শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৪৮ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে সারাদেশ যেখানে উৎসবে মেতেছে সেখানে হবিগঞ্জ-১ (বাহুবল-নবীগঞ্জ) আসনে এর ছিটেফোটাও নেই। এ আসনে নির্বাচনী আলোচনায় সবাই নিরব ভুমিকা পালন করছেন। জোট-মহাজোটের নেতাকর্মী কিংবা সাধারণ ভোটাররা কেউই মুখ খোলছেন না। এর কারণও স্পষ্ট। প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ সময় চলে আসলেও এ আসনে জোট-মহাজোটের জটিল সমীকরণে আটকা পরে কাউকেই এখনও চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি। বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া তনয় ড. রেজা কিবরিয়া ঐক্যফ্রন্ট থেকে প্রার্থী হওয়ার কারণেই উভয় জোটের চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণায় বিলম্ব হচ্ছে।
এদিকে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে ড. রেজা কিবরিয়ার প্রার্থীতা ঋণ খেলাপী হিসেবে বাতিল হওয়া এবং পরবর্তীতে ইসিতে প্রার্থীতা ফিরে পাওয়ার লক্ষ্যে করা আপিলের রায় না পাওয়া পর্যন্ত কৌশলগত কারণেই হয়তো জোট-মহাজোটের চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা হচ্ছে না বলে অনেকের ধারণা।
বিগত ২৫ নভেম্বর বর্তমান ক্ষমতাশীন দল আওয়ামীলীগ জোটের জন্য ৭০টি রেখে অবশিষ্ট ২৩০ আসনে তাদের দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত করে চিঠি দেয়। তখন ছেড়ে দেয়া ৭০টির মধ্যে হবিগঞ্জ-১ আসনটিতে দলীয় কাউকে মনোনয়নের চিঠি না দিয়ে শূন্য রাখা হয়। এতে আসনটি মহাজোটের শরীক দল জাপাকে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে বলে সবাই ধরে নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আতিকুর রহমান আতিককে হবিগঞ্জ-১ আসনের দলীয় একক প্রার্থী ঘোষণা করে জাপার তৎকালীন মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদারের স্বাক্ষরে মনোনয়নপত্রের চিঠি প্রেরণ করে। কিন্তু পরবর্তীতে হঠাৎ করে আওয়ামীলীগ নেতা গাজী মোহাম্মদ শাহনওয়াজ ওরফে মিলাদ গাজীকে একই আসনে দলীয় মনোনয়নের চিঠি দিলে মহাজোটের একক প্রার্থী নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়। কে হচ্ছেন মহাজোটের একক প্রার্থী তা নিয়ে বিশ্লেষকদের মাঝে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়। এ অবস্থায় আওয়ামীলীগ ও জাপা উভয় শিবিরের নেতাকর্মীরা তাদের নিজ নিজ দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থীকে মহাজোটের চূড়ান্ত প্রার্থী দাবি করে আসছেন।
অন্যদিকে নির্বাচনের শুরুতে জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি সাবেক সাংসদ শেখ সুজাত মিয়াই এ আসনে ধানের শীষ প্রতীকের চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে ধরে নিলেও দিন ঘনিয়ে শেষের দিকে তা ঘোলাটে হয়ে যায়। সদ্য গণফোরামে যোগদান করা সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া তনয় ড. রেজা কিবরিয়াকে ঐক্যফ্রন্ট থেকে মনোনয়ন দিলে শেখ সুজাতের মনোনয়নটি নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। পরবর্তীতে কৌশলগত কারণে ঐক্যফ্রন্ট থেকে গণফোরাম নেতা ড. রেজা কিবরিয়া ও বিএনপি থেকে শেখ সুজাত মিয়াকে ধানের শীষ প্রতীকে যৌথভাবে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। এতে নির্বাচনের প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ঘনিয়ে আসলেও ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে ধানের শীষ প্রতীকের একক প্রার্থী কে তা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
এ আসনে বৃহৎ দুই জোট থেকে ৪ জন প্রার্থী নিজ নিজ দলের মনোনয়ন পেয়ে প্রার্থীতা দাখিল করেছেন। আওয়ামী লীগ থেকে নৌকা প্রতীকে গাজী মোহাম্মদ শাহনওয়াজ ওরফে মিলাদ গাজী, বিএনপি থেকে ধানের শীষ প্রতীকে সাবেক এমপি শেখ সুজাত মিয়া, একই প্রতীকে ঐক্যফ্রন্ট থেকে ডা. রেজা কিবরিয়া ও জাতীয় পার্টি থেকে লাঙ্গল প্রতীকে আতিকুর রহমান আতিক প্রার্থীতা দাখিল করেন।
তবে জোট-মহাজোটের চূড়ান্ত প্রার্থী জানতে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ অর্থাৎ আগামি ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।