শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৮ অপরাহ্ন
ক্রীড়া ডেস্ক: বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে নিজেদের মাঠ লা বোম্বনেরা স্টেডিয়ামে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করে হোঁচট খেয়েছে আর্জেন্টিনা। গোড়ালির ইনজুরির কারণে অনিশ্চিত থাকলেও শেষ পর্যন্ত লিওনেল মেসি পুরো ম্যাচ খেললেও করা একটি গোল রেফারি বাতিল করে দেয়।
শুক্রবার বাংলাদেশ সময় সকালে অনুষ্ঠিত ম্যাচে আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্কালোনি ৩-৪-২-১ ছকে দল সাজান। আয়াক্সের লেফটব্যাক নিকোলাস তাগলিয়াফিকো ইনজুরির কারণে খেলতে না পারায় তার বদলে একাদশে ছিলেন নিকোলাস গঞ্জালেস।
১৫ মিনিট পর দারুণ ফ্রি-কিকে গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিলেন মেসি। তার নেয়া কিক ঝাঁপিয়ে পড়ে কোনোমতে দলকে বাঁচান গোলরক্ষক আন্তোনি সিলভা। বল তার হাতে লেগে ক্রসবার ছুঁয়ে বাইরে চলে যায়।
নিউক্যাসল ইউনাইটেডের মিডফিল্ডার মিগুয়েল আলমিরন বাঁ দিক থেকে ড্রিবল করে ডি-বক্সে ঢোকার পর তাকে ডিফেন্ডার লুকাস মার্টিনেজ ফাউল করলে রেফারি পেনাল্টির বাজান। ২১ মিনিটের মাথায় স্পট কিক থেকে প্যারাগুয়েকে এগিয়ে দেন অ্যাঞ্জেল রোমেরো। আর্জেন্টাইন ক্লাব সান লরেঞ্জোর ফরোয়ার্ড এই নিয়ে বাছাইপর্বের তিন ম্যাচে করলেন তিন গোল। যদিও গোল নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। রোমেরো যখন স্পট কিক নিচ্ছিলেন, তখন প্যারাগুয়ের সেন্টার ব্যাক ফ্যাবিয়ান বালবুয়েনা ডি-বক্সের ভেতর ঢুকে পড়েছিলেন। নিয়ম অনুযায়ী এরকমটা ঘটে থাকলে স্পট কিকের বৈধতা থাকে না। বিষয়টি রেফারির দৃষ্টি এড়িয়ে যাওয়ায় সফরকারীরা লিড পেয়ে যায়।
গোল হজমের পর তা শোধ করতে মরিয়া হয়ে ওঠে আর্জেন্টিনা। শুরুর ছন্দহীনতা কাটিয়ে তারা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় মনযোগী হয়। ২৯ মিনিটে এক্সিকুয়েল পালাসিওস রোমেরোর সঙ্গে সংঘর্ষের পর পিঠের চোট নিয়ে মাঠ ছাড়েন। এমন এক ট্যাকলে ভিএআরের সাহায্য নিয়ে রেফারি কেন রোমেরোকে লাল কার্ড দেখাননি, তা নিয়ে আলোচনার অবকাশ থেকেই যায়। পালাসিওসের জায়গায় মাঠে নেমে খেলার নিয়ন্ত্রণ ধীরে ধীরে নিজেদের করে নেন লো চেলসো। পরে ৪১ মিনিটের সময় কর্ণারেই দারুণ দক্ষতায় হেড করে গোল করে স্বাগতিকদের সমতায় ফেরান নিকোলাস গঞ্জালেজ।
৫৭ মিনিটে লো সেলসোর ব্যাকপাস পেনাল্টি স্পটের কাছে পেয়ে নিচু শটে বল জালে পাঠান মেসি। মাঠের বাইরে মনিটর দেখে পরে গোল বাতিলের সিদ্ধান্ত জানান রেফারি। কারণ গোল হওয়ার পথে মাঠের বাঁ প্রান্তে নিজেদের অর্ধে রোমেরোকে ফাউল করেছিলেন নিকোলাস গঞ্জালেজ। সেই ফাউলের পর ২৭ সেকেন্ড পার হয়ে যাওয়ার পর, আট-নয়টা সফল পাস দিয়ে আক্রমণ তৈরি করার পর লো সেলসোর পাসে মেসি বল জালে জড়িয়েছিলেন।
৭২ মিনিটে প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে করা মেসির ফ্রি-কিক এক হাতের দারুণ সেভে গোলের ওপর দিয়ে পার করিয়ে দিয়েছিলেন প্যারাগুয়ে গোলরক্ষক সিলভা। ৮৩ মিনিটের পর রদ্রিগো ডি পল আর মার্টিনেজকে তুলে নিয়ে আরও একজন মিডফিল্ডার ও ফরোয়ার্ড মাঠে নামান স্কালোনি। ফরোয়ার্ড লুকাস আলারিও ও নিকোলাস ডমিঙ্গেজও অবশ্য বাকি সময়ে কার্যকরি কিছু করতে পারেননি। শেষের দিকেও কয়েকটি গোলের সুযোগ তৈরি করলেও হাসি মুখে মাঠ ছাড়তে পারেনি আর্জেন্টিনা। তবে প্রতিপক্ষের মাঠে ড্র করতে পেরে প্যারাগুয়ে শিবিরে উৎসবের আমেজ ছিল।
ঘরের মাঠে পয়েন্ট হারানোর পর খানিকটা চাপেই পড়ে গেল আর্জেন্টিনা। ১৮ নভেম্বর বছরের শেষ ম্যাচে তারা পেরুর বিপক্ষে খেলবে।
ঘরের মাঠে হোঁচট খেলেও তিন ম্যাচে ২ জয় ও এক ড্রয়ে ৭ পয়েন্ট নিয়ে আপাতত টেবিলের শীর্ষে উঠেছে আর্জেন্টিনা। ২ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে ব্রাজিল। ৩ ম্যাচে সমান ৬ পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে ইকুয়েডর। ৫ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে প্যারাগুয়ে।