চুনারুঘাট (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি : চুনারুঘাট উপজেলার সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে প্যারালাল অভিযানে মোটরসাইকেলে ব্রেক ও ক্লাসের তার দিয়ে তৈরী ৬২টি ফাঁদ উদ্ধার করেছে বন বিভাগ।মঙ্গলবার বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধূরীর নেতৃত্বে ৪০ জনের দুটি দল সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সাতছড়ি ও তেলমা বনবিটের সংরক্ষিত বনে এ অভিযান চালায়।
সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক ও বন্যপ্রাণী গবেষক মুনতাসির মাহমুদ সাতছড়ি বনে একটি গবেষনার কাজ করতে এসে বনের ভেতর ১০টি বিশেষ ধরনের শিকারিদের ফাঁদ এবং একটি ফাঁেদ বন্য শুকুর আটকে মারা গেছে এমন দৃশ্য দেখতে পান। তিনি এসব ছবি তুলে নিয়ে বিষয়টি জানান স্থানীয় সাংবাদিকদের। এনিয়ে মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশ হলে বিষয়টি নজরে আসে বনবিভাগের। তাৎক্ষনিক বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষন বিভাগের সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী মঙ্গলবার দিনব্যাপী সাতছড়ি বনে প্যারালাল সার্চ অভিযান চালান।
অভিযানে বন বিভাগ, সহ- ব্যবস্থাপনা কমিটি, সিপিজি সদস্য ও বনকর্মীদের ৪০ জনের দুটি দল আলাদা আলাদা বনে এ অভিযান চালায়। ৩০ থেকে ৩৫ ফুট দুরত্ব বজায় রেখে বনকর্মীরা সারা বন তন্ন তন্ন করে খুজে ৬২টি তারের তৈরী বিশেষ ধরণের ফাঁদ উদ্ধার করে।
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী জানান, মোটর সাইকেলে ব্রেক ও ক্লাসের তার দিয়ে তৈরী বিশেষ ধরণের এ ফাঁদ আমাদের দেশের মূল্যবান বন্যপ্রাণীদের অবৈধভাবে ধরার ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি খুবই উদ্বেগজনক ও ভয়াবহ পন্থা । এ ফাঁদ দিয়ে বন্যপ্রাণী শিকারের বিষয়টি আমার নজরে আসার সাথে সাথেই আমি প্রথমেই আজ মঙ্গলবার সাতছড়ি ও তেলমছড়া বনে ৪০ জনের দুটি টিম নিয়ে অভিযান পরিচালনা করি।
তিনি বলেন, এতে বনবিভাগের সদস্য ছাড়াও স্থানীয় ভিলেজার্স (বনের অধিবাসী) সিএমসি এবং সিপিজি সদস্যরা প্যারালাল লাইন সার্চ কার্যক্রমে অংশ নেন। বন বনের মধ্যে সমান দূরত্ব রেখে পুরো বনকে অনুসন্ধান করা হয়েছে। অভিযানে দুটি বিটে ৬২টি ফাদঁ উ্দ্ধার করা হয়েছে। এটা অত্যেন্ত উদ্বেগজনক।
তিনি আরো বলেন, এ ৬২টি ফাঁদ উদ্ধারের ফলে অনেকগুরো বন্যপপ্রাণী হয়তো মৃত্যুর হাত থেকে বেচেঁ গেল। তিনি এজন্য বনবিভাগের সকল কর্মীদের আরো সজাগ ও বন্যপ্রাণী শিকার প্রতিরোধে বনের চারদিকের মানুষদের সচেতনতা তৈরীর আহবান জানান।
এদিকে সংরক্ষিত বনে এ ধরনের অভিযানকে স্বাগত জানিয়েছে প্রকৃতিপ্রেমী ও বন্যপ্রাণী গবেষকরা। এ অভিযানে ছিলেন রেঞ্জ কর্মকর্তা মোতালেব হোসেন, সিএমসি সহ সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, বিট কর্মকর্তা মাহমুদ হোসেন ও নাসির উদ্দিন।