএসসিসিতে তাপস মনোনয়ন পাওয়ায় মেয়র পদের লড়াই থেকে ছিটকে পড়েছেন বর্তমান মেয়র সাঈদ খোকন।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে নৌকার প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
জানা গেছে, ঢাকা উত্তরে এবারও মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী ছিলেন আতিকুল ইসলাম। জনপ্রিয় মেয়র আনিসুল হকের অকাল প্রয়াণে উপ-নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হন তিনি।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা ফজলুল হক মনির ছেলে ও বর্তমান চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের ছোট ভাই। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের এই ভাতিজা যুবলীগের কাউন্সিলের আগে দলটির শীর্ষ নেতৃত্বে আসার আলোচনায় ছিলেন। শেষ পর্যন্ত তাপসের বড় ভাইকে যুবলীগ চেয়ারম্যান করা হয়।
সাঈদ খোকনের মনোনয়ন না পাওয়ার বিষয়ে দলের নেতারা বলছেন, চলতি বছর ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকবিলায় দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে, যা মেয়রের ইমেজের পাশাপাশি সরকারের ভাবমূর্তিতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা নিয়ে অনেকেই মেয়রের ব্যর্থতার কথা বলেছেন। ডেঙ্গু নিয়ে নানা বিতর্কিত মন্তব্য করে দেশজুড়েও সমালোচিত হন তিনি। এরও আগে ঢাকার সড়কগুলোর পাশে ডাস্টবিন বসানোর প্রজেক্টেও ব্যর্থ হন তিনি, এ নিয়েও সমালোচিত হয়েছেন তিনি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে যারা বিতর্কিত তাদের মনোনয়ন দেয়া হবে না। বিতর্কের ঊর্ধ্বে যারা, যাদের অপকর্মের রেকর্ড নেই- এ ধরনের প্রার্থীদের আমরা মনোনয়ন দেব।
‘বিতর্কিত’ কর্মকাণ্ডের কারণে এবার সাঈদ খোকনকে মনোনয়ন দেয়া হয়নি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। যদিও তিনি আরও একবার সুযোগ চেয়েছিলেন। তাপস ছাড়াও ডিএসসিসি মেয়র পদে নৌকার মনোনয়ন সংগ্রহ করেন ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিম ও বঙ্গবন্ধু একাডেমির সভাপতি মো. নাজমুল হক।
উল্লেখ্য, রাজধানীবাসীর সেবার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০১১ সালের ২৯ নভেম্বর ঢাকা সিটি কর্পোরেশনকে উত্তর-দক্ষিণ দুই ভাগে ভাগ করা হয়। এর প্রায় চার বছর পর দুই সিটিতে নির্বাচন হয়। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত দুই মেয়রপ্রার্থী আনিসুল হক ও মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বিজয়ী হয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। লন্ডনের ওয়েলিংটন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর মারা যান ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র আনিসুল হক।
চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা উত্তর সিটির উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে বিজয়ী হন ব্যবসায়ী নেতা মো. আতিকুল ইসলাম। ৭ মার্চ শপথ নেন তিনি। তবে দুই সিটি কর্পোরেশনের মেয়াদ একসঙ্গে আগামী বছরের মে মাসেই শেষ হবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী বঙ্গবন্ধুর ভাগনে প্রয়াত শেখ ফজলুল হক মনির ছোট ছেলে ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। তিনি বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
২০০৮ সালের নবম, ২০১৪ সালের দশম ও ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী হিসেবে ঢাকা-১০ আসন থেকে নির্বাচিত হন তাপস।
দুই সিটি নির্বাচনে মনোনয়ন দাখিলের শেষ সময় ৩১ ডিসেম্বর, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ২ জানুয়ারি। প্রার্থিতা প্রত্যাহার ৯ জানুয়ারি। প্রতীক বরাদ্দ ১০ জানুয়ারি। ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ৩০ জানুয়ারি।