শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩৭ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক, বাহুবল (হবিগঞ্জ) : বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস চলমান সংকটে দেশের মানুষ যখন কর্মহীন হয়ে পড়েছে। তখন বর্তমান সরকার হতদরিদ্র মানুষের নিকট ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় বাহুবলের মিরপুর ইউনিয়নে বিতরণ করা হয়েছে ত্রাণ।
কিন্তু করোনায় ওই ত্রাণ বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম পাওয়া গেছে। ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে আওয়ামীলীগ নেতাদের মাধ্যমে। এলাকাবাসীর চাপের মুখে মিরপুর ইউনিয়ন এর চেয়ারম্যান সাইফুদ্দিন লিয়াকত ত্রাণের তালিকা শনিবার (২৫ এপ্রিল) ওয়েব সাইটে প্রকাশ করেন।
ত্রাণের তালিকায় রয়েছেন মিরপুর বাজারের কয়েকজন কোটিপতি ব্যবসায়ী। আরাধন নামের বিলাশ ফ্যাশনের মালিক জয়পুর ওয়ার্ড আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তিনি পেয়েছেন ত্রাণ। ত্রাণ পেয়েছেন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী কাশফুলের মালিক যুবলীগ নেতা এমরান, পেয়েছেন মিষ্টি ব্যবসায়ী আ’লীগ নেতা ফরিদ, পেয়েছেন শিল্পপতি মোগল র্কাটন ফ্যাক্টরীর মালিক ময়না মিয়া। তালিকায় রয়েছে দিদার আলী নামের এক ইউপি সদস্যের নামও। দেয়া হয়েছে একই পরিবারের তিন চার জনকেও।
তালিকা খুঁজে আবার গায়েবি কিছু নামও পাওয়া যায়। তাতে অনেকের পিতা/স্বামীর নাম এবং গ্রামের নামও খোঁজে পাওয়া যায় নাই। ত্রাণ বিতরণে পাওয়া গেছে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ। চেয়ারম্যান তার পছন্দমত লোকদের ত্রাণ বিতরন করেছেন। তিনি ক্ষমতাশীন দলের লোকদেরকেই ত্রাণ বিতরণ করেছেন।
অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এর বেশি সংখ্যক আতœীয় স্বজনের নামে নিয়েছেন ত্রাণ। তালিকায় শাহিন মিয়া নামের এক পান ব্যবসায়ীর নাম থাকলেও তিনি পাননি ত্রাণ। তালিকায় পিতার নামের স্থলে লিখা হয়েছে, টং দোকান, পানের দোকান, চায়ের দোকান ও সেলুন।
মিরপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা না হয়েও ত্রাণ পেয়েছেন পার্শ্ববর্তী ভাদেশ্বর ইউনিয়নের একই পরিবারের ৩ জন। ত্রাণ পাওয়া ব্যক্তির নাম-ফয়েজ মিয়া, পিতা-কদ্দুছ আলী, তার আপন ফুফু জয় বানু, পিতা-রোশন আলী, তার বড়ভাই জাহাঙ্গীর মিয়া, পিতা-কদ্দুছ আলীর ঠিকানা দেখানো হয়েছে মিরপুর বাজার কিন্তু প্রকৃত পরিচয় তারা উভয়ই ভাদেশ্বর ইউনিয়ন এর পূর্ব জয়পুর গ্রামের বাসিন্দা। বর্তমানে তারা পূর্ব জয়পুর গ্রামেই বসবাস করে আসছে।
মিরপুর ইউনিয়নবাসীর অভিযোগ, তালিকায় ইউনিয়নের ভিতরে অনেক গ্রামের নামই নাই। চেয়ারম্যান তার পছন্দসই লোককে ত্রান বিতরণ করেছে। তালিকায় একজনের নাম দুবারও এসেছে বলে ইউনিয়নবাসীর অভিযোগ। তাদের অভিযোগ তালিকায় যাদের নাম এসেছে তাদের অনেকেই ত্রাণ পাননি। তবে তাদের বেশিরভাগই চেয়ারম্যানের নিজস্ব লোক। অরজিনাল যারা ত্রাণ পাওয়ার কথা তাদের নাম নেই তালিকায়।
২ নং ওয়ার্ডের মেম্বার শামীম বলেন, আমি পেয়েছি মাত্র ১৫ জনের নাম। বাকীগুলি কোথায় গেল আমার জানা নেই।
মিরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুদ্দিন লিয়াকতকে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বাহুবল উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আশিষ কর্মকার জানান, অনিয়মের কোন সুযোগ নেই, প্রতিটি ওয়ার্ডে কমিটি রয়েছে, অন্য ইউনিয়নের বাসিন্দা, তালিকায় গরমিল শিল্পপতিদের নাম বিষয়গুলি আমার জানা নেই, পরবর্তী তালিকায় বিষয়গুলি গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখব।
এ ব্যাপারে বাহুবল উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্নিগ্ধা তালুকদারকে কয়েকবার ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।