মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫১ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
সড়কে বাকবিতণ্ডার জেরে সাবেক এমপির ‘ফাঁকা গুলি’, মারধর করে পুলিশে সোপর্দ আগাম নির্বাচনে ক্ষমতায় আসবে বিএনপি, কিন্তু… : আইসিজি বাহুবলে বহু কাঙ্খিত স্মার্ট কার্ড বিতরণের সিডিউল ঘোষণা বাহুবলে মা মেয়ে হত্যার দায়ে ৩ জনের ফাঁসি বাহুবলের বিশিষ্ট সাংবাদিক মাওলানা নূরুল আমিন-এর মাতৃ বিয়োগ বাহুবলে মরহুম মকসুদ আহমেদ লেবু’র স্মরণে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত কবরস্থান নিয়ে বিরোধ; হামলার ঘটনায় এক ব্যক্তি নিহত মিরপুর দি হোপ স্কুলে শিক্ষার মানোন্নয়ন শীর্ষক সেমিনার গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়নে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সমর্থন চেয়েছেন ড. ইউনূস ধান ক্ষেত থেকে অটোরিকশা চালকের মরদেহ উদ্ধার

ঢাকা-১৮ উপ-নির্বাচনে বিএনপির ভরাডুবির নেপথ্যে

তরফ নিউজ ডেস্ক : রাজনৈতিক প্রতিকূল পরিবেশ পরিস্থিতির বাইরে দায়িত্বপ্রাপ্তদের পরিকল্পনা ও সমন্বয়ের অভাবে সদ্য অনুষ্ঠিত ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচনে বিএনপির শোচনীয় পরাজয় হয়েছে।

চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমানের নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় নেতাদের বিশাল কমিটি কার্যকরী কোনো ভূমিকা পালন করতে পারেনি বলে অভিযোগ উঠেছে।

ভোটের দিন দলের পরিকল্পনা কি হবে কারা কোথায়, কিভাবে দায়িত্ব পালন করবেন এসবের কোনো নির্দেশনা বা সমন্বয় ছিল না।

স্থানীয় বিএনপি নেতারা জানান, ভোটের দিন স্থানীয় পর্যায়ের নেতাকর্মীরা কিভাবে দায়িত্ব পালন করবে সে বিষয়ে তাদের কাছে কোনো নির্দেশনা ছিল না। আমান উল্লাহ আমানের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় পর্যায়ের একটি নির্বাচন পরিচালনা কমিটি থাকলেও ওই কমিটির কেউই তাদের সঙ্গে সঠিকভাবে যোগাযোগ করেননি।

স্থানীয় এক নেতা অভিযোগ করে বলেন, ২৩ অক্টোবর প্রতীক পাওয়ার পর গত ২৪ অক্টোবর থেকে গণসংযোগ শুরু হয়। সেখানে কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটি শুধুমাত্র দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেখানোর জন্য সেক্টরের মধ্যে বড় বড় মিছিল করেছে। অনেক কেন্দ্রীয় নেতাকে আসতে বাধ্য করা হয়েছে। অথচ, স্থানীয় নেতাকর্মীদের গণসংযোগে আনতে তেমন কোনো উদ্যোগই ছিল না।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকা-১৮ উপ-নির্বাচনের অনিয়মের ওপর ভিত্তি করে সরকার পতনের আন্দোলন শুরু করার পরিকল্পনা করেছিল বিএনপি। এর অংশ হিসেবে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ৯০ দশকের ছাত্রনেতাদের সামনে রেখে এই আসনের নির্বাচনের পরিচালনা কমিটি করে বিএনপির হাইকমান্ড। কেন্দ্রীয় ৩৭ নেতাকে প্রত্যক্ষভাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। আমান উল্লাহ আমানের নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় নেতাদের বিশাল বহর নির্বাচনে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারেনি। তারা বলতে গেলে কোনো ঝুঁকি নেয়নি।

কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়, প্রাথমিক পর্যায়ে স্থানীয় পর্যাযের নেতাদের মধ্যে মনোমালিন্যের বিষয়টি মাথায় রেখে কেন্দ্রীয় নেতাদের দিয়ে নির্বাচনী প্রচারণার কার্যক্রম শুরু হয় গত ২৩ অক্টোবর। রাজধানীসহ এর আশের পাশের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা যে যেখান থেকে পেরেছে নেতাকর্মীদের উত্তরার নির্বাচনী প্রচারণায় নিয়ে গেছে। বিশাল শোডাউন করে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করা হয়। এরপর থেকে ঘটতে থাকে নানা অপ্রীতিকর ঘটনা। একপর্যায়ে স্থানীয় যেসব নেতা প্রার্থীর সুরক্ষার দায়িত্বে ছিলেন তাদের ওপর ও বাসভবনে একের পর এক হামালার ঘটনা ঘটে।

সূত্র জানায়, আমান উল্লাহ আমানসহ সিনিয়র অনেক নেতাই নির্বাচনী কার্যালয়ে থেকেই দায়িত্ব পালন করেন। অনেকে যাননি। অনেকে কোনো ওয়ার্ডে সবচেয়ে নিরাপদ তার খোঁজ নিয়ে প্রচারণায় নামার চেষ্টা করেছেন। এর বাইরে করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় পরিচালনা কমিটির অনেকে কোনো কাজ করতে পারেননি।

নির্বাচনী পরিচালনা কমিটিতে থাকা নেতাদের কার্যক্রম প্রসঙ্গে একাধিক স্থানীয় নেতা জানান, প্রচারণার শুরুর দিন গত ২৩ অক্টোবর কমিটিতে থাকা সব নেতাই ছিলেন। এর পরদিন নির্ধারিত কর্মসূচি পালন করা সম্ভব হলেও পরিচালনা কমিটির সবাই ছিলেন না। আর তৃতীয় দিন থেকে প্রধান সমন্বয়কারী ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান প্রতিদিনই কার্যালয়ে গেছেন। কিন্তু বাইরের কোনো প্রচারণায় অংশ নেননি। তবে শেষের দুইদিন তাকে মিছিলে দেখা গেছে।

সমন্বয়কারী আবদুস সালাম ২/১টি ঝটিকা মিছিলে ছিলেন। সদস্য সচিব ফজলুল হক মিলন, সদস্য  আব্দুস সালাম আজাদ, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সুলতানা আহমেদ করোনায় আক্রান্ত ছিলেন। সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ কয়েকদিন প্রচারণায় অংশ নেওয়ার পর করোনায় আক্রান্ত হয়ে বাসায় অবস্থান করেন।

এছাড়া কেন্দ্রীয় যেসব নেতা ঢাকা-১৮ আসনের নির্বাচন পরিচালনা কমিটিতে ছিলেন তারা অনেকেই ২/১টি মিছিল সমাবেশে যোগ দিয়েছেন। ঘরে ঘরে গিয়ে ভোট চাওয়া, স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় করা, কিংবা ভোটের দিনে কেন্দ্রে এজেন্ট থাকা নিশ্চিত করার মতো কোনো কাজেই তারা অংশ নেননি।

বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত স্থানীয় নেতা নাজিম উদ্দিন দেওয়ান বলেন, ভরাডুবির অনেক কারণ রয়েছে। স্থানীয় বিএনপির সঙ্গে প্রার্থী তার দূরত্ব কমাতে পারেনি। ১২ সেপ্টেম্বর মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাথে প্রার্থীর কর্মীদের মারামারি। ১৭ জনকে রক্তাক্ত করা। মহাসচিবের বাসায় ইট-পাটকেল নিক্ষেপ। নির্বাচনের আগে স্থানীয় ১৭ জন নেতাকে বহিষ্কার করার মতো হটকারী সিদ্ধান্ত। স্থানীয় বিএনপির সঙ্গে প্রার্থীর কো-অপারেশন ছিল না। সম্পূর্ণ বাহিরের নেতাকর্মীদের ওপর নির্ভর করে শোডাউন করা হয়েছে। মূলত সঠিকভাবে অর্গানাইজ করে নির্বাচন করা হয়নি। মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সুসংগঠিত করে ভোটারদের কাছে যেতে পারেনি। ভোট কেন্দ্রে দায়িত্বশীলদের উপস্থিতিও ছিল না।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com