সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩৬ অপরাহ্ন
তরফ নিউজ ডেস্ক : ‘হাজার মাসের চেয়েও উত্তম’ সমগ্র মানবজাতির জন্য অত্যন্ত বরকত ও পূণ্যময় রজনী- পবিত্র শবে কদর বা লাইলাতুল কদর আজ।
পবিত্র ধর্মীয় গ্রন্থ আল কোরআন লাইলাতুল কদরে নাজিল হয়। তাই মুসলিম উম্মাহ’র নিকট এ রাতের গুরুত্ব ও ফজিলত অত্যধিক। প্রতিবছর মাহে রমজানের ২৬ তারিখ দিবাগত রাতে শবে কদর পালন করা হয়।
ইসলাম ধর্ম অনুসারে এ রাতে মানবজাতির ভাগ্য পুনর্নির্ধারণ করা হয়। তাই মুসলমানদের কাছে এই রাত অত্যন্ত পূণ্যময় ও মহাসম্মানিত।
এ রাতে সূর্যাস্তের পর থেকে সুবহে সাদিক পর্যন্ত ঊর্ধ্বগত থেকে পৃথিবীর বুকে এত বেশি কল্যাণ ও বরকত অবতীর্ণ হয়, যা ভূপৃষ্ঠে সংকুলান হয় না। কদরের আরেক অর্থ তাকদির ও আদেশ। এ রাতে পরবর্তী এক বছরের অবধারিত তাকদির ফেরেশতাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এতে প্রত্যেক মানুষের হায়াত, রিজিক, ইত্যাদির পরিমাণ নির্দিষ্ট ফেরেশতাকে লিখে দেওয়া হয়।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে এবার ঘরে থেকেই রাত জেগে নফল ইবাদত, কোরআন তিলাওয়াত ও জিকির-আসকারের মধ্য দিয়ে পবিত্র শবে কদর পালন করবেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।
অবশ্য ২০ রমজানের পর যেকোনো বিজোড় রাতে কদর হতে পারে। তবে ২৬ রমজানের দিবাগত রাতেই লাইলাতুল কদর আসে বলে আলেমদের অভিমত। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুসলমানদের মতো বাংলাদেশের মুসলমানরাও নিজেদের গুনাহ মাফ এবং সওয়াব হাসিলের আশায় নফল ইবাদত, কোরআন তিলাওয়াত ও জিকির-আসকারের মধ্য দিয়ে রাতটি অতিবাহিত করবেন।
মহিমান্বিত এ রাত সর্ম্পকে হাদিস শরীফে অসংখ্য ফজিলত বর্ণনা করা হয়েছে। এমনকি কোরআন শরীফে সুরা কদর নামে স্বতন্ত্র একটি পূর্ণ সুরা নাজিল হয়েছে। এই সুরাতেই শবে কদরের রাত্রিকে হাজার মাসের চেয়ে উত্তম বলে বর্ণিত হয়েছে। পূর্ববর্তী নবী এবং তাদের উম্মতগণ দীর্ঘায়ু লাভ করার কারণে বহু বছর আল্লাহর ইবাদত করার সুযোগ পেতেন। সাহাবায় কেরামগণের এ আক্ষেপের প্রেক্ষিতে চিন্তা দূর করার জন্য সুরাটি নাজিল হয়।
আল্লাহ কোরআনে ঘোষণা করেছেন, ‘নিশ্চয়ই আমি তা (কোরআন) অবতীর্ণ করেছি কদরের রাতে। আর কদরের রাত সম্বন্ধে তুমি কি জানো? কদরের রাত হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। সে রাতে ফেরেশতারা ও রুহ অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক কাজে তাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে। শান্তিই শান্তি, বিরাজ করে উষার আবির্ভাব পর্যন্ত।’ (সূরা আল- কদর, আয়াত ১-৫)
হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে, শবে কদরে হজরত জিবরাঈল (আ.) ফেরেশতাদের বিরাট একদল নিয়ে পৃথিবীতে অবতরণ করেন এবং যত নারী-পুরুষ নামাজরত অথবা জিকিরে মশগুল থাকে তাদের জন্য রহমতের দোয়া করেন। (মাযহারি)
আজকের রাতে ব্যক্তি-সমাজ-রাষ্ট্রের কল্যাণে এবং বিশেষ করে এ সময়ে পৃথিবীতে মহামারি হিসেবে আবির্ভূত হওয়া করোনাভাইরাসের কবল থেকে মুক্তিলাভের জন্য ইবাদত-বন্দেগি করে কাটাবে মানুষ। মহান আল্লাহ যেন এ প্রার্থনা কবুল করে নেন।