বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৫০ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : বছর ঘুরে আসছে হিন্দুদের গৌরবের মাস ‘ফেব্রুয়ারি’। ভক্ত ও দর্শনার্থীদের উৎসবমুখর মিলনমেলার অপেক্ষায় শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর মাতৃভূমি ‘জয়পুর’। বৈষ্ণবকেন্দ্রীক বৃহত্তম এ উৎসবের ঠিকানা হবিগঞ্জের বাহুবলের জয়পুরে অবস্থিত শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর মামারবাড়ি ঐতিহাসিক শ্রীশ্রী শচীঅঙ্গন ধাম। এবার ৩৯তম এ উৎসব চলবে ৫দিন ব্যাপী।
উৎসবকে কেন্দ্র করে শ্রীশ্রী শচীঅঙ্গন ধামের আঙিনাকে নান্দনিকভাবে সাজাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন আয়োজকরা। ভক্ত ও দর্শনার্থীদের আকর্ষণ বাড়াতে নির্মান করা হচ্ছে চোখ-ধাঁধানো ফটক, প্যান্ডেল, কুঞ্জ।
আগামী বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টায় প্রাণের এ উৎসবের উদ্বোধন। এরআগে এদিন সকাল ১০টা থেকে শুরু হবে পাঠক মহাসম্মেলন ও রাতে দধিমঙ্গল ও ধামাইল উৎসব। এছাড়াও অনুষ্ঠানসূচির মধ্যে রয়েছে, ৭ ফেব্রুয়ারি সকালে গীতাযজ্ঞ, বিকালে পদাবলী কীর্ত্তন। ৮ ও ৯ ফেব্রুয়ারি একনাম কীর্ত্তন ও মহাপ্রসাদ বিতরণ। ১০ ফেব্রুয়ারি সকালে পদাবলী কীর্ত্তন ও রাতে বসন্ত উৎসব। ৯ ফেব্রুয়ারি ভক্তরা ২০১ টাকা দিয়ে মহাপ্রভুকে ভোগ দিতে পারবেন।
রোববার (০২ ফেব্রুয়ারি) উৎসব অঙ্গন ঘুরে দেখা যায়, পুরোদমে চলছে শেষ মুহূর্ত্তের প্রস্তুতি। মন্দিরের পুরো মাঠজুড়েই লোহা আর হাতুড়ির শব্দ। মন্দিরের ভেতরে অবস্থিত নীলাম্বর সরোবরের কাছে গেলে চোখে পড়ে, বাঁশ, কাঠ, ককসিট আর বাহারি রঙের কৌটা। পুরোদমে চলছে শ্রীশ্রী শচীঅঙ্গন ধামের উৎসবের, ফটক, কুঞ্জ, প্যান্ডেল, মঞ্চ ও প্যাভিলিয়ন তৈরির কাজ।
এবার উৎসবের ব্যাপ্তি আরো বেড়েছে। নকশা, মন্ডপ এবং ফটকের বিন্যাসেও এসেছে নতুনত্ব। সুবিশাল পরিসর নিয়ে উৎসব হবে জয়পুরের শ্রীশ্রী শচীঅঙ্গনে। এবার উৎসবের থিম থেকে শুরু করে সব কিছু সাজানো হবে পৌরানিক সংস্কৃতির সঙ্গে সিলেটি সংস্কৃতিকে ঘিরে। উৎসব অঙ্গনে সম্মান জানাতে নির্মাণ করা হচ্ছে দশ অবতারের ছবি। থিম ঘিরে উৎসবের বিভিন্ন অংশে থাকবে নান্দনিক স্থাপনা।
সরেজমিনে গিয়ে ঘুরে দেখা যায়, উৎসবের জন্য উদ্যানের অংশ আরো বাড়ানো হয়েছে। আগে নীলাম্বর ভবন পর্যন্ত সীমানা থাকলেও এবার আরো দক্ষিণ দিক পর্যন্ত সীমানা টানা হয়েছে। অর্থাৎ নীলাম্বর সরোবরের সামনের অংশটিও এবার উৎসবের অংশ। উৎসবের ডিজাইনে আনা হয়েছে অভিনবত্ব। রাখা হয়েছে প্রচুর খালি জায়গা।
এ ব্যাপারে উৎসব উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ ভট্টাচার্য্য বলেন, আমরা এবার শুরু থেকেই পরিকল্পনামাফিক কাজ করে যাচ্ছি। শুধু তা-ই নয়, সব কাজ আগে আগে শুরু করেছি, যাতে আগে আগে শেষ হয়। সেই অনুযায়ী আমরা এখন পর্যন্ত কাজের গতি দেখতে পাচ্ছি। আশা করছি, এ বছর অনেক গোছানো ও পরিছন্ন একটি উৎসব আমরা উপহার দিতে পারব।
এবারও উৎসবের নকশা ও সাজসজ্জার দায়িত্বে আছেন চিত্রশিল্পী প্লাবন চাষা বিন্দু। তিনি বলেন, উৎসবে দেখার মত এবার কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় থাকবে। এর মধ্যে পৌরানিক সংস্কৃতির সঙ্গে সিলেটি সংস্কৃতির মিশেল অন্যতম। উৎসবের নান্দনিকতা বাড়াতে নেওয়া হয়েছে বেশ কিছু উদ্যোগ। ফটক, প্যান্ডেল, মন্ডপ ও কুঞ্জের বিন্যাসটা যাতে চমৎকার, স্বাচ্ছন্দ্য ও নান্দনিক হয় সেদিকে নজর দেওয়া হয়েছে।