শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৪ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :

ভিজিডির চাল নিয়ে চেয়ারম্যান মুসা জনতার হাতে ধরাশায়ী

নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি : নবীগঞ্জ উপজেলার কুর্শি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলী আহমেদ মুসা তড়িগড়ি করে সরকারি আত্মসাকৃত ভিজিডির চাল বোঝাই ট্রাক নিয়ে ইউনিয়ন অফিসে ঢোকার সময় আটক করেছে স্থানীয় জনতা। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার ভোরে। খবর পেয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত কুমার পাল, নবীগঞ্জ থানার ওসি মোঃ আজিজুর রহমান একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন।

এ সময় কয়েক শতাধিক লোকজন চেয়ারম্যান মুসার বিরুদ্বে নানা শ্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে রাস্তায় বসে পড়ে। প্রায় এক ঘন্টাব্যাপী বিক্ষোভ চলে। এ সময় উত্তেজিত জনতাকে সামাল দিতে ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত কুমার পাল জনতাকে অনিয়মের বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আশ্বস্থ করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ হয়। এ ঘটনায় সুষ্ট তদন্ত ও ব্যবস্থাপনার জন্য হবিগঞ্জ জেলার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালকনুরুল ইসলাম ইউপি অফিস পরিদর্শন করেছেন। শেষে ওই চাল সুবিধাভোগীদের মধ্যে বিতরন করাহয়। এ নিয়ে নবীগঞ্জে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

সুত্রে জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার কুর্শি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলী আহমেদ মুসার বিরুদ্ধে গত ১৯ এপ্রিল ভিজিডির চাল ও মহিলাদের সঞ্চয়ের টাকা আত্মসাতের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সমরগাও গ্রামের শরিয়ত উল্লাহ নামে এক ব্যক্তি। এর পর তড়িগড়ি করে চেয়ারম্যান মুসা পরদিন ২০ এপ্রিল খাদ্য গুদাম থেকে এপ্রিল মাসের চাল উত্তোলন করে মার্চ মাসের চাল হিসেবে বিতরণ করেন। খাদ্য গুদাম সুত্র জানায় প্রতিমাসে মাসে চেয়ারম্যান চাল উত্তোলন করে নিয়ে গেছেন। এখন প্রশ্ন আসে এপ্রিল মাসের চাল গেল কোথায়। এই উদ্ধুদ্ব পরিস্থিতিতে সুচতুর চেয়ারম্যান আলী আহমেদ মুসা বুধবার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে ট্রাক ভর্তি চাল নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে প্রবেশ কালে জনতার কাছে আটক হন।

খোজ নিয়ে জানা যায়, বিগত মার্চ মাসের ভিজিডির চাল সুবিধা ভোগীরা পাননি। এ ঘটনানাটি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে এবং লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসনের নজরে আসে। এ ঘটনাটি স্থানীয় ও জাতীয়পত্র/পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। ফলে সুচতুর চেয়ারম্যান আলী আহমেদ মুসা এপ্রিল মাসের ভিজিডির চাল উত্তোলন করে মার্চ মাসের আত্মসাতকৃত ভিজিডির চালের পরিবর্তে ওই চাল (এপ্রিলমাসের) বিতরন করেন। এতে আরো আলোচনার ঝড় উঠে। এই অবস্থায় বুধবার বিভিন্ন স্থান থেকে চাল ক্রয় করে আত্মসাত কৃত চাল বিতরণ করে দায় মুক্তির চেষ্টা করেন। কিন্তু জনতার কাছে শেষ রক্ষাওহলোনা চেয়ারম্যান মুসার।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান আলী আহমেদ মুসার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অতিতে ও আমরা ২/৩ মাসের চাউল এক সাথে বিতরণ করেছি। এবার দেশের সার্বিক পরিস্থিতির কারনে চাল বিতরণ করতে দেরি হয়েছে। আমি দীর্ঘ দিন নবীগঞ্জ উপজেলা যুবলীগ সভাপতি ছিলাম ও উল্লেখিত ইউনিয়নের ৩ বারের নিবার্চিত চেয়ারম্যান আজ যে গুজব চড়ানো হয়েছে আমার বিরুদ্ধে তা আওয়ামীলীগের কিছু নামদারি বিএনপি জামাতকর্মীরা আমার বিরুদ্ধে অনিয়মের গুজব সৃষ্টি করে আমারমান সম্মান নষ্ট করার চেষ্টা করছে।

এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা অলক বৈষ্ণম জানান, গত মার্চ মাসের চাউল ইউপি চেয়ারম্যান মার্চ মাসেই উত্তোলন করেছেন এবং এপ্রিল মাসের চাউল তিনি গত ২০ তারিখ উত্তোলন করেছেন।

এ ব্যাপারে নবীগঞ্জউপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত কুমার পাল বলেন, ভিজিডির চাল নিয়ে যে অনিয়মের অভিযোগ উঠে আসছে আমরা এ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। তবে তিনি এখানে ভিজিডির চাল বিতরণ করুক বা না করুক সে একটি অনিয়ম করেছে আমরা দেখেছি এই অনিয়মের বিরুদ্ধে সরকারের বরাবর লিখব। সরকার তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com