বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৯ অপরাহ্ন
সাহিদা সাম্য লীনা, ফেনী: একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। বাবার মতো দেশের আপদ কালীন সময়ে এগিয়ে আসেন করোনা ভাইরাসের মতো বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে এক তরুণ মোর্শেদ হামদান। মোর্শেদ উপলব্দি করেন কিছু একটা করতে। উদ্যমী মনোভাব তাকে উৎসাহী করে তোলে এলাকার গরীব অসহায়দের কল্যাণের কথা ভেবে। নিজের এতো দিনের সব উপার্জন বিলিয়ে দেন ও পরে পারিবারিকভাবেও সিদ্ধান্ত নেন।
ফেনী জেলার পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের, উত্তর কাউতলি ৯ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোর্শেদ জানান আসলে সরকারি ত্রাণ এবং অনেকের ব্যক্তি উদ্যোগে ত্রাণ সামগ্রী প্রয়োজনের তুলনায় কম ছিল এবং তার তুলনায় মানুষ উপস্থিত হয় বেশী। এটা যেহেতু পর্যায়ক্রমে দেওয়ার সিদান্ত নিয়েছে এর মাঝেই অনেক খেটে খাওয়া আর মেহনতি মানুষের জীবন নির্বাহ খুব দুর্বিষহ হয়ে পড়বে এই আশংকায় তাৎক্ষনিক আমি আমার ব্যক্তিগত উদ্যোগে বাদ যাওয়াদের জন্য আমার নিজস্ব তহবিল থেকে কিছু মানুষকে অন্তত আহারের ব্যবস্থা করি যাতে তারা ঘরে বসে ডালভাত খেয়ে সরকারের সিদান্ত মেনে ঘরে থাকতে পারে নিশ্চিন্তে ।
মোর্শেদের বাবা মুক্তিযোদ্ধা ও পরশুরাম উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি মরহুম হামদান মজুমদার। মোর্শেদ বলেন এটার পিছনে আমার মায়ের অবদান সব থেকে বেশী ছিল। মা করোনার শুরুতেই সব সময় বলতো মানুষ তোদের দিকে চেয়ে আছে। বাড়ীতে আসতেছে ওরা। কিছু একটা কর ; না হয় আল্লাহ নারাজ হবে। আর মায়ের দোয়ায় আমি শুরু করি ।
৩ বোন ও দুইভাই এর মধ্যে বড় মোর্শেদ আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় চট্রগ্রাম থেকে বিবিএ (ফিনেন্স এন্ড ব্যাংকিং)ও এম বি এ( ফিনেন্স এন্ড ব্যাংকিং) সম্পন্ন করা এই তরুণ পেশা হিসেবে আরামিট সিমেন্ট ডিস্ট্রিক্ট ইনচার্জ ফেনী কুমিল্লার দায়িত্ব পালন করছেন।
প্রথম দিকে ৬৮ পরিবারের টার্গেটে নামেন এই তরুণ । পরে ১০০পরিবারের মাঝে ভালবাসার উপহার নিয়ে পৌঁছান । এই কাজে তার বন্ধুরাও শুম দিয়ে সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছে জানালো। নিজের পরিবারের উদ্যোগেও রমজানে আরো তিনশ পরিবারের মাঝে খাদ্রসামগ্রী বিতরণ করবে মোর্শেদ ও তার পরিবার।
মোর্শেদের চাচা ঠিকাদার ফোরকান মজুমদার জানান আমরা যৌথ পরিবার । কাজের কারণে হয়তো বাড়িতে নেই সবাই।বাড়িতে মোর্শেদ থাকে। এলাকার সুবিধা অসুবিধা ওই দেখে। আমাদের পরিবারে অতীত থেকেই গরীবের জন্য কিছু করার মানসিকতা আছে। পরিবারে একদম ছোট সদস্যটিও ভাবে দশ টাকা যদি গরীব মানুষকে দেয়া যায়। শুরুতেই আমার পরিবারে সবাই ফান্ড খুলে। সবাই সবার তরফ হতে অর্থ দেয়। মানবিক দায়িত্বে আমার পরিবার এগিয়ে বলা যায়।মোর্শেদ আমার ভাতিজা, তার নিজের উদ্যোগ ছাড়াও পরিবারের উদ্যোগে সামনে ইফতার সামগ্রীও পৌঁছাবে ইনশাল্লাহ।
৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বার ফজলুল বারী মনসুর জানান মোর্শেদের মতো ছেলে সবার ঘরে থাকা দরকার। সময় অসময় সে নিম্নবিত্তদের পাশে আছে। সে তার ওয়ার্ড ছাড়াও অন্য ওয়ার্ডে দিচ্ছে। আমরা সরকারি ত্রানে অনেক মানুষের চাহিদা না মেটাতে পারলে মোর্শেদ আমাদের হতে তালিকা নিয়ে সেভাবে বিতরণ করছে। এলাকায় মোর্শেদ ও তার পরিবার উদাহরণ হয়ে থাকবে।