বৃহস্পতিবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৩৪ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়নে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সমর্থন চেয়েছেন ড. ইউনূস ধান ক্ষেত থেকে অটোরিকশা চালকের মরদেহ উদ্ধার জমি নিয়ে বিরোধ; দুই গ্রুপের সংঘর্ষে এক যুবক নিহত দোকান বাকীর টাকা আদায়কে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ : বৃদ্ধ নিহত হবিগঞ্জে হত্যা মামলা, আ.লীগ সভাপতিসহ ২শ জন আসামি গ্র্যান্ড সুলতান রিসোর্টে শামীম ওসমান লুকিয়ে থাকার গুঞ্জন, তাল্লাশি শেষে যা বলছে পুলিশ নগদ দুই লাখ টাকার বেশি তোলা যাবে না এ সপ্তাহে সার্বিক নিরাপত্তার জন্য সারাদেশের সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগের নম্বর গণভবনের মাছ-হাঁসও নিয়ে গেল জনতা, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর গণআন্দোলনে শেখ হাসিনার পতন, ছাড়লেন দেশ

বোন হারানোর শোক নিয়ে আকবরের বিশ্বজয়

তরফ স্পোর্টস ডেস্ক : একমাত্র বড় বোন হারানোর শোককে শক্তিতে পরিণত করেই ১৯ দিনের মাথায় আকবর দেশকে দিলেন বিশ্বজয়ের নেতৃত্ব। গত ২২ জানুয়ারি সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মারা যান তার বোন।

ভাই ক্রিকেট ব্যাট নিয়ে মাঠে গেলেই জায়নামাজে বসে থাকতেন বড় বোন। দুই হাত তুলে দোয়া করতেন ছোট ভাইয়ের জন্য। ভাই যেন ভালো খেলে সুস্থ শরীর আর জয় নিয়ে ফিরতে পারে ঘরে।

বোনের সেই আদরের ছোট ভাই আকবর আলী গতকাল বিশ্ব জয় করেছেন। কিন্তু তা তো দেখতে পারলেন না সেই বোন খাদিজা খাতুন।

আকবরের ‘বাদশা’ হওয়ার শুরুর পথেও সঙ্গে ছিলেন বোন খাদিজা। ১৮ জানুয়ারি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচটাও দেখেছেন তিনি।

কিন্তু গতকাল রাতে তার ছোট ভাইয়ের হাতে যখন বিশ্বসেরার ট্রফিটা উঠল, বোন খাদিজা তখন দূরলোকের বাসিন্দা। যমজ সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে তিনি মারা যান।

খবরটা প্রথমে তার কাছ থেকে চেপেই রাখা হয়েছিল। কিন্তু যেভাবেই হোক আকবর তা জেনে যান। ২৪ জানুয়ারি পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হওয়ার পরপরই আকবর ফোন দিয়েছিলেন তার মেজ ভাইকে। বলেছিলেন, ‘আপার মৃত্যুসংবাদটা কেন আমার কাছে চেপে গেলেন আপনারা?’

ওই মুহূর্তের কথা জানানোর সময় হুহু করে কাঁদলেন আকবরের বাবা মোহাম্মদ মোস্তফা।

এরপর কোয়ার্টার ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে শেষ চার নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। সেমিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জিতে স্বপ্নের ফাইনাল। পুরো সময়টাতেই বোনের মৃত্যুর শোক বুকে নিয়েই খেলেছেন আকবর। তার বোনের মৃত্যুসংবাদ ছুঁয়ে গিয়েছিল গোটা দলকেই।

ফাইনালে বুক চিতিয়ে লড়ে দেশকে জিতিয়েছেন আকবর। রংপুরে আকবরের বাড়ির মানুষের অনুভূতি আজ মিশ্র। বাড়ির ছেলের এমন অনন্য কীর্তির মধ্যেও সবার মনে একটাই চিন্তা—আকবর ফিরলে কী জবাব দেবেন তাঁরা।

তার বাবা বললেন, পাকিস্তান ম্যাচের এক দিন আগে আমাদের একমাত্র মেয়ে মারা যায়। চার ভাইয়ের একটাই বোন। আকবর বাড়ির সবার ছোট হওয়াতে ও ছিল ওর বোনের কলিজার টুকরা। মৃত্যুসংবাদটা ওকে দিতে চাইনি। কিন্তু কীভাবে যেন পেয়ে যায়। আগে কিছু বলেনি । পাকিস্তান ম্যাচের পর ওর মেজ ভাইয়ের কাছে খবর না জানানোর কৈফিয়ত চাইলে আমরাও কিছুটা ঘাবড়ে যাই। আমি তো ওর সঙ্গে কথা বলার সাহসই পাইনি। কী জবাব দেব?

কাল শোককেই শক্তিতে পরিণত করেছিলেন আকবর। শোক ভুলেই অপার মানসিক শক্তিতে বলীয়ান হয়েছিলেন। হিমশীতল মনঃসংযোগে বিপদের মধ্যেও ছিলেন অবিচল। বীরের মতো দিয়েছেন নেতৃত্ব। পুরো সময়ে কোনো এক দূরলোক থেকে আকবরকে নিশ্চয়ই সঙ্গ দিয়ে গেছেন তার বোন।
সূত্র: প্রথম আলো

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com