শায়েস্তাগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি : ৩ বছর আগে ৫০ শয্যায় উন্নিতকরণের প্রস্তাব হয়েছিলো শায়েস্তাঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে এখনো এ প্রস্তাবের বাস্তবায়ন কল্পনা মাত্র। আশা আর হতাশায় ৩ বছর কেটে গেলেও এখনো একজন চিকিৎসক দিয়েই কোনরকম ভাবে ভাবে চলছে হাসপাতালের কাজ। ফলে উপজেলাবাসীর অনেকেই কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বরং ৩ বছর পরও এখনো দেখানো হচ্ছে জনবল নিয়োগ আর ভূমি অধিগ্রহণের স্বপ্ন। কিন্তু এ স্বপ্ন কবে বাস্তবায়ন হবে সেটিই জানতে চান উপজেলার মানুষ।

উপজেলার দেড় লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসার একমাত্র ভরসা এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। কেউ অসুস্থ হলে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত প্রাথমিক সেবা পেয়ে থাকেন উপজেলা উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে। কিন্তু বিপত্তি ঘটে সামান্য গুরুতর হলেই। তখন হামাগুড়ি খেয়ে যেতে হয় জেলা সদর হাসপাতালে। এতে দুর্ভোগে পড়তে

জানা যায়, বিগত ২০১৭ সালের ১২ ডিসেম্বর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাবিত ৫০ শয্যা শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্য চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফ মিলে মোট ৪৭টি পদের প্রস্তাব করা হয়। কিন্তু এত কম সংখ্যক লোকবল দিয়ে ৫০ শয্যার একটি হাসপাতাল পরিচালনা সম্ভব নয়। তাই ইতোমধ্যে হবিগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিস থেকে ১১১টি পদ সৃষ্টি করার জন্য লিখিতভাবে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আর জমি অধিগ্রহণ না হওয়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভবন নির্মাণ সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে লোকবল নিয়োগ দেওয়ার কার্যক্রমও থেমে আছে। এ অবস্থায় শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার এক একর জমির উপর অবস্থিত শায়েস্তাগঞ্জ উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের একটি রুম মেরামত করে সেখানে চলছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কার্যক্রম। দেড় লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসা তিন বছর ধরে চলছে মাত্র একজন মেডিকেল অফিসার দিয়ে। তাকে সহায়তা করছেন একজন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, একজন অফিস সহকারী ও একজন উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার।

সেবা নিতে আসা ফৈরদৌসি আক্তার হেনা বলেন, পুরোদমে হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু করা হলে আমাদের কষ্ট করে হবিগঞ্জ যেতে হবে না। তাঁর মতো অন্য রোগীদেরও একটাই দাবি দ্রুত হাসপাতাল চালু করার।

তিন বছর ধরে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পাশাপাশি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কার্যক্রমও চলে আসছে এখানে। জমি অধিগ্রহণের পর ভবন নির্মাণ হলে হাসপাতালের পুরোপুরি কার্যক্রম চালু হবে। বলে জানালেন সংশ্লিষ্টরা।

শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সাদ্দাম হোসেন জানান, আমরা যতটুকু পারি রোগীদেরকে সেবা দিয়ে যাচ্ছি। খুব বেশি গুরুতর রোগী হলে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালেই পাঠানো হয়। আমি যতদূর জানি শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্য নতুন ১১১ টি পদে নিয়োগ দেয়ার কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং ঢাকা সিলেট মহাসড়কের পাশে জমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ হলেই ৫০ শয্যা হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে।

এ বিষয়ে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ তালুকদার ইকবাল জানান, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর জমি এখনো অধিগ্রহণ হয়নি। এই প্রক্রিয়াটি চলমান রয়েছে, আমি আশা করছি খুব শীঘ্রই প্রক্রিয়া শেষ করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স তার নিজস্ব জমিতে সুন্দরভাবে গড়ে উঠবে।