মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:১৯ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
পিঠা মেলাকে ঘিরে সানশাইন ক্যাম্পাসে নবীন-প্রবীন-নারী-শিশুর মিলনমেলা বাহুবলের মিরপুরে দি হোপ শিক্ষা বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত বাহুবলের পুটিজুরীতে আলোর দিশারী শিক্ষাবৃত্তি পরীক্ষা সম্পন্ন নতুন আইজিপি বাহারুল আলম সড়কে বাকবিতণ্ডার জেরে সাবেক এমপির ‘ফাঁকা গুলি’, মারধর করে পুলিশে সোপর্দ আগাম নির্বাচনে ক্ষমতায় আসবে বিএনপি, কিন্তু… : আইসিজি বাহুবলে বহু কাঙ্খিত স্মার্ট কার্ড বিতরণের সিডিউল ঘোষণা বাহুবলে মা মেয়ে হত্যার দায়ে ৩ জনের ফাঁসি বাহুবলের বিশিষ্ট সাংবাদিক মাওলানা নূরুল আমিন-এর মাতৃ বিয়োগ বাহুবলে মরহুম মকসুদ আহমেদ লেবু’র স্মরণে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত

ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে আড়াইশ’ কোটি টাকার প্রকল্প

তরফ নিউজ ডেস্ক : ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে নতুন করে প্রায় আড়াইশ’ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিতে যাচ্ছে সরকার। সংশ্লিষ্টদের দাবি, প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে দেশে সারা বছরই ইলিশ পাওয়া যাবে।

নানা ধরনের উদ্যোগ বাস্তবায়নের ফলে দেশে ইলিশের উৎপাদন আগের চেয়ে বেড়েছে। তারপরও সিংহভাগ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে রয়ে গেছে ইলিশ। এ অবস্থায় উৎপাদন আরও বাড়িয়ে সব মানুষের পাতে ইলিশ তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে চায় সরকার। সে কারণেই প্রকল্প।

২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে ইলিশ উৎপাদন হয় ৫ লাখ ১৭ হাজার মেট্রিক টন। আরও ব্যাপকভাবে আইন প্রয়োগ করে মা ইলিশ ও জাটকা সংরক্ষণের মাধ্যমে সরকার উৎপাদন ৬ লাখ মেট্রিক টন করতে চায়।

প্রকল্পের আওতায় মা ইলিশ ও জাটকা সংরক্ষণে মৎস্য সংরক্ষণ আইন কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। ৩০ হাজার জেলে পরিবারের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে। জেলেদের ১০ হাজার বৈধ জাল বিতরণ ও প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা হবে।

‘ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা ‘প্রকল্পের আওতায় এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের প্রস্তাবিত ব্যয় ২৪৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা। চলতি সময় থেকে ২০২৪ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।

প্রকল্পের আওতায় ইলিশের ছয়টি অভয়াশ্রমে সুরক্ষা দেওয়া হবে। নিম্ন মেঘনা নদী, তেঁতুলিয়া নদী, আন্ধারমানিক নদী, নিম্ন পদ্মা নদীতে নির্দিষ্ট সময়ে মা ইলিশ আহরণ বন্ধ করা হবে। ইলিশ মাছ বাংলাদেশের প্রায় সব প্রধান নদ-নদী, মোহনা এবং উপকূলে ডিম ছেড়ে থাকে। তবে বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে ইলিশের চারটি প্রজননক্ষেত্র চিহ্নিত করা হয়েছে। সেগুলোতে পাহারা দেওয়া হবে।

মৎস্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (মৎস্য পরিদর্শন ও মাননিয়ন্ত্রণ) ও প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. রমজান আলী বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশ এখন ইলিশ সমৃদ্ধ। ১৯৯৮ সালে ইলিশের উৎপাদন ছিল বছরে ২ দশমিক ৯ লাখ মেট্রিক টন। এখন উৎপাদন বেড়ে হয়ে ৫ দশমিক ৩৪ লাখ মেট্রিক টন। একটা সময়ে মা ইলিশ ধরা ও ইলিশের অভয়াশ্রম সংরক্ষণের ফলে বছরে ৬ লাখ মেট্রিক টন ইলিশ আহরণ অনায়াসে সম্ভব। এজন্য আমরা একটা প্রকল্প হাতে নিতে যাচ্ছি। এখন হাকালুকি হাওরে ইলিশ মিলছে। এছাড়া অনেক নদীতেও ইলিশ মিলছে। সারা বছর ইলিশের ব্যবস্থা করবো।

মৎস্য অধিদপ্তর সূত্র জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় ইলিশের ৬টি অভয়াশ্রম পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা করা হবে। ইলিশ অভয়াশ্রম সংলগ্ন ১৫৪টি ইউনিয়নের জেলেদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১ হাজার ২৩২টি সভার আয়োজন করা হবে। এছাড়া ৬০টি নানা ধরণের কর্মশালার আয়োজন করা হবে। অভিযান পরিচালনার জন্য ১৯টি বোট কেনাসহ মা ইলিশ সংরক্ষণে ১৩ হাজার ৪০০টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। জেলে পরিবারে বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য ১৮ হাজার জেলেকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

২০০২ থেকে ২০০৩ সালে ইলিশের অবদান দাঁড়ায় জাতীয় উৎপাদনের মাত্র ৮ শতাংশ। ইলিশ উৎপাদনের গতিধারায় লক্ষ্য করা যায় ২০০০-২০০১ সালে ইলিশের উৎপাদন ২ দশমিক ২৯ শতাংশ মেট্রিক টন থাকলেও ২০০২-০৩ সালে কমে ১ দশমিক ৯৯ মেট্রিক টন হয়। প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট উভয় কারণেই ইলিশের উৎপাদন হ্রাস পেয়েছিল।

দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, রফতানি আয় ও আমিষের সরবরাহে ইলিশের গুরুত্ব অনেক। দেশের মোট মাছ উৎপাদনের ইলিশের অবদান সর্বোচ্চ ১৯ ভাগ। ইলিশ জিডিপির ১ ভাগ অবদান রাখে। উপকূলীয় মৎস্যজীবীদের আয়ের প্রধান উৎস ইলিশ আহরণ। প্রায় ৫ লাখ লোক ইলিশ আহরণে সরাসরি নিয়োজিত এবং ২০ থেকে ২৫ লাখ লোক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষাভাবে জড়িত। সারা বিশ্বের মোট উৎপাদিত ইলিশের ৬০ শতাংশ আহরিত হয় বাংলাদেশে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com