সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:১৫ পূর্বাহ্ন
তরফ নিউজ ডেস্ক: বান্দরবানের আলীকদম উপজেলায় বন্য হাতির আক্রমণে আবারো দুই ব্যক্তি নিহত এক জন আহত হয়েছে। রোববার রাত ১টায় বন্য হাতির আক্রমণে উপজেলার চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের কোনা পাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ও পুলিশের সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাত ৯.৩০ মিনিটে ম্যাইংতং পাহাড় থেকে ১১ বন্য হাতি নেমে আসেন, গভীররাতে রোববার রাত ১টার দিকে আলীকদম উপজেলা থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে কানা মেম্বার ঘাট কোনা পাড়া নামে এলাকায় বন্য হাতির আক্রমণে নিহত হন ওমর আলী পাড়া আব্দু ছোবাহানের ছেলে মনছুর আলম(১৮) ও মান্নান মেম্বার পাড়া মৃত মোঃ হোসেনের ছেলে হুমায়ন কবির (১৭)।
একই হাতির আক্রমণে আহত হয় হাফেজ নুরুল ইসলামের ছেলে মোঃ জুবায়ের (১৮)। রাত ৩টায় পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নিহতের লাশ উদ্ধার করে। আহত মোঃ জুবায়েরকে (১৮) প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
আলীকদম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী রাকিব উদ্দীন জানান, গভীর রাতে বাড়ির পাশ দিয়ে যাওয়া হাতির পাল বাড়িতে হামলা করতে পারে ভেবে পিছু নেয় মনছুর আলম। পরে রাস্তা বন্য হাতিকে দেখে ভয়ে চিৎকার দেন।
এতে বন্য হাতিটি ক্ষিপ্ত হয়ে সঙ্গে সঙ্গে আব্দু ছোবাহানের ছেলে মনছুর আলমকে (১৮) পায়ের তলায় পিষ্ট করে গুরুতর আহত করে। পরে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে লামা উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন। একই সাথে মৃত মোঃ হোসেনের ছেলে হুমায়ুন কবির(১৭) কে ছুঁড়ে মারে পরে তাহাকে উদ্ধার করে চকরিয়া নেওয়া পথে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
হাতির আক্রমণের খবর পেয়ে আশপাশের লোকজন দ্রুত ছুটে এসে হাতির দলটিকে তাড়িয়ে দিয়ে ৩ জনকে উদ্ধার করে। ঘটনার পর ঘটনাস্থলে ছুটে যান আলীকদম উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম ও ২নং চৈক্ষ্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফৈরদৌস রহমান।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, হাতির আবাসস্থলে জনবসতি গড়ে ওঠায় এবং বন উজারের ফলে খাদ্য সঙ্কটের কারণে হাতির দল প্রতিনিয়ত বিভিন্ন জনবসতিতে হামলা চালাচ্ছে। তারা আরও বলেন, মান্নান মেম্বার পাড়া থেকে আসার কারণে হাতি গুলো ফিরতে গেলে লোকজন আগুন নিয়ে বাঁধা দেয়। হাতির আক্রমণে প্রতি বছর বান্দরবান জেলায় হতাহতের ঘটনা ঘটছে। তবে আলীকদম উপজেলায় এইবারই প্রথম।
উল্লেখ্য, গত ৪ জানুয়ারী রাত ৮টায় চৈক্ষ্যং ৪নং ও ২নং ওয়ার্ডে হাতির দলটি আক্রমণ করে। এ সময় হাতির দল স্থানীয়দের বেশকিছু বাড়িঘর গুড়িয়ে দেয়।
বন্য হাতি আক্রমণে উপজেলা প্রশাসনকে রাত ১০টায় জানানো হলে প্রথমে কোন সহযোগীতা করেনি। লোক মৃত্যুর বিষয়টি জানতে পেরে তৈন রেঞ্জ কর্মকতা মিনার হোসেন ঘটনাস্থলে আসে। তিনি বলেন আমাদের সাধ্যমত চেষ্টা করে করে হাতি তাড়াতে সক্ষম হয়েছি। মান্নান মেম্বার পাড়ার লোকদের বুঝিয়ে যেদিক থেকে এসেছে সেদিকে নিজের ইচ্ছাতে চলে গেছে।