মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৬ পূর্বাহ্ন
তরফ নিউজ ডেস্ক: বিভিন্ন বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় আসা ছোটভাই ও বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জাসহ স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে একান্তে কথা বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। দলের স্থানীয় পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে যে কাদা ছোড়াছুড়ি চলছে তা থামাতে বলেছেন তিনি। ছোটভাইসহ দলীয় নেতাকর্মীদের এমন কিছু করতে বারণ করেছেন যার কারণে দলের বদনাম হয়।
শনিবার বিকালে রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আসেন মির্জা আবদুল কাদের ও নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা। তারা ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টা বৈঠক করেন।
বৈঠক শেষে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খিজির হায়াত বলেন, ‘নেতার সঙ্গে আমাদের দেখা হয়েছে। আমরা বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছি। জেলার রাজনীতি নিয়ে আমরা এতদিন ধরে যেসব অভিযোগ করেছি, সেই বিষয়ে তিনি (ওবায়দুল কাদের) আমাদের বলেছেন, নেত্রী সব কিছু জানেন। তিনি যা ভালো মনে করেন, তাই করবেন।’
খিজির হায়াত বলেন, ‘মন্ত্রী বলেছেন আমাদের বসুরহাট ও কবিরহাট এলাকায় গ্যাস যাবে। এই বিষয়ে তিনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগও করেছেন বলে জানিয়েছেন।’
বৈঠক বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নূরনবী চৌধুরী বলেন, ‘উনি আমাদেরকে ধৈর্য ধরতে বলেছেন। বলেছেন রাজনীতি করতে হলে ধৈর্য ধরতে হবে। বৈঠকে উপস্থিত নেতাদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, বিগত কয়েকদিন যে সকল অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয়ে কথা হয়েছে, সেকল বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকল বিষয় জানেন এবং বোঝেন। উনার ঊর্ধ্বে কেউ নন, তিনি যেকোনো সময়, যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। আপনারা যারা তৃণমূলে রাজনীতি করেন, তারা নেত্রীর প্রতি শতভাগ আস্থা ও ভালোবাসা রেখে কাজ করেন। কোনো গুজবে বিভ্রান্ত হবেন না।’
নূরনবী চৌধুরী জানান, মন্ত্রী বলেন, ‘কোনো জনপ্রতিনিধি বা অন্য কেউ যদি কিছু বলে সেটার বিষয়ে আমি কাউকে প্রতিবাদ করতে দিইনি। আপনারা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছিলেন, সেই বিষয়ে আমি নিষেধ করেছি। নোয়াখালী শহরে প্রতিবাদ সভা আহ্বান করা হয়েছিল, সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছিল। আজকের পর থেকে আপনারা কোনো অবাস্তব কথা বলবেন না। গঠনমূলক কথা বলবেন। কারো বিরুদ্ধে, কারো সমালোচনা করবেন না। যদি কেউ করেন, সেই সকল বিষয়ে নেত্রী ওয়াকিবহাল, তিনিই ব্যবস্থা নেবেন।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কেউ যদি আমার বিরুদ্ধে কিছু বলেন, এই বিষয়ে সবাই জানেন। আমি রাজনীতির এই পর্যায়ে কীভাবে উঠে এসেছি। তা দেশের মানুষ জানেন। আমি হঠাৎ করে রাজনীতিতে উঠে আসিনি। মুক্তিযুদ্ধে বসুরহাটের মুজিব বাহিনীর কমান্ডার ছিলাম। সুতারাং এই বিষয়ে কাদা ছোড়াছুড়ির কিছুই নেই। আজকে বঙ্গবন্ধু কন্যা আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন, এই জন্য তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আপনারা এমন কিছু বলবেন না, যাতে নোয়াখালীর বদনাম হয়। নেত্রী সবার ঊর্ধ্বে, তিনি যে সিদ্ধান্ত দেবেন সেটাই চূড়ান্ত।’
বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা বলেন, ‘নির্বাচনের পরে উনার (ওবায়দুল কাদের) সাথে দেখা করার দরকার, তাই আজকে উনার সাথে দেখা করতে এসেছি। সেখানে সৌজন্য সাক্ষাৎ ছাড়াও সমকালীন রাজনীতি নিয়ে কথা হয়েছে। উনি (ওবায়দুল কাদের) আমাদের বলেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর টেবিলে সব অভিযোগ রয়েছে, বিশেষ করে নোয়াখালীর বিভিন্ন উপজেলা থেকে কিছু অভিযোগ প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে, সেই অভিযোগগুলোর ভিত্তিতে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।’
মির্জা কাদের বলেন, ‘আমাদের এখন একদফা, তা হলো একরাম চৌধুরীকে জেলা আওয়ামী লীগ থেকে বাদ দিতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের কর্মসূচি এক মাস স্থগিত রেখেছি। সিদ্ধান্তের জন্য জন্য এক মাস অপেক্ষা করবো। তবে আমরা কোনো অবস্থায় আমাদের সিদ্ধান্ত থেকে সরবো না। নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগ থেকে তাকে সরতেই হবে। এটার কোনো বিকল্প নাই।’